• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


১৬ বছরে অদম্য মা, স্বপ্ন ছেলেকে অফিসার বানাবেন


নয়ন দাস, শরীয়তপুর
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৪, ০২:৩০ পিএম
মারিয়া আক্তার রূপালী| ছবি : প্রতিনিধি

পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ 💎‘মা’। যখন সবাই ছেড়ে যায় তখনো মা সন্তানকে আঁকড়ে রাখেন। সন্তানের ওপর যখন কোনো কারণে বাবার ছায়া না থাকে, তখন মাকেই সন্তান পালনের গুরুদায়িত্ব নিতে হয়। এমনি একজন মা ১৬ বছর ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সন্তানের পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারে🅰র হাল ধরে রেখেছেন।

সম্প্রতি 🌌শরীয়তপুরের꧂ গোসাইরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ধীপুর গ্রামে গিয়ে সংবাদ প্রকাশের এই প্রতিবেদকের কথা হয় সংগ্রামী মা মারিয়া আক্তার রূপালীর সঙ্গে।

জানা যায়, ২০০৮ সালে গর্ভবতী ছিলেন রূপালী। ওই অবস্থায় স্বামী শামীম মাহবুব তাকে ছেড়ে চলে যা🦩য়। তখন বাবার বাড়িতে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। সন্তান জন🌞্ম নেওয়ার পরে বাবার পরিবারে টানাটানির সংসারে চিন্তার ভাঁজ পড়ে তার কপালে।

সন্তানকে মানুষের মতো♛ মানুষ করতে হবে এই চিন্তা থেকে মানুষের বাসায় কাজ করে কিছু উপার্জন করে ছেলেকে নিয়ে চলত তার সংসার। পরবর্তীতে সরকারিভাবে সেলাই মেশিনের প্রশিক্ষণ পান তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে একটি সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। সে মেশিন দিয়ে সেলাইয়ের কাজের পাশাপাশি হাঁস-মুরগি লালন পালন করে কষ্টের মধ্যে সংসারের হাল ধরেছিল রূপালী।

কয়েক বছর পর তার বাবা মারা গেলে পুরো সংসারের দায়িত্ব এসে পরে রূপালীর কাঁধে। তখনও থেমে থা🔜কেননি সেই মা দিনরাত কষ্ট করে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। দু‍‍`বছর আগে চরধীপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর তাকে দেওয়া হয়। এখন তিনি বাবার বাড়ি ও সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করেন। তার উপার্জনের অর্থ দিয়ে চলে মা, দাদি এবং সন্তানের ভরণপোষণ। তিনি এখনও 🔯তার স্বামীর অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে থাকেন।

সমাজে কোনো মা একা সন্তান পালনের মতো এত বড় দায়িত্ব নেওয়ার পরও অনেক সময় মুখ ফুটে তা বলতে সাহস পান না। সামাজিকতার বেড়াজালে আটকে যায় এ সংগ্রামী মায়েদের কꦜষ্টের কথা। একদিকে নিজের এবং সন্তানের দায়িত্ব। অন্যদিকে চারপাশের রক্তচক্ষু বা নানা বিড়ম্বনা মা এবং সন্তানের স্বাভাবিক জীবনযাপনের চেষ্টাকে পদে পদে কঠিন করে তোলে।

পাশের এলাকা থেকে জামা বানাতে এসেছেন অথৈ দাস। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ছোট থেকে রূপালী আপার কাছে আসতাম। জামাকাপড় বানাতে তিনি খুব কষ্ট করে সন্তানকে ♍পড়াশোনা করান। হাঁস-মুরগি ও সেলাইয়ের কাজ করে সংগ্🍎রাম করে টিকে আছে রূপালী আপার মতো অনেক মা।”

ছেলে নিরব খন্দকার আরিফ সংবা⛄দ প্রকাশকে বলেন, “আমার মা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা। আম𒊎ার বাবা নেই। ছোটবেলা থেকে দেখতাম মা খুব কষ্ট করে আমাকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। আমি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি আমি আরও পড়াশোনা করে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করব।”

খন্দকার আরিফ এবার ভোকেশনালে জিপিএ ৪.৬৪ পেয়েছে।

মারিয়া আক্তার রুপালী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমি গর্ভবতী থাকাবস্থায় আমার স্বামী আমাকে রেখে চলে যায়, কেন গেছে তা আমি জানি না। তখন থেকে আমি আমার বাবার বাড়িতে খুব কষ্ট করে থেকেছি। আমার যখন ছেলে সন্তান হয় তখন আমি মানুষের বাসায় কাজ🐠 করে সংসার চালিয়েছে। পরে সরকার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি সেলাই মেশিন পাওয়ার পর তা দিয়েই মোটামুটি আমার সংসার ভালোই চলত ।  ওর বাবা নেই। বড় কলেজে ভর্তি করে আমার ছেলেকে অফিসার বানাব। আপনারা🌼 আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”

গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মো. আবুল খায়ের বলেন, “রুপালী আমাদের পাশের গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী চলে যাওয়ার পরে খুব কষ্ট করে সংসার ও ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছে। আমরা সরকারিভাবে যতটুকু পারি তাকে সহযোগিতা করি, ভবিষ্যতেও গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমি মা দিবস উপলক্ষে সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।”
 

Link copied!