টিকটকের মাধ্যমেই আমেনা বেগমের সঙ্গে পরিচয় ꦿহয়েছিল ইয়াসিন আরাফাতের। পরিচয় থেকে ধীরে ধীর💛ে তাদের মধ্যে যোগাযোগ আর কথাবার্তা হতে থাকে। একসময় তৈরি হয় গভীর সম্পর্ক।
আমেনা বেগম (৩৫) আর ইয়াসিন (২৭) দুইজনই কুমিল্লার বাসিন্দা। মুরাদনগরের কামাল উদ্দিনের মেয়ে আমেনা থাকতেন চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার বলুয়ার দিঘীর পাড় আবুল কা𓂃লা🃏ম সওদাগরের কলোনিতে। আমিরাতের দুবাইপ্রবাসী ইয়াসিনও থাকতেন চট্টগ্রাম শহরে।
সম্পর্কের সূত্র ধরে এক পর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারকে না জানিয়ে বিয়েও করে ফেলেন তারা। যদিও এর আগে একাধিক বিয়ে করেছিলেন তারা দুইজনেই। আগের পক্ষꦅের সন্তানও আছে তাদের। এদিকে, না জেনে বিয়ে করায় ইয়াসিনের পরিবার আমেনাকে মেনে নিচ্ছিল না। যে কারণে ইয়াসিন তার স্ত্রীক🦂ে চট্টগ্রামের বাকলিয়া তক্তারপুল এলাকায় ভাড়া বাসায় রাখতেন।
কয়েক মাস আগে ছুটি নিয়ে দেশে আসেন ইয়াꦦসিন। এরপর আমেনাকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন। পরে বিষয়টি জেনে যান আমেনা। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। বেশ কিছুধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-ঝাটিও চলছিল।
এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে ইয়াসিন তার ইরফান নামে এক প𒀰ুলিশ ও আগ্রাবাদের নাহিদ নামের দুই বন্ধুকে নিয়ে আমেনাকে খুনের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মতো গত ৩০ সেপ্টেম্বর নাহিদকে জানান, তিনি দুবাই থেকে আসছেন। বন্ধুদের নিয়ে পার্টি করবেন।
পরদিন ১ অক্টোবর ই🥀য়াসিন দেশে ফিরলে নাহিদ আরেক বন্ধু ইরফানসহ আগ্রাবাদে আসেন। সেখান থেকে রাতে আনোয়ারায় ইরফানের বাড়িতে গিয়ে তিন বন্ধু মিলে নেশা করেন। এরপর রাত ১২টার দিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াসিন তার স্ত্রী আমেনাকে নিয়ে ফের ইরফানের বাসায় ফিরে যান।
আনোয়ারায় ইরফানের বাসায় আমেনাসহ চার💫জন মিলে আবারও একসঙ্গে নেশা করেন। রাত তিনটার দিকে তারা পরিকল্পনা করেন গাড়ি নিয়ে কর্ণফুলী টানেলে ঘুরতে বের হবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই রাতেই বের হন। তবে ট্যানেলে না গিয়ে তারা সিদ্ধান্ত পাল্টে পাহাড়ে বসে নেশা করার পরিকল্পনা করেন।
এরপর ইরফান তাদের আনোয়ারার দেয়াং পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইয়াসিন ও তার স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে হঠাৎ ইরফান পেছন থেকে আমেনাকে জড়িয়ে ধরেন। এসময় ইয়াসিন ছুরি বের করে আমেনার পেটে ঢুকিয়ে 🌱দেন।
কিছুক্ষণ পর আমেনার মৃত্যু হলে তিনজনে মিলে নিহতের পরনের কাপড় কেটে লাশ ধরে নালার মধ্যে ফেলে দেন। এরপর তারা ঘটনাস্থল থে༺কে ইয়াসিনের খালাত🌼ো ভাইয়ের বাসায় গিয়ে যে যার মতো চলে যান।
স্ত্রী আমেনাকে খুন করে আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের চায়না ইকোনমিক জোন পাহাড় রেখে দুদিন পর ⭕৩ অক্টোবর ইয়াসিন ফের বিদেশে চলে যান। এরপর সেইদিন দুপুরে পুলিশ আমেনার মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশের ভাষ্য, শেয়াল বা কুকুর লাশের কিছু অংশ খেয়👍ে ফেলায় মরদেহ শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। এমন পꦑরিস্থিতিতে পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন ইউনিটকে পরিচয় শনাক্তের ভার দেওয়া হয়। একদিনের মাথায় পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই।
পুলিশ পরে জেনে যায়, উদ্ধার করা মরদেহ আমেনা বেগমের (৩৫)। যিনি চট্টগ্♊রামের বলুয়ার দীঘির পাড়ে আবুল কালাম সওদাগর কলোনির বাসিন্দা কামাল উদ্দিনের মেয়ে। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নাগেরকান্দি। পরে আনোয়ারা থানায় হত্যা মামলা করেন আমেনার বাবা কামাল উদ্দিন।
দীর্ঘ ২৫ দিন ধরে তদন্তের পর শনিবার (২৬ অক্টোবর) নগরীর পাহাড়তলীতে পিপিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর আমেনা হত্যা মামলার র꧋হস্য উদ্ঘাটনের তথ্য তুলে ধরেন জেলার পুলিশ সুপার শেখ জয়নুদ্দীন।
শেখ জয়নুদ্দীন জানান, আমেনার মরদেহ উদ্ধারের পর তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে পরিচয় শনাক্ত হয়। পরে গাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই আসামিকে শনাক্ত করা হয়। গত ১৮ 🦹অক্টোবর নগরীর ডবলমুরিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নাহিদকে।
আর রাঙামাটিতে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল ইরফানকে জেলা পিবিআই অফিসে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তার দুইজন চট্টগ্রাম জুডিশি🌺য়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আমেনার বাবা কামাল উদ্দিন বলেন, আমার মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে আনোয়ারায় নিয়ে যায় তার স্বামী🐽। সেখানেই খুন করেছে মেয়ের স্বামীসহ তার বন্ধুরা। ইয়াসিনকে তাকে বিদেশ থেকে ধরে আনা হোক। তার ফাঁসি চাই।