• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, ৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী বিপ্লবী লীলা নাগ স্মরণে


আলম খোরশেদ
প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৩, ০৯:৩৪ এএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী বিপ্লবী লীলা নাগ স্মরণে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী ও প্রথম স্নাতকোত্তরಌ সনদলাভকারী, বিপ্লবী লীলা নাগের (১৯০০-১৯৭০) কথা প্রথম শুনি বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে এবং পরবর্তীকালে নানা বইপত্রে তাঁর সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে তাঁর ওপর সম্প্রতি নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র ‘লীলাবতী: দ্য রেবেল’-এর উদ্বোধনী প্রদর্শনীর কথা জেনে তাই স্বতঃপ্রণো💫দিত হয়েই সেটি দেখতে গিয়েছিলাম। ছবিটির প্রযোজনা, গবেষণা ও চিত্রনাট্য রচনার দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশের সুপরিচিত ভ্রমণকন্যা এলিজা বিনতে এলাহী এবং সেটি পরিচালনা করেছেন আবু রেজওয়ান নাসির।

এক ঘণ্টারও বেশি দীর্ঘ এই ছবিটিতে লীলা নাগের (পরবর্তীকালে বিপ্লবী অনিল রায়ের (১৯০১-১৯৫২) সহধর্মিণী লীলা রায়) বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর নানাদিক থেকে আলো ফেলার চেষ্টা করা হলেও ত🌟াঁর মতো এমন একজন বিরল, বিদ্রোহী ও বহুমাত্রিক চরিত্রের প্রতি সম্পূর্ণ  সুবিচার করা গেছে সেটা হয়তো বলা যাবে না, তবু চলচ্চিত্রমাধ্যমে তাঁকে উপস্থাপনের এই প্রথম প্রয়াসটুকু ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই।

লীলা নাগ ছিলেন একাধারে একজন মেধাবী ছাত্রী; বাংলার প্রথম নারীসংগঠন ‘দীপালি সঙ্ঘ’র প্রতিষ্ঠাতা; নারীশিক্ষা ও না꧃রীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সক্রিয় সংগঠক; অসংখ্য নারীশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঢাকার বিখ্যাত নারী শিক্ষা মন্দির, কামরুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়, আরমানিটোলা বালিকা বিদ্যালয় ইত্যাদি; প্রথম নারীপত্রিকা ‘জয়শ্রী’র প্রকাশক ও সম্পাদক; ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী সংগঠন ‘শ্রী সঙ্ঘে’র সক্রিয় সভ্য, যাঁর কাছ থেকে খোদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দ🐓েদার অস্ত্রচালনা শিক্ষা করেছেন; প্রায় দশ বছর জেলখাটা রাজনীতিবিদ; খোদ সুভাষ বসুর ঘনিষ্ঠ সহচর, তাঁর দেশত্যাগ ও অন্তর্ধানের পর ফরোয়ার্ড ব্লক দলের অন্যতম কাণ্ডারি; স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতের প্রথম গণপরিষদে বাংলা থেকে নির্বাচিত একমাত্র নারীসদস্য; এ ছাড়া চিত্রশিল্পী, সংগীতশিল্পী, সেতারবাদক; অক্লান্ত সমাজকর্মী ইত্যাদি বহুগুণে গুণান্বিতা ও বহু কর্মে নিয়োজিতা অনন্যসাধারণ এক ক্ষণজন্মা নারী।

বাংলার একেবারে নিজসౠ্ব এহেন এক মহাকাব্যিক চরিত্র🌳ের জীবন ও কর্মকে চলচ্চিত্রের ভাষায় উপস্থাপনের এই প্রশংসনীয় প্রয়াসটুকুর মাধ্যমে আশা করা যায়, বর্তমান প্রজন্মের সদস্যদের কাছে প্রায় বিস্মৃত এই মহীয়সী নারীর বিশদ পরিচয় ও অবদানসমূহ নতুন করে উদ্ভাসিত হবে; এ যুগের গবেষক, সংগঠক, সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদেরা বিপ্লবী লীলা নাগের প্রতি পুনরায় আগ্রহী হয়ে উঠবেন, বিশেষ করে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা তাঁর স্মৃতিসমূহ রক্ষায় এবং তাঁর জীবন অধ্যয়নে মনোযোগী হবেন।

লীলা নাগের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রীহলের নামকরণ এবং পুরনো ঢাকায় অবস্থিত শেরেবাংলা বালিকা বিদ্যালয়কে তাঁর রাখা ‘নারী শিক্ষা🌜 মন্দির’, এই আদি নামটি ফিরিয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি। আলোচ্য চলচ্চিত্রটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এমন দাবির বিষয়ে সচেতন ও সহানভূতিশীল করে তুলবে, এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা। আর তাহলেই এই সময়োপযোগী𝓰 প্রামাণ্যচিত্রটির নির্মাণ সার্থক ও ফলপ্রসূ হবে।

সবশেষে এই𝔍 ছবির প্রযোজক, পরিচালক ও সম্পৃক্ত সবাইকে জানাইꦰ আমাদের আন্তরিক অভিবাদন ও অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা।

Link copied!