১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকের হাতে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, কর্ণেল জামিল, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হক, প্রায় একই সময়ে ঘাতকরা বঙ্গব💮ন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় হামলা চালিয়ে শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াতের বাসায় হামলা করে সেরনিয়াবাত ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় বেন্টু খান।
বঙ্গবন্ধুর বোন শেখ আছিয়া বেগমের বড় ছেলে, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক, শেখ🍰 ফজলুল হক মণির দুই ছেলে, বর্তমান যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ১৫ আগস্টের সন্ত্রাসী হামলায় হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। হামলার সময় বাবা-মায়ের সঙ্গেই ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁরা। সে সময় তাপসের বয়স ছিল ৪ বছর এবং পরশের ৬। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বয়স ছিল ৫ বছর আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বয়স ছꩲিল আড়াইয়ের মতো। মায়ের সঙ্গে বিদেশ থাকায় তাঁরা দুইজনও বেঁচে গিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনিরা কেন শুধু তাঁকে নয়, পুরো পরিবারকেই চিরতরে ধ্বংস করতে ভয়ানক প্রয়াস চালিয়েছিল? কীভাবে তৈরি হয়েছিল সেই পরিস্থিতি? কারা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে খুনিদের তৈরি করেছিল? এত বড় একটা হামলা কীভাবে সংঘটিত হতে পেরেছিল, সেটি কি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের জানা উচিত না? যে নেতার নেতৃত্বে, আহ্বানে ও ঘোষণায় আমরা স্বাধীন দেশের মালিক, তাঁর হত্যারহস্য জানা আমাদের জানা জরুরি। না হলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। উচিত ছিল উচ্চপর্যায়ের কমিশন করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক কুশীলবদের সবার চেহারা স্থায়ীভাবে মানুষের সামনে উন্মোচিত করা। কিন্তু এটা করা যায়নি। খুনিদের বিচার হয়েছে, কিন্তু খুনিদের মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতাদানকারী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিচার দূরের কথা, সঠিক ইতিহাসই এখন পর্যন্ত সর্বসম্মতিক্রমে পাঠ্যপুস্তক কিংবা কোনো সরকারি দলিলে লিপিবদ্ধ করা যায়নি। বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করꦫা হয়েছিল সেটি বিশ্লেষণ করা যাক। আমাদের সামনে প্রশ্নগুলো হল, কেন তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল? কারা তাঁকে হত্যা করেছিল? হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল কী?
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ছিল আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের নিষ্ঠুর বাস্তবায়ন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মূলত বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। বঙ্গবন্ধুকে তাঁর মতো করে কাজ করতে দেয়নি দেশি-বিদেশি বাংলাদেশবিরোধী শক্তিগুলো। বঙ্গবন্ধুকে কাজ করতে দিলে বাংলাদেশ হত বিপ্লবের মডেল, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মডেল, দুর্নীতি-মুক্ত আধুনিক, মানবিক রাষ্ট্রের মডেল। এটা কোনোভাবেই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী হতে দিতে চাইত না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি বলতে আমরা বুঝি শুধু পাকিস্তান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখানে অন্যতম পরাজিত অংশীদার। পাকিস্তানের মুখ্য অভিভাবক হিসেবে করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পুঁজিবাদের কেন্দ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনো চায়নি পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হোক। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে, বাংলাদেশ সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হলে দেশে দেশে সমাজতন্ত্র জনপ্রিয় হবে, পুঁজিপতি শোষকের গদি দুর্বল হয়ে যাবে, স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষেরা বিদ্রোহ করবে। এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দিতে চায়নি পুঁজিবাদের প্রধান নেতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সমাজতান্ত্রিক ব্লকের সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রের জন্ম দিয়ে ধনতান্ত্রিক মোড়লদের পরাজিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন পুঁজিবাদবিরোধী একজন সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিবিদ। তিনিও ক্লাসলেস' সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন, তবে ধার করে আনা কোনো তন্ত্র দিয়ে নয়, বাংলাদেশের লোকজ ও শাস্ত্রীয় ধর্ম চেতনাকে ধারণ করে একটি সমবায়ভিত্তিক সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। সমাজতন্ত্রকে তিনিও বলতেন ‘ক্লাসলেস’ সোসাইটি প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ। তবে তিনি নিজেকে ‘কম্যুনিস্ট’ বলে কখনো পরিচয় করিয়ে দেননি।
পাকিস্তান আমল থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন শেখ মুজিব। আমেরিকাবিরোধী বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর চক্ষুশূল। সোভিয়েত রাশিয়ার আশীর্বাদপুষ্ট সমাজতান্ত্রিক ব্লকের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন মুজিব। এখন প্রশ্ন হল, বাইরের শক্তি চাইল বলেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারল? কীভাবে? একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি, গণহত্যা ও ধর্✤ষণের শিকার লাখ লাখ পরিবার, বিধ্বস্ত অবকাঠামো নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের। অথচ শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধুকে অশান্তির মধ্যে রেখেছে বিরোধীরা। এমনকি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে মুক্তিযুদ্ধ ফেরত একটি অংশও বঙ্গবন্ধুকে নিয়মিতভাবে অসহযোগিতা করেছে। সবাই মিলে একটা ঘোলাটে ও বিপজ্জনক পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল বঙ্গবন্ধুবিরোধী গোষ্ঠীগুলো। যখন ধোঁয়াশা চরমে তখন সুযোগ বুঝে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান মিলে স্থানীয় কুশীলবদের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। আমরা শুধু খুনিদেরকে চিনি, কিন্তু যারা খুনের পরিবেশ তৈরি করেছে, যারা সুযোগ করে দিয়েছে, যারা খুনিদের এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছে তাদের সম্পর্কে জানি না। স্থানীয় কুশীলবদের আমাদের মাথায় রেখে অনুসন্ধানে নামতে হবে।
এদেশের গুটিকয়েক ব্যক্তিবর্গের কর্মতৎপরতার সাথে দেশীয় গণমাধ্যম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান💙 এবং দেশীয় আমলাতন্ত্রের ভূমিকা তুলনা বিশ্লেষণ করলে আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পুরো প্লট সম্পর্কে আমরা পরিষ্কার ধারণা পেতে পারি। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের ভূমিকাও আমাদের আলোচনায় আনতে হবে। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে ভারতীয় সরকারের আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিষয়।
সম্প্রতি চ্যানেল আই অনলাইনের প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ১৫ আগস্টের আগেও বঙ্গবন্ধুকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৫ সালের ২১ মের ওই হত্যাচেষ্টার খবর প্রকাশ না করতে গণমাধ্যমকে নির্দেশ দিয়েছিল। এসব কথা বলা হয়েছিল ঢাকায় তৎকালীন মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে পাঠানো গোপন এক তারবার্তায়। বিশ্বে সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস সম্প্রতি এই তারবার্তা প্রকাশ করেছিল। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে ১৯৭৫ সালের ২৩ মে পাঠানো ওই তারবার্তায় বলা হয়, “রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল বলে দুটি সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। ২১ মে ঢাকার উপকণ্ঠে নতুন টেলিভিশন স্টেশন পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে ফেরার সময় তাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। এ বিষয়ে প্রথম জানা গেছে দূতাবাসের রাজনীতিবিষয়ক এক বাঙালি সহকারীর কাছ থেকে। রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা ইউনিটের উপপুলিশ সুপার তাকে (দূতাবাসের সহকারী) এই তথ্য জানিয়েছেন। এরপর একজন সাংবাদিক দূতাবাসের তথ্য কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে অবহিত করেন। উভয় সূত্রই জানিয়েছে, হামলাকারীরা গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে একটি সূত্র জানায়, শেখ মুজিব অক্ষত আছেন। তবে অজ্ঞাতপরিচয়, দু'জন আহত হয়েছেন। তথ্য অধিদফতর এ-সংক্রান্ত খবর না ছাপাতে গণমাধ্যমকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে”।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে পাঠানো অন্য এ🐠ক তারবার্তায় বলা হয়, “পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। জনগণের মধ্যে একধরনের স্বস্তির ভাব দেখা গেলেও এ নিয়ে কোনো আনন্দ-উল্লাস হয়নি। নতুন সরকারে যারা আছেন তারা আগের সরকারেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে দুর্বল প্রশাসন পরিচালনায় ভূমিকা ছিল তাদেরও।”
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী বঙ্গবন্ধুকে একাধিকবার হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল ইয়াহিয়া খান। কিন্তু ঠান্ড💎া মাথার খুনি জুলফিকার আলী ভুট্টো, ইয়াহিয়াকে কৌশলে নিবৃত্ত করেছে। বঙ্গবন্ধুকে খুন করলে পূর্ব পাকিস্তানে থাকা প্রায় লাখখানেক পাকিস্তানী সৈন্যের একজনও বেঁচে ফিরতে পারবে না এটা জানত ভুট্টো। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা বিধানে খোদ সোভিয়েত ইউনিয়ন জাতিসংঘসহ সব গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে শক্ত হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখছিল। জেলখানায় বঙ্গবন্ধুকে খুন করতে না পারলেও মুক্ত অবস্থায় স্বাধীন বাংলাদেশে একাধিকবার চেষ্টা করে ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশের শত্রুরা। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন , ডিসেম্বর মাসেই কিন্তু জুলফিকার আলী পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মনোনীত হন।
পূর্ব পাকিস্তানে এত বড় গণহত্যা সত্ত্বেও শেষ চেষ্টা হিসেবে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানকে জুড়ে রাখার চেষ্টা করেছে ভুট্টো সরকার। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম ঠেকাতে আমাদের দিক থেকে খুব বিপজ্জনক একটা কৌশল নিয়েছিল জুলফিকার আলীর সরকার। বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন রাখা হতো। চলমান ঘটনাবলি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুকে কিছুই জানানো হতো না। এর সুযোগ নিতে বারবার চেষ্টা করেছে জুলফিকার আলী। ডিসেম্বর মাসে কয়েকবার জুলফিকার আলী ভুট্টো সুকৌশলে জাতির পিতাকে মিসগাইড করে হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করেছেন একাধিকবার। বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আর বঙ্গবন্ধু দেশে প্রত্যাবর্তন করেন ১০ জানুয়ারি। ৮ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে পাকিস্তান থেকে লন্ডনে যান জাতির পিতা। সেখান থেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে করে দেশে আসেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু যেন তুরস্ক হয়ে বাংলাদেশে আসেন। তুরস্কে বঙ্গবন্ধু গেলে কী হতে পারত? এটা পরিষ্কার করে বলা মুশকিল। কিন্তু জুলফিকার আলী ভুট্টোর যেকোনো কথা অনুসরণ করা যে ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিপজ্জনক, সেটা বঙ্গবন্ধুর চেয়ে আর কে ভালো বুঝতেন? উল্লেখ্য, পাকিস্তান থেকে ইংল্যান্ডে যাওয়ার পথে বিমানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী হয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। তুরস্কে যাওয়ার পরে তৎকালীন তুর্কি সরকারের তরফ থেকে কোনো প্রস্তাবনা আসতে পারত। বঙ্গবন্ধু সম্ভবত সেটা টের পেয়েছিলেন। মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান তুরস্কের সরকার পাকিস্তান সরকার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হয়তো বঙ্গবন্ধুকে ‘সব ভুলে গিয়ে’ পাকিস্তান ফেডারেশন করার প্রস্তাব দিতে দিত। ভুট্টোর কুমতলব আঁচ করতে পেরে বঙ্গবন্ধু আর তুরস্কের পথে যাননি। লন্ডনে গেলে প্রচুর বাংলাদেশি পাওয়া যাবে, স🍬ব খবর বঙ্গবন্ধু পাবেন এবং ভুট্টোর কু-ভাবনার প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারবেন, সম্ভবত এই ভাবনা থেকেই জাতির পিতা লন্ডনকে বেছে নিয়েছিলেন।
(চলবে)