• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


ডিবিতে ৭ দিন কী ঘটেছিল, জানালেন ৬ সমন্বয়ক


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
ডিবিতে ৭ দিন কী ঘটেছিল, জানালেন ৬ সমন্বয়ক
ছবি : সংগৃহীত

নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে ৬ সমন্বয়ককে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তাদের বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে ছেড়ে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এক দিন পর শুক্রবার (২ আগস্ট) ডিবি অফিসে আটক থাকার বিষয়ে মুখ খুলেছেন এই ছয়🎀 সমন্ℱবয়ক। 

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক বিবৃতিতে তারা অভিযোগ করে জানান, চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার নিয়ে ডিবি অফিসে বসে তারা কেউ স্বেচ্ছায় ভিডিও স্টেটমেন্ট দেননি। তা ছাড়া ডিবিপ্রধানের সঙ্গে খাবার টেবিলে বসিয়ে জোর করে ভিডিও ꦇকরা হয় বলেও অভিযোগ তাদের। এই ছয় সমন্বয়ক হলেন মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম ও আবু বাকের মজুমদার।

জানা যায়, গত ২৬ জুলাই ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে♊ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে ডিবি পুলিশ জোরপূর্বক মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে আসে। মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ছিল। পরদিন ২৭ জুলাই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে সায়েন্স ল্যাব থেকে জোরপূর্বক ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে আসা হয়। সর্বশেষ ২৮ জুলাই সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে ভোররাতে বাসা ভেঙে জোরপূর্বক ডিবি অফিসে নিয়ে আসা হয় বলে অভিযোগ তাদের।

বিবৃতিতে এই ৬ সমন্বয়ক বলেন, মূলত আন্দোলন ও নেতৃ▨ত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ‘নিরাপত্তা’র নামে ছয় সমন্বয়ককে সাত দিন ধরে ডিবি হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবিপ্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও আমাদের আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছিল। 

“আমরা গুম, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন থেকে নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা চেয়েছি🐎লাম; আমরা আমাদের মতপ্রকাশের অধিকারের নিশ্চয়তা চেয়েছিলামജ। কিন্তু অসাংবিধানিক ও আইনবহির্ভূতভাবে আমাদেরকে ডিবি হেফাজতে আটকে রাখা হয়। প্রথমে নিরাপত্তার কথা বললেও পরে আদালতের কথা বলা হয়। আদালতের আদেশ ছাড়া নাকি আমাদের ছাড়া যাবে না।”

বিবৃতিতে♏ বলা হয়, যারা নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে তাদের হেফাজতে কেউই নিরাপদে থাকতে পারে না। সরকারের কাছে আমরা এই প্রহসনের নিরাপত্তা চাই না ৷ আমরা আমাদের ভাই বোনদে𒐪র খুনের বিচার চাই।

“আন্দোলন প্রত্যাহার করে ডিবি অফিস থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়ককের ভিডিও স্টেটমেন্টটি আমরা স্বেচ্ছায় দেইনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সিদ্ধান্ত ডিবি অফিস থেকে আসতে পারে না। ꦉ সারাদেশের সকল সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ব্যতীত কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে না।” 

“ডিবি অফিসে আমাদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। আমাদে🧸র ছেড়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে আসলে, দেখা করতে দেওয়া হয়নি।”

বিবৃতিতে বলা হয়, অন্যায়ভাবে সমন্বয়কদের আটক, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ৩০ জুলাই রাত থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের ডিবি অফিসে আটক অবস্থায় অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে সে খবর জানামাত্📖র সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুলাহ ও নুসরাত তাবাসসুไমও অনশন শুরু করেন।

“অনশনের কথা পরিবার ও মিডিয়া থেকে গোপন করা হয়। প্রায় ৩২ ঘণ্টারও অধিক সময় অনশনের পরে ডিবি প্রধান ছয় সমন্বয়ককে মুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলে অনশন ভাঙা হয়। আমাদেরকে পহেলা আগস্ট দুপুর দেড়টায় পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। গত সাতদিন ডিবি অফিসে আমাদের ও আমাদের পরিবারের🌼 সাথে নানা হয়রানি, নির্যাতন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতি♍বাদ জানাচ্ছি।”

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই🅰 আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার এখনো শিক্ষার্থীদের ওপর দমননীতি অব্যাহত রেখেছে এবং সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার ও নির্যাতন করছে এবং শান্তিপূর্ণ ক▨র্মসূচিতে বাধা প্রদান করছে। 

“ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটককৃত নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে সরকারের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ও দমন-পীড়নকে তোয়াক্কা না করে রাজপথে নেমে আসুন। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না।”
প্রসঙ্গত, গত রবিবার রাতে (২৮ জুলাই) ডিবি কার্যালয় থেকে সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক। এসম🥀য় আন্দোলনের সমন্বয়করা লিখিত বার্তা পাঠ করে শোনান।

লিখিত বার্তায় সমন্বয়করা বলেছিলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অꦓগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দ🅷াবি জানাই।

তারা আরও জানায়, আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা💦 ইতোমধ্যে সরকার পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠ🅘ু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই।

সার্বিক স্বার্থে💫 এই মুহূর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি বলে সমন্বয়কদের পক্ষ জানান নাহিদ ইসলাম। ল🎃িখিত বার্তায় স্বাক্ষর করেছিলেন এই ৬ সমন্বয়ক।

ওই দিন রাতে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার ফেসবুকে ছয় সমন্বয়ককে নিয়ে টেবিলে খাবারের খাওয়ার ভিডিও꧅ প্রকাশ করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচ𒁏না রকতে দেখা যায়। পরবর্তীতে গত বুধবার (৩১ জুলাই) ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক আদেশে তাকে বদলির কথা জানানো হয়। বর্তমানে তাকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Link copied!