কিছুদিন আগেও পুঁজিবাজারের প্রতি নেতিবাচক প্রভাব ছিল বিনিয়োগকারꦚীদের। সূচক উঠানামা, কোম্পানিগুলোর ওপর ক্ষমতার দৌরাত্ম্য, অর্থ লোপাটসহ নানা কারণে আস্থা সংকট সৃষ্টি হয়। তবে সরকার পতনের পর সংকট কাটতে শুরু করেছে। লাভের আশায় পুঁজিবাজারের যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারী সাগর হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এখন প্রতিদিনই ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। তাদের মুখে হাসি ফিরে এসেছে। লাভের আশায় নতুন করে বিনিয়োগ করছে। এই যে একটা আনন্দ, এটা কোনোভাবেই বোঝানো যাবে না। এটাꦛই সবসময় হওয়া উচিত ছি🔯ল।”
সাগর হোসেন আরও বলেন, “বিগত সরকারের আমলে পুঁজিবাজার লুটেপুটে খেয়েছে গুটিকয়েক চিহ্নিত মানুষ। বাজার থেকে হাতিয়ে নিয়েছে হাজা𝔍র হাজার কোটি টাকা। তবে এখন আর লুটেপুটে নয়, বাজার সংস্কার কܫরে স্বস্তির জায়গাটা নিশ্চিত করা হোক।”
সুমন নামের আরেকজন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “পুঁজিবাজার সংস্কার প্রয়োজন। তবে সবচেয়ে বেশি সংস্কার করতে হবে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। সেখানে বাজারে দুর্নীতির সাথে জড়িত অনেক ব্যক্তি এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। আমরা চাই বাজার আবারও ১৫ বছর আগের মতো ভালো হোক। তাহলে বিনিয়োগকারীরা বিন💦িয়োগ করে লভ্যাংশের মুখ দেখবে।”
তথ্য বলছে, গত তিন সপ্তাহ প্রধান শেয়ারবাজার ঢꦬাকা স্টক এক্সচেঞ্🥂জে (ডিএসই) শীর্ষ পাঁচটি কোম্পানির বাজার মূলধন বেড়েছে ২৩ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা। ডিএসই’র মোট বাজার মূলধনের ১১ দশমিক ৩ শতাংশ নিয়ে গত ২৫ অগাস্ট শীর্ষে রয়েছে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেড। এর বাজার মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। যেখানে ৪ অগাস্ট শেষে বাজার মূলধন ছিল ৩৩ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা।
এছাড়াও সপ্তাহখানেক আগে বেশির ভাগ কার্যদিবসে শেয়ার বাজার দুটিতে গ꧃্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, অলিম্পিক, অরিয়ন ফার্মা, জেএমআই হসপিটাল, সী পার্ল, স্কয়ার ফার্মা, রবি, আইএফআইসি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন বেশ ভালোই ছিল। এসব কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উৎসাহ দেখা গেছে।
সূত্র বলছে, বড় বড় কোম্পানি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনꦰিয়োগকারীরা। তারা লাভের আশায় ছোট ছোট কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছেন। বিগত সময়ে চেয়ে বর্তমানে ছোট ছোট কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে শেয়ার বাজারে স্বচ্ছতা ফিরে আসবে। বাজারের প্রতি সবার আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে আস্থার সংকটের কথা দীর্ঘ সময় ধরেই আলোচিত হচ্ছে। বাজারে আস্থা পুনরুদ্ধারে কেউই আন্তরিক ছিল না, আন্তরিক হয়নি। সময় অনেক অতিবাহিত হয়েছে। আর কালক্ষেপণ নয়। বাজারের দুর্নীতির সাথে জড়িত অপরাধীদের আদর 🤡না করে যোগ্য বিচারসহ কমিটির সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। তা করা গেলে দেশের ཧপুঁজিবাজারে আস্থা বা বিশ্বাস ফেরানো সম্ভব। কেননা, পুঁজিবাজার দেশের তৃণমূলে এখন বিস্তৃত।
জানতে চাইলে ঢাকা বℱিশ্ববিদ্যালয়ে𓄧র অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “পুঁজিবাজারে সূচক উঠলেই যে বাজার ভালো যাচ্ছে, বিষয়টি এমন নয়। আবার সূচক নিচের দিকে নামলেই যে বাজার খারাপ যাচ্ছে তাও কিন্তু না। ভালো কোম্পানি ছাড়া বাজারে সুবাতাস আশা করা যায় না।”
আবু আহমেদ আরও বলেন, “এক সময় মিউচুয়াল ফান্ড কেনার জন্য মানুষের আগ্রহ🍌 ছিল। কিন্তু এখন সেটা শূন্যের কোঠায়। বিনিয়োগকারীদের এক সময় অনেক উৎসাহ ছিল বিনিয়োহ করা নিয়ে। সেটাও বর্তমানে শূন্যের কোঠায়। তাহলে সবকিছু শূন্যের কোঠা নিয়ে পুঁজিবাজারের নতুন সম্ভাবনা কিভাবে আশা করা যায়? ঢালাওভাবে সংস্কার করতে হবে।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে বেশ আস্থার অভাব ছিল। অনেকেই আসল মূলধনটুকুও হারিয়েছেন। কমে গেছে বিও হিসাবধারীর সংখ্যাও। পুঁজিবাজারের লুণ্ঠনকারী এবং বিভিন্ন সময় কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত দুর্নীতিবাজরা সরকার পতনের আগে ও পরে অনেকেই গা ঢাকাജ দিয়েছেন। মূলহোতা ধরা পড়ে এখন কারাগারে। ফলে লোপাটকারী বেশির ভাগ বাজারে না থাকায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে পুঁজিবাজারে। বাজার আরও উন্নত করার জন্য নানা উদ্যো🍸গ গ্রহণ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার এখন ভালো আচরণ করছে। আগামী দিনে আরও ভালো পুঁজিবাজারের প্রত্যাশা রয়েছে। তবে সংস্কারের মাধ্যমে সঠিক নেতৃত্বের হাতে পুঁজিবাজারের দায়িত্ব অর্প🍃ণ করা না গেলে সুন্দর পুঁজিব🎉াজারের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।
ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের শীর্ষ নির্বাহী (সিইও) সুমন দাস সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমার কাছে বাজার ভালো মনে হচ্ছে। তবে সূচক উঠানামা থাকবেই। ওঠানামা না থাকলে বাজার হলো না। বাজার সংস্কার করলে সামনের দিকে অবস🃏্থা আরও ভালো হবে বলে আমি মনে ♚করি।”