• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস আজ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০৬:৫৯ এএম
ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস আজ

আজ ꦦ২৪ জানুয়ারি—ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস। বাঙালির দীর্ঘ স্বাধীনতা সংꦿগ্রামের ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে সংঘটিত হয় এই গণঅভ্যুত্থান।

মুক্তিকামী নিপীড়িত জনগণের পক্ষে জাতির মুক্তি সনদ খ্যাত বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দাবি এবং পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের দেওয়া ১১ দফা কর্মসূ🐽চির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয় এই গণঅভ্যুত্থান। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

জাতির পিতার ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফাভিত্তিক গণআন্দোলনের আদর্শকে ধারণ করে অগ্রসরমান সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত হয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা এই পরিষদ গঠন করে ১🌳১ দফা দাবি ঘোষণা করেন।

এই ১১ দফা দারির মূল ভিত্তি ছিল বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ছয় দফা। ছয় দফাভিত্তিক ১১ দফা দাবিতে ছাত্রসমাজের সমস্যাকেন্দ্রিক দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংক্রান্ত দাবিসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র ম𝓰ামলা প্রত্যাহার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রাজবন্দিদের মুক্তি।

ছয় দফা এবং পরবর্তীতে ১১ দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয় ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। ‘৬৯-এর ১৭ জানুয়ারি ছাত্রনেতারা দেশব্যাপী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা জℱারি করেন। সরকারি নিপীড়নের প্রতিবাদে ২০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রসভা ও প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ মিছিলে পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদ নিহত হলে আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে।

শহীদ আসাদের আত্মদানের পর ২১,🐽 ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ২৪ জানুয়ারি অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্🃏থান সৃষ্টি হয়।

পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে এদিন ঢাকায় সচিবালয়ের সামনের রাজপথে নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্র কিশোর মতিউর রহমান ও রুস♔্তম শহীদ হন। প্রতিবাদে সংগ্রামী জনতা সেদিন সচিবালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিক্ষুব꧅্ধ জনগণ আইয়ুব-মোনেম চক্রের দালাল, মন্ত্রী, এমপিদের বাড়িতে এবং তাদের মুখপত্র হিসাবে পরিচিত তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান ও পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকার অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঢাকার পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত সার্জেন্ট জহুরুল হক বন্দি অবস্থায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিহত হলে প্রতিবাদমুখর হয়ে বাংলার জনগণ। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা নিহত হলে সান্ধ্য আইন উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা। গণঅভ্যুত্থানের প্রবল চাপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্তগণ এবং নিরাপত্তা আইনে আটক ৩৪ জন নেতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় স্বৈরশাসক আইয়ুব খান। ২৩ ফেব্রুয়ারি লাখো জনতার উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খা🔜নের পতন ঘটে। সেই থেকে ২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত𝔍্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে দায়িত্ব পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এক বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিন।...জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন। পূর্ব পাকিস্তানে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঘোষিত ছয় দফা ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। ছয় দফা ঘোষণার পর স্বাধিকার আন্দোলনের গতি তীব্রতর হয় এবং সারা পূর্ব বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের যৌথ আন্দোলন গণআন্দোলনকে বেগবান করে।

তিনি বলেন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মতিউরসহ অন্যান্য শহীদের রক্ত বৃথা যায়নি। গণঅভ্যুত্থানের ফলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারসহ রাজবন্দিদের মুক্তি এবং প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের ক্ষমতা হস্তান্তর ছিল বাঙালির মুক্তি আন্দোলনে একটি মাইলফলক। গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরেই আমরা পেয়েছি স্বাধ💝ীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ ধরে অর্জিত এই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভ𒉰াবে কাজ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তি সনদ ৬-দফা, পরবর্তীকালে ১১-দফা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় স🐲শস্ত্🔯র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। গত ১৫ বছরে নিরলস পরিশ্রম করে দেশের আর্থসামাজিক সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মানুষ উন্নয়নের সুফল উপভোগ করছে। জাতিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস উপহার দিয়েছি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করেছি। অব🌃ৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে রুদ্ধ করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি এবং রায় কার্যকর করছি। নতুন প্রজন্ম দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধিশালী দেশে রূপান্তর এবং ২১০০ সালের মধ্যে ডেল🍸্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাত💛ির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে আমরা সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।

গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় বকশীবাজারে নবকুমার ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ﷺশহীদ মতিউর রহমানের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সবাইকে কর্মসূচিতে অং🍒শ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

Link copied!