• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ জানুয়ারি, ২০২৫, ,

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


পটকা-আতশবাজি কি ঠেকানো যাবে?


রাসেল হোসাইন
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪, ০৯:৪৬ পিএম
পটকা-আতশবাজি কি ঠেকানো যাবে?

ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বদল ঘটেছে। গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন নতুন সরকার। পরিবর্তনের হাওয়া বইছে সবখানে। আর এমন পরিস্থিতির মধ্꧃যেই দুয়ারে হাজির ইংরেজি নববর্ষ। পুরাতন সবকিছু বিদায় নিয়ে, সামনে এসেছে নতুন বছর, নতুন সময়। সেই নববর্ষকে বরণ করতে ইতোমধ্যে প্রস্তুত গোটা বিশ্ব। প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশও।

তবে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করতে গিয়ে প্রতি বছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে দেশজুড়ে ব্যাপক পটকাবাজি, আতশবাজির ঘটনা ঘটে। সেই সঙ্গে রাতের আকাশে বিপজ্জনকভাবে ওড়ানো হয় হাজার হাজার ফানুস। পটকা আর আতশবাজির ভয়াবহ শব্দ ও বায়ুদূষণের ঘটনায় 💧সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ꩲ শিশু, বয়স্ক নারী-পুরুষ, হৃদরোগীরা। বিকট শব্দে হৃদরোগীরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। তাছাড়া প্রচণ্ড শব্দ আর আলোর ঝলকানিতে পশুপাখিদেরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ভীত-সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েন তারা।

অন্যদিকে, রাতের আকাশে হাজার হাজার ফানুস ওড়ানোর ফলে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এক একটা ফানুস জলন্ত অগ্নিগোলক হিসেবে বিপজ্জনকভাবে উড়তཧে থাকে আকাশে। কোনো ভবন বা দাহ্য পদার্থের ওপর পড়ার কারণে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু স্বপ্ন। তাছাড়া পটকা ফোটানো বা ফানুস ওড়াতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে অনেকের মৃত্যুও ঘটে।

এসব কারণে দীর্ঘদিন ধরেই নববর্ষে ব্যাপকহারে পটকা, আতশবাজি আর ফানুস ওড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আসছিলেন সচেতন মানুষ। গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত কয়েক বছর ধরে থার্টি ফার্স্ট নাইটে পটকাবাজি আর আতশবাজি নিষিদ্ধ করা হয়। সেই সঙ্গে ফানুস ওড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতায় ফানুস ওড়ানো কিছুটা কমে এলেও আতশবাজি কিংবা পটকা ফোটানো এখনো নিয়ন্ত্রণ করা♔ যায়নি।

এবার পটকা আর আতশবাজির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই সরব হয়েছেন। জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য এমন সরব প্রচারণার সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, পরিবেশ মন্ত্রণালয় এমনকি হাইকোর্ট থেকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে থার্টি ফার্স্ট নাইটে পটকা ও আতশবাজি এবং ফানুস ওড়ানো বন্ধ করতে। এমনকি এবার আতশবাজি বন্ধে ভ✃্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্তও নিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

প্রতি বছরের মতো এবারও থার্টি ফার্স্ট নাইটে জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর পটকা, আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানোর মতো বিধিবহির্ভূত শব্দদূষণ কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। গত ২৭ ডিসেম্বর মন্ত্ℱরণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার দ༒ীপংকর বর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আতশবাজি ও পটকা ফোটানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আতশবাজি ও পটকা ফোটানোর কারণে অতিরিক্ত ꦓশব্দদূষণ ও বায়ুদূষণে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও মানসিক চাপের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া, ফানুস উড়ানোর ফলে অগ্নিকাণ্ড ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ অনুযা𒊎য়ী এসব কার্যক্রম দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রথমবার আইন লঙ্ঘনে ১ মাসের জেল বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। পুনরায় অপরাধ করলে ৬ মাসের জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

অন্যদিকে, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা মহ💛ানগর এলাকায় যেকোনো ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মাদ সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে অনুমতি ছাড়๊া উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, নাচ, গান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র্যালি ও শোভাযাত্রা করা যাবে না।

গণবিজ্ঞপ্তির নির্দেশনা অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরী এলাকায় সব বার বন্ধ থাকবে। হোটেলগুলো সীমিত আকারে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। গুলশান, বনানী ও বারিধা🦩রা এলাকায় রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। হাতিরঝিল এলাকায় কোনো সমাবেশ বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। যানবাহন থামিয়ে কেউ অবস্থান করতে পারবেন না। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে গাড়ির হর্ন বাজানো বা গণ-উপদ্রব সৃষ্টি করে, এমন কোনো গানবাজনা চালানো যাবে না।

শুধু তাই নয়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে দুর্ঘটনারোধে বাসাবাড়ির ছাদ ও ভবন, উন্মুক্ত স্থান, পার্কে আতশবাজি, পটকা ফোটানো বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একটি বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। রাজধানীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে অতিরিক্ত তিন হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি পরিবেশ 🤪অ♏ধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। তারা যে কোনো জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাবেন।

সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা
এবার পটকা-আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানোর বিরুদ্ধে বেশি সরব হয়েছেন নেটিজেনরা। তারা পশুপাখীদের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। চিরতরুণ নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান ৩০ ডিসেম্বর ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টে থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ও ফানুস ওড়ান๊োর বিপদের কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘মানুষদের মতো পাখিদের কোনো ক্যালেন্ডার নেই। তারা থার্টি ফার্স্ট চেনে না।’

জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ ৩১ ডিসেম্বর তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে বলেছেন, “আমরা ফানুসের আগুন, শব্দদূষণ, পশুপাখি ও বৃদ্ধ-শিশুদের আতঙ্কমুক্ত নতুন বছরে প্রবেশ করতে চাই। প্রত্যেক এলাকার দায়িত্বশীল বিবেকবান মানুষের এই অনাচার বন্ধে সাম♌াজিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।”

তবে এতকিছুর পরেও পটকা-আতশবাজি বন্ধ হবে না বলে মনে করছেন অনেকে। তাদের ভাষ্য, পটকা, আতশবাজি আর ফানুসের উৎপাদন বা বাজারজাত অব্যাহত রেখে আইন প্রয়োগে বন্ধ করা কখনই সম্ভব নয়। অনেকে বলছেন, 🐻থার্টি ফার্স্টে পটকা আর আতশবাজি ফোটানো অপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এটাকে ঠেকাতে গেলে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে থেকে সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

Link copied!