• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩০, ১৩ রজব ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


বাঙালির মকর সংক্রান্তির উৎসবে কী কী হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২৫, ০৬:৩২ পিএম
বাঙালির মকর সংক্রান্তির উৎসবে কী কী হয়
ছবি: সংগৃহীত

মকর সংক্রান্তি বাঙালির প্রাচীন উৎসবের একটি।এটি প্রধানত কৃষিভিত্তিক উৎসব। যা শীতের শেষে নতু⭕ন ফসল ঘরে তোলার আনন্দে উদযাপিত হয়। দুই বাংলায় এটি এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। পিঠে-পুলি, খেজুরের গুড়, নবান্ন আর সার্বজনীন মিলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির এই উৎসব সাধা🃏রণ মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে আছে।

মকর সংক্রান্তি সাধারণত ১৪ বা ১৫ জানুয়ারি পালিত হয়। এই দিনটি উত্তরায়ণ নামে পরিচিত, কারণ সূর্য তার দক্ষিণায়ণ পর্ব থেকে উত্ত﷽রায়ণের দিকে যাত্রা শুরু করে। এটি আলোর বিজয় এবং অন্ধকারকে পেছনে ফেলে নতুন শুরুর প্রতীক। কৃষক সমাজে এটি নতুন ফসল তোলার সময়, তাই মকর সংক্রান্তি মূলত ধন্যবাদ জ্ঞাপনের উৎসব। ধর্মীয🐽় দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, এই দিনে ভগবান সূর্য দেবতা তার পুত্র শনি দেবের সঙ্গে দেখা করতে আসেন।

বাংলার মকর সংক্রান্তিরঐতিহ্যবাহী রীতি

বাংলায় মকর সংক্রান্তি একটি গ্রামীণ এবং কৃষিভিত্তিক উৎসব। গ্রামবাংলায় এই উৎসবকে নবান্নের সঙ্গে যুক্ত করা হয়, যেখানে নতুন ফসলের মধুর স্বাদ উদযাপন করা হয়। এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ পিঠে-পুলি এবং খেজুরের গুড়। বিভিন্ন ধরণের পিঠে যেমন ভাপা পিঠে, পাটিসাপটা, দুধপুলি, চিতই পিঠে প্রভৃতি তৈরি হয়। এগুলো খেজুরের গুড়, নারকেল এবং দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়, যা🃏 শীতের সময়ে বাঙালির প্রিয় খাবার।

এছাড়াও বাংলায় এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন মেলা ও লোকাচার। যেমন, ভারতের বৃহত্তম তীর্থমেলা গঙ্গাসাগর মেলা মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী এই দিনে সাগর দ্বীপে গঙ্গা নদীর মোহনায় পূণ্যস্নান করতে যান।
গ্রাম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে 🙈মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে পৌষ সংক্রান্তি পালিত হয়। এখানে বিভিন্ন খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মেলায় গ্রামের মানুষ মিলিত হন।

কিছু অঞ্চলে এই দিন চড়ক পূজা বা সূর্য পূজার আয়োজ♔ন করা হয়। এটি সূর্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি রূপ।

উৎসবের ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক দিক
মকর সংক্রান্তির দিনটি পবিত্র বলে বিবেচিত হয় এবং ধর্মীয় কাজের জন্য অত্যন্ত🍬 উপযোগী। এই দিনে গঙ্গা, যমুনা, এবং অন্যান্য পবিত্র নদীতে স্নান করার রীতি প্রচলিত। এটি শরীর এবং আত্মাকে শুদ্ধ করার একটি পবিত্র প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়। বাঙালি হিন্দু সমাজে এই দিনে দান করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষত ত🗹িল, চিঁড়ে, গুড় এবং নতুন ফসল দান করার রীতি প্রচলিত।

পৌষ পার্বণের আনন্দ
পৌষ মাসের শেষ দিনে মকর সংক্রান্তি উদযাপনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পরিবার এবং সমাজের মিলন। ছোটো বড়ো সবাই একত্রিত হয়ে পিঠে-পুলি খাওয়া, নতুন জামাকাপড় পরা এবং গানবাজনা উপভোগ করেন। গ্রামের বাড়ির উঠোনে নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি চিতই পিঠে এবং পাটিসাপটা একꦰ অন্যরকম স্বাদ এনে দেয়।

নতুন ফসল তোলার আনন্দ
মকর সংক্রান্তি প্রধানত কৃষিভিত্তিক উৎসব হওয়ায় এই সময় কৃষকদ꧅ের বাড়িতে নতুন ধান তোলার পর আনন্দের স্রোত বইতে থাকে। ধানে🌼র গুড়ো, নারকেল, দুধ এবং গুড় দিয়ে তৈরি পিঠে এই আনন্দের অন্যতম প্রতীক।

বাঙালির মকর সংক্রান্তির বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান

মকর সংক্রান্তির খাবারের মধ্যে তিল এবং গুড় বিশেষ স্থান অধিকার করে। তিলের নাড়ু এবং গুড়ের তৈরি মিষ্টি খাবার শীতের সময় শরীর গরম রাখে।
মহিলারা এই দিনে বিভিন্ন ব্রত পালন করেন। তিলের তৈল ও চন্দনের মিশ্রণে দেবতাদের পূজা করা হয়।
বাংলার বিভিন্ন স্থানে এই দিন মেলা আয়োজন করা হয়, যেখানে স্থানীয় লোকশিল্প, ✱হস্তশিল্প এবং খাবারের স্টল থাকে।

সমাজ এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন
মকর সংক্রান্তি বাঙালির সমাজ এবং সংস্কৃতির এক অপরিহার্য অংশ। এটি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং সকলের মিলনের এক অসাধারণ উপলক্ষ। সমাজের প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষ এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে,🌱 যা সামাজিক বন্ধনকে মজবুত করে।

আধুনিক প্রেক্ষাপটে মকর সংক্রান্তি
যদিও গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মকর সংক🗹্রান্তি পালনের রীতিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে, তবে এর মৌলিক রীতিনীতি আজও অক্ষুণ্ণ। শহরাঞ্চলে পিঠে-পুলির পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকারের ফাস্ট ফুড যোগ হলেও, মানুষ আজও এই দিনটিকে উদযাপন করতে ভোলেন না।

আধুনিক জীবনের ব্যস্ততার মাঝে🐼ও এই উৎসব আমাদের শিখিয়ে দেয় কীভাবে ঐতিহ্য ও সংস্ক✤ৃতিকে ভালোবাসতে হয়। মকর সংক্রান্তি তাই বাঙালির আত্মপরিচয়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

Link copied!