ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারত স্বাধীন হয় ১৯৪৭ সালে। এই উপমহাদেশে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়ে রাজ্যপাট গোটায় ব্রিটিশরা। তার ঠিক দশ বছর পর ভারতের সঙ্গে নতুন এক সংযোগ সূত্র তৈরি হয়ে ব্রিটেনের। না, ফের ব্রিটিশদের কবলে পড়েনি ভারত। ১৯৫৭ সালে লন্ডন থেকে কলকাতায় বাস সার্ভিস চালু হয়। যা পৃথিবীর ইতিহাসের দীর্ঘতম বাসযাত্রা হিসেবে পরিচিত।
ব্রিটিশ আমলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শ꧙হর চিল কলকাতা। একটা সময় পর্যন্ত ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল পূর্বভারতের সমৃদ্ধ এই শহরটি। সেটিই হয়তো লন্ডন টু কলকাতার বাস সার্ভিসের প্রেরণা ছিল। ১৯৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল ২০ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে লন্ডন থেকে একটি বাস ছাড়ে, যার নাম ‘ইন্ডিয়া ম্যান’। এটি কলকাতায় পৌঁছেছিল ৫ জুন। অর্থাৎ প্রায় ৫০ দিন পরে।
ইন্ডিয়া ম্যান ছিল রীতিমতো বিলাসবহুল বাস পরিষেবা। লন্ডন থেকে কলকাতার ဣটিকিটের মূল্য ছিল ৮৫ পাউন্ড। আর কলকাতা থেকে লন্ডনের টিকিটের দাম ছিল ৬৫ পাউন্ড। পরে অবশ্য ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। প্রথ𒁃ম ট্রিপে ১৩ জন কলকাতায় নেমে গেলেও সাত জন যাত্রী আবার ওই বাসেই লন্ডনে ফিরে যান।
আরও পড়ুন: ট্রেন উদ্বোধনে ‘জয় শ্রীরাম’ শুনে মঞ্চ🅰ে উঠলেন না মমতা
বাসটি ইংল্যান্ড থেকে বেলজিয়াম এবং সেখান থেকে পশ্চিম জার্মানি, অস্ট্রিয়া, যুগোস্লাভিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক, ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ করত। ভারতে প্রবেশের পর নয়াদিল্লি, আগ্রা, এলাহাবাদ, বারানসী হয়েই কলকাতায় পৌঁছাত। সেই স𒈔ময় এই যাত্রাপথ পরিচিত ছিল ‘হিপি রুট’ নামে। পথে তেহরান, সালজবার্গ, কাবুল, ইস্তানবুল এবং ভিয়েনায় কেনাকাটার অনুমতিও দেওয়া হতো যাত্রীদের।
পুরো যাত্রাপথে বাসটিকে প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রপথও পেরোতে হত জাহাজে করে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বাসটিতে যাত্রীꦯদের ঘুমানোর জন্য বাঙ্ক এবং ঠান্ডা থেকে বাঁচতে ছিল হিটারের ব্যবস্থা। ছিল একটি রান্নাঘরও।
তবে সার্ভিস চালর তিন ব♎ছর পর এই বাস পরিষেবাটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৬৮ সালের ৮ অক্টোবর এটি আবার চালু হয়। এবার সার্ভিসটির নাম দেওয়া হয় অ্যালবার্ট। এরপর টানা ৮ বছর এই সার্ভিস চালু ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯৭৬ সালে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায় এই বাস সার্ভিস।
কিন্তু কেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই সার্ভিস? জানা যায়, ইরানের রাজনৈতিক পরিবর্তন, ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত সংক্রান্ত জটিলতায় এই পথে ব☂াস চলাচল অনিরাপদ হয়ে ওঠে। ফলে চিরতরে বন্ধ হয়ে যায় পৃথিবীর দীর্ঘতম বাস রুটটি।