সাবলীল অভিনয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন সবখানেই। নাম তার সাদেক বাচ্চু। ঢাকাই সিনেমার সফলতম চরিত্রাভিনেতা। মাত্র আট বছর বয়সে অভিনয়ে আসেন তিনি। আজ এই গুনী অভিনেতাকে হারানোর দুই বছর। ২০২০ সালের এই দিন🌸ে মহামা♕রি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সাদেক বাচ্চুর আসল নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। মাধ্যমিক পাশ করার পরই বাবাকে হারান। অগত্যা ১৫ বছর বয়সেই বাবার পথ ধরে ডাকবিভাগের চাকরিতে যোগ দেন। সেই চাকরি তিনি ২𒁏০১৩ সাল পর্যন্ত করেছিলেন।
মাহবুব 🤪আহমেদ সাদেক থেকে সাদেক বাচ্চু নামটি আসে ১৯৯১ সালে। বেতারে তার প্রথম নাটক প্রচার হয় ১৯৬৩ সালে; নাম ‘খেলাঘর’। এরপর মঞ্চনাটক, টিভি নাটক অতঃপর সিনেমায় আসেন। ‘চাঁদনী’ সিনেমায় কাজ করার সময় নির্মাতা এহতেশাম তাকে এই নাম দেন। ওই সময়ে আরও অনেককেই স্ক্রিন-নেম দিয়েছিলেন এহতেশাম, যারা প্রত্যেকেই সফল। যেমন- শাবানা, শাবনাজ, শাবনূর প্রমুখ।
পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে চাকরিতে প্𝔉রবেশ করলেও সাদেক বাচ্চুর হৃদয়ে ছিল অভিনয়ের নেশা। জীবনের শেষ সময় অব্দি এই ভুবনেই স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে নিয়েছিলেন তিনি। বেতার ও মঞ্চে কাজের সুবাদে টেলিভিশনে সুযোগ পান সাদেক বাচ্চু। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম টিভি নাটক ‘প্রথম অঙ্গীকার’-এ অভিনয় করেন। এরপর তাকে প্রায় এক হাজার নাটকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ‘ঝুমকা’, ‘পূর্ব রাত্রি পূর্ব দিন’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘নকশী কাঁথার মা﷽ঠ’, ‘গ্রন্থিক গণ কহে’, ‘জোনাকী জ্বলে’ ইত্যাদি।
সাদেক বাচ্চু মূলত নায়ক হিসেবে সিনেমার পর্দায় আত্মপ্রকাশ কꦡরেন। সালটা ছিলো ১৯৮৫। ‘রামের সুমতি’ সিনেমায় নায়কের ভূমিকা𒆙য় অভিনয় করেন তিনি। এরপর আরও কয়েকটি সিনেমায় তাকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা গেছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি।
এরপর ‘সুখের সন্ধানে’ সিনেমায় খল চরিত্রে দেখা দেন এবং নজর কাড়েন। অল্প সময়েই তিনি নেতিবাচক চরিত্রের নির্𒐪ভরযোগ্য তারকায় পরিণত হন। তাই বলে নিজেকে ওই গণ্ডিতে আটকে রাখেননি সাদেক বাচ্চু। ইতিবাচক চরিত্রেও সমান দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে গেছেন তিনি।
সাদেক বাচ্চুর অভিনীত সিনেমার সংখ্যা প্রায় ৫০০। আশির দশক থেকে বর্তমান সময়ের প্রায় সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গেই কাজ করেছেন তিনি। তার অভিনীত কয়েকটি সিনেমা হলো- ‘সুজন সখি’, ‘ডিসকো ড্যান্সার’, ‘প্রিয়জন’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘লাল বাদশা’, ‘মরণ কামড়’, ‘বন্ধু যখন শত্রু’, ‘পিতা মাতার আমানত’, ‘কোটি টাকার কাবিন’, ‘আমার প্রাণেꦜর স্বামী’, ‘বধূবরণ’, ‘মায়ꦉের হাতে বেহেস্তের চাবি’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মায়ের চোখ’, ‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’, ‘জিদ্দি মামা’, ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘রাজাবাবু- দ্য পাওয়ার’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২’, ‘লাভ ম্যারেজ’, ‘আরও ভালোবাসবো তোমায়’, ‘বসগিরি’ ইত্যাদি।
কাজের পাল্লা ভারি হলেও সাদেক বাচ্চুর পুরস্কার ভাগ্য প্রসন্ন ছিলো না। কেবল একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে তার হাতে পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হয় ‘একটি সিনেমার গল্প’র꧟ জন্য।