দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘মব জাস্টিস’ বা ‘উত্তাল জনতার বিচার’ নামে সম্প্রতি যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হচ্ছে সেট🅠ি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ফোরামের 🔜সভাপতি আমজাদ হোসেন হৃদয় এবং সাধ🦩ারণ সম্পাদক ইমরান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয় আঙিনায় সংবিধানের পবিত্র বিধান এবং আইনানুগ বিচার ব্যꦜবস্থাকে অমর্যাদা করে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে জনগণ প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক হলেও রাষ্ট্রীয় আইন হাতে তুলে নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা কখনোই আইনসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য নয়।
এতে আরো বলা হয়, বর্তমানে ‘মব জাস্টিস’ বা ‘উত্তাল জনতার বিচার’ নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হচ্ছে, সেটি সরাসরি সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। সংবিধান, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন যা সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক। আমরা বিশ্বাস করি, এই সংবিধান শহীদের রক্তে রচিত হয়েছে। অতএব, সংবিধানের ভাবগাম্ভীর্য অম্লান রাখা আমাদে🅷র পবিত্র দায়িত্ব।
সংবিধানের কথা উল্লেখ কর꧅ে বিবৃতিতে বলা হয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৩১ যেন চলমান ‘মব জাস্টিস’ এর বিরুদ্ধে অভয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী ঢাল। ‘আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার’ শিরোনামে এই অনুচ্ছেদে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে, “আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোনো স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা💯 সম্পত্তির হানি ঘটে।
অর্থাৎ একজন ব্যক্তি যত বড় অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হোক না কেন, আইনের যথাবিহিত প্রক্রিয়া ব্যতীত অন্য কোনো উপায়ে তার বিচার ও শাস্তি প্রদান করা যাবে না। অপরদিকে, একজন ব্যক্তির ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, রাজনৈতিক মতবাদ এবং সামাজিক অবস্থান যাই হোক না কেন— “সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সম💮ান আশ্রয় লাভের অধিকারী।” এই অধিকার সংবিধানের অনুচ্ছেদ-২৭ নিশ্চিত করেছে।
কিন্তু ‘মব জাস্টিস’-এ আমরা এর বিপরীত চিত্র দেখতে পাই, যা আমাদের সংবিধান এবং রাষ্ট্রীয় অন্যান্য আইনের পরিপন্থি। তাছাড়া, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং বিচার বহির্ভূত শাসন-শোষণ নি💦র্মূল করা। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর ‘মব জাস্টিস’ নামে আইন ও বিচার বহির্ভূত সহিংসতা যেন স্বাধীন দেশে পরাধীনতার গ্লানি। এ🦩মনটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থিও, যা আমাদের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এতে আরও বলা হয়, দেশের এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মাহাত্ম্য রক্ষার্থে সবি নাগরিকের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছে। বিশেষ করে, শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আহ্বান জানাচ্ছে। এমন ঘটন💜ার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে লেখক ফোরাম।