• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, ৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


বাধা উপেক্ষা করে কুবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন

‘আমাদের আরও আগেই নামা উচিত ছিল’


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম
‘আমাদের আরও আগেই নামা উচিত ছিল’

দেশব্যাপী শিক্ষার্থী হত্যা, নিপীড়ন ও হয়রানির প্রতিবাদে কুমিল্লা ব꧒িশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানববন্ধন কর🦋েছেন।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বেলা পৌনে ১২টার দিকে☂ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই মানববন্ধন অনুষ♔্ঠিত হয়।

এর আগে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসার সময় সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের শিক্ষকদের বাধা দেন। তবুও বাধা উপেক্ষ🌸া করে ছয়জন শিক্ষক ক্যাম্পাসে এসে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা হলেন- বাংলা বিভা𒁏গের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শিলা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, ফার্মাসি বিভাগের শিক্ষক জয় রাজবংশী, বাংলা বিভাগের প্রভাষক গোলাম মাহমুদ পাভেল।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন বলেন, “আমরা আজকে সবাই এখানে দাঁড়িয়েছি একটা বিচারহীন রাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য। শুধুমাত্র নিজের মৌলিক অধিকার চাইতে গিয়ে যেভাবে শত শত শিক্ষার্থী, সাধারণ জনগণ সেখানে শিশু, কিশোর, তরুণ, যুবক তাদেরকে মেরে ফেলা হয়েছে সেটা গণহত্যা। এই গণহত্যার মধ্যে দিয়ে যা করা হয়েছে সেটি একবারে নিজের যে ক্ষমতা সেটির চর্চা। যেটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমি এই নির্মম গণহত্যার বিচার চাই এব🉐ং তীব্র প্রতিবাদ করছি।“

ড.🔯 শামীমা বলেন, “এখন আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন আমি কার কাছে বিচার চাচ্ছি। আমি রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে বিচার চাই না। কারণ এই যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এটার সঙ্গে রাষ্ট্র প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আমি বিচারকের কাছেও বিচার চাইতে যাব না। আমি বিচার চাই আমার দেশের সাধারণ জনগণের কাছে, তারা দেখেছেন, তারা দেখছেন, দেখবেন এবং অবশ্যই তারা এর বিচার ✨করবেন।”

ড. শামীমা আরও বলেন, “এই বিচারবিহীন রাজনীতি এবং হত্যাযজ্ঞের বিপরীতে ⛦আমাদের দাঁড়াতে হবে। হয়ত আমাদের ক্ষতি হতে পারে কিন্তু যা হবার হয়ে গেছে।🔴 আমরা সকলে দাঁড়াব একে একে দাঁড়াব, দুইয়ে দুইয়ে দাঁড়াব, দশে দশে দাঁড়াব।”

গত ১৮ জুলাই কোটবাড়ী বিশ্বরোডে পুলিশের গুলিতে আহত হন বাংলা বিভ♚াগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শিলার ছেলে সারাফ সামির জামান।

ড. কামরুন নাহার শিলা বলেন, “আমার সন্তানও আহত হয়েছে আমি সেই কারণে আসিনি। শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের ওপর যে নিপীড়ন, শিক্ষার্থীদের হত্যা এই বিষয়ে সকল শিক্ষকদের মতো আমিও মর্মাহত ছিলাম। আমাদের আরও আগেই নামা উচিত ছিল। আমরা আসলে লজ্জিত। আমার ছেলে আহত হয়েছে। আমার ছেলে মারাও যেতে পারত। সেদিন বুঝতে পেরেছি এত এত শিক্ষার্থীদের পরিবার কী মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে আছে। আমার ছেলে ছোট তাকে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। আমরা দেখেছি নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর কীভাবে টার্গেট করে গুলি 𒁃করা হয়েছে। এই যে একটা নৈরাজ্য অবস্থা তৈরি হয়েছে তার দ্রুত নিরসন চাই আমরা।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবℱাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হল ভূঁইয়া বলেন, “কর্মসূচিটি বেলা ১১টায় করার কথা থাকলেও আমরা করতে পারিনি। আমাদের ꦕঅনেক সহকর্মীকে আটকে দেওয়া হয়েছে। তারা শিক্ষক পরিচয় দিয়েও তাদের কর্মস্থলে আসতে পারেননি। প্রক্টরকে জানানো হলেও আসতে দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না? তারা কারা? তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের ক্যাম্পাসে কেন আসতে পারবেন না? আমরা কোন ব্যবস্থার মধ্যে বাস করছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না? আমি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করি, যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার দায়িত্ব জড়িত, আমার কাজ জড়িত, আমার ইমোশন জড়িত, আমার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হচ্ছে। আমরা কেন আসতে পারব না?”

সরেজমিনে দেখা যায়, পলিটেকনিক মোড়, ক্যাডেট কলেজ মোড় ও আনসার ক্যাম্পের সামনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব ধরꦡনের যাꦡনবাহনে তল্লাশি করছেন। যারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিমুখে যেতে চাইছেন তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র, শটগানসহ নানা অস্ত্র দেখা যায়।

আনসার ক্যাম্পের মোড়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. আমিনুল ইসলাম টুটুল নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করছেন। ক্যাডেট কলেজ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলা পরি👍ষদের ভাইস চেয়ারম⭕্যান আহমেদ নিয়াজ পাবেল নেতাকর্মীদের নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

এ বিষয়ে আহমেদ নিয়াজ প🍎াবেল জানান, কোনো শিক্ষককে তার🌠া ফিরিয়ে দেননি। জামায়াত-বিএনপি যেন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য তারা মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন।

🉐গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা কোটবাড়িতে আসার পর কয়েকজন মানুষ আমাদের পথরোধ করে। আমরা শিক্ষক পরিচয় দিলেও নমনীয় হয়নি। আমাদের শহরের দিকে চলে যেতে বলে। তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করার পরও বলেনি। আমরা প্রক্টরকে জানিয়েছি, রেজিস্টারকে জানিয়েছি। দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো পুলিশ বা কারও থেকে কোনো সাহায্য আসেনি। আমাদের বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।”

কুমিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, “একজন শিক্ষক জানিয়েছিলেন যে উনি আসতে পারছিলেন না। সঙ্গে সঙ্গে আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জান🦩িয়েছি। প্রক্টরিয়াল বডির দায়িত্ব ক্যাম্পাসের꧅ ভেতরে। বাইরে যদি কোনো ঘটনা ঘটে সেটার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করতে হয়। সেটা আমরা করেছি।”

সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর ভূইয়া বলেন, “সরকার দলীয় লোকেরা শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বাধা দিচ্ছে এই ব্যাপারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি একটু আ𒅌গে ঘুরে আসলাম এমন কিছু লক্ষ💛্য করি নাই।”

Link copied!