ফরিদপুর জেলা শহরের একটি ছাত্রী হোস্টেলের বোর্ডারসহ বিভিন্নজনের কাꦍছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে ওই হোস্টেলের পরিচালিকা। জেলা শহরের ঝিলটুলী মহল্লার ডায়াবেটিক অ♊্যাসোসিয়েশন হাসপাতালের সামনে অবস্থিত আফসানা ছাত্রী হোস্টেলে এ ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) ভোরে হঠাৎ একটি হলুদ পিকআপ ও দুটি ভ্যান যোগে তার পর𓄧িবারের সব মালাম🍰াল নিয়ে উধাও হয়ে যান ওই মেসের পরিচালিকা আফসানা মীম।
♌এ ঘটনায় ফরিদপুরের কোতোয়া🍨লি থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে ঝিলটুলীর সুফিয়া বেগমের মালিকানাধীন ১১ তলাবিশিষ্ট রহমত টাওয়ারের ছয়টি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ‘আফসানা ছাত্রী হোস্টেল’ নামে ওই মেসটি চালু করেন মধুখালি উপজেলার আড়পাড়া গ্র📖ামের মামুন মোল্লার মেয়ে আফসানা মীম।
৬টি ফ্লাটের বিভিন্ন কক্ষে প্রায় ১২০ জন ছাত্রী বোর্ডার রয়েছেন। একই বিল্ডিংয়ের আরেকটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্বামী ইমাꦇমুজ্জামান মিয়া ওরফে সাব্বিরকে নিয়ে সপরিবারে সেখানে থাকতেন তিনি। মাত্র ১৫ দিন আগে শহরের একটি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি কন্যা♕ সন্তান জন্ম দেন মীম।
হোস্টেলের বোর্ডাররা জানান, বুধবার ভোরে হঠাৎ একটি হলুদ পিকআপ ও দুটি ভ্যান যোগ♎ে তার পরিবারের সব মালামাল নিয়ে উধাও হয়ে যান মীম। তার আগে মঙ্গলꦦবার রাতে মীম ওই হোস্টেলের সকল ছাত্রীদের কারো কাছ থেকে ১ হাজার, আবার কারো কাছ থেকে ২ হাজার টাকা করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। তারপর ভোরের দিকে লাপাত্তা হয়ে যায় বলে জানান হোস্টেলের ছাত্রীরা।
একাধিক ছাত্রী বলেন, অনলাইন জ𒁏ুয়ায় আসক্ত হয়ে মীম প্রায় ৫০ লাখ টাকা দেনা হয়ে পড়েন। তিনি ব🌸িভিন্ন সময়ে আমাদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন।
তারা বলেন, “এ হোস্টেলের অনেক ছাত্রী চলে গেছেন𒊎। অনেকে এক মাস সময় চেয়েছেন। এখন আমরা খেয়ে না খেয়ে আছি। অনেকের পরীক্ষা চলছে। সবাই খুব বিপদে আছে। এমনকি হোস্টেলের রান্নার পরিচারিকার থেকেও ২৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছ꧂েন তিনি।”
এ বিষয়ে ছাত্রী হোস্টেলের বিল্ডিং মালিক সুফিয়া বেগমের ছেলে মো. রফিক বলেন, “বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) তার বাড়ির ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল। তার আগে বুধবার খুব ভোরে কাꦰউকে কিছু না বলে পিকআপে মালামাল নিয়ে উধাও হন আফসানা মীম। দুপুরে একে একে পাওনাদারদের ফোনে জানতে পারি এসব।”
তিনি বলেন, “৬টি ফ্লাটের প্রতিটির ভাড়া ২০ হাজার ট🃏াকা করে। ২ মাসের ভাড়া বকেয়া রয়েছে। বিদ্যুৎ বিলও বকেয়া রেখেছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এ বিষয়ে আমরা আইনগত ব꧑্যবস্থা নেব “
রফিক বলেন, “এ অবস্থায় হোস্টেলের ছাত্রীদের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হওয়নি। তারা এখানে নি༺রাপদেই আছে। তাদের সময় দেওয়া হয়েছে। ”
তিনি আরও বলেন, “অনেকেই মীমের কাছে টাকা পায় বলে জানতে পারছি। এসব পাওনাদারেরা এখন আমাদের ফোন দিয়ে মীমের কাছে তাদের টাকা𒉰 পাওনার কথা জানাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত যা খবর এসেছে তাতে মীম প্রায় ৩০ লাখ টাকা দেনা 🐼রয়েছেন বিভিন্নজনের কাছে।”
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই হোস্টেলে গেলে তখন সেখানে উপꦑস্থিত হন আফসানা মীমের আপন ফুপু শাহানা বেগম। তিনি মধুখালি থেকে ভাতিজির সঙ্গে দেখা করতে এসে রুꦯমে তালা দেওয়া দেখেন।
শাহানা বলেন, “গত সেপ্টেꦰম্বর মাসের ১৭ তারিখে আমার মেয়ে আশার কাছ থꦺেকে ৩ লাখ টাকা ধার নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দিবে বলে জানায় মীম। আজ এক মাসের বেশি হলো টাকা দিচ্ছে না। আজ তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।”
তবে হোস্টেল ফেলে মীম পালিয়েছে এ কথা জেনে হাউ🌟মাউ করে কেঁদে উঠেন শাহানা বেগম।&nbs𝕴p;
তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ꧂“মেয়ের জামাই জমি কিনতে সিঙ্গাপুর থেকে টাকা পাঠাইছে। মীমকে সেই টাকা কাউকে না জানিয়ে ধার দিছি। এ কথা জামাই জানলে মেয়ের সংসার থাকবে না।”
এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই হোস্টেলের সামনের বিকাশের দোকানি মো. নিশাদ পাল। তিনি বলেন, “আমার দোকানের বিকাশ নম্বর থেকে মীম টাকা লেনদেন করতেন। গত ২১ অক্টোবর মীম বিকাশের মাধ্ꦬযমে ৪০ হাজার টাকা নেন এবং ২২ তারিখে নগদ ৩০ হাজার টাকা নেন। বৃহস্পতিবারও তার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার সকালে তার পালিয়ে যাওয়ার কথা শুনে আমার মাথায় হাত পড়েছে।”
পাশের আরেক বিকাশ ও লোড ব্যবসায়ী কাজী র🧜াজু বলেন, ২২ অক্টোবর সকালে আমার কাছ থেকে নগদ ২ লাখ ২০ হাজ♈ার টাকা ঋণ নিয়ে রাতেই ফেরত দিবেন বলে জানিয়েছিলো মীম। সকালে শুনি তিনি চম্পট দিয়েছেন। আমিও পুলিশের শরণাপন্ন হবো।
হোস্টেলের ছাত্রীরা জানান, প্রতি সিট ৪ হাজার টাকা করে ভাড়া ☂দিতে হয় এ হোস্টেলে। গত ২ মাস ধরে এ হোস্টেলে কোনো কিছুরই ঠিক নাই। গ্যাসের দোকানে ৭০ হাজার টাকা বাকি। তারা আর গ্যাস দেন না। বাসায় কুকারে রান্না করা হয়। আবার ঠিক মতো রান্না করাও হয় না।
মীমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, “আফসানা ছাত্রী হোস্টেলের পরিচালিকা আফসানা মীমের উধাও হওয়ার ঘটনায় ওই বিল্ডিংয়ের মালিকের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পജেয়েছি। মীম তাদের ২ মাসের ভাড়া না দিয়ে চলে গেছেন। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”