কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জিহাদ হোসেনকে (২৫) হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। ছেলের ছবি বুকে চেপে অনবরত কেঁদেই চলছেন ম🦄া। পাগলপ্রায় বাবা। ছোট ভাইকে হারিয়ে আর্তনাদ করছেন বড় ভাই ও দুই বোন।
জিহাদ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা সদরের মোল্লা পট্টি এলাকার নুরুল আমিন মোল্লা (৫৭) ও শাহিনুর বেগম (৫২) দম্পতির ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জিহাদ সবার ছোট। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কোনাপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থেকে সরকারি কবি নজরুল 🌸কলেজে ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত ছিলেন জিহাদ।
সরেজমিনে জিহাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা শাহিনুর বেগম ছোট ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। প্রিয় সন্তানের ছবি বুকে জড়িয়ে অসহায়ের মতো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন। জিহাদকে হারিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তার বাবা নুরুল আমিন। শোকে বাকরুদ্ধ বড় ভাই জিন্নাত হোসেন (২৯) এবং দুই বোন জান্নাতুল (৩৪) ও জয়নব (৩০)। তাকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন ছিল পরিবারের সবার। তার এমন মৃত্যুতে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে পরিবার𝓡টির ওপর। শোকের ছায়া স্বজন ও প্রতিবেশীদের চোখে মুখেও।
প্রত্যক্ষদর্শী সহপাঠী বন্ধু, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,ꦓ গত ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় দনিয়া কলেজ ও কাজলা ফুটওভার ব্রিজের মাঝামাঝি রাস্তায় বুকের ডান পাঁজরে গুলিবিদ্ধ হন জিহাদ। গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠী ও বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে ওই এলাকার সালমান হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ কর✤েন। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণ পর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জিহাদ।
ঢামেক হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আবৃত🗹 কফিনে জিহাদের মরদেহ উপজেলা সদরের মোল্লাপট্টি এলাকায় নিজ বাসভবনের সামনে এসে পৌঁছায়।
পরে ২১ জুলাই ভোরে দশমিনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় বিভিন্ন শ্র🌌েণি পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জিহাদ দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও রাজধানীর ওয়ারী এলাকা𝔍য় স্যার সলিমুল্লাহ কলেজ থেকে ২০১৮ সালে এইচএসসি শেষ করে সরকারি কবি নজরুল কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই কলেজে ওই বিষয়ে &nb🌱sp;স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন।
চোখের পানি মুছতে মুছতে জিহাদের বাবা নুরুল আমিন মোল্লা বলেন, “আমার জিহাদ মেধাবী ছিল। কেমনে কী হয়ে গেলো জানি না। আম꧋ার ছেলেকে যারা খুন ক🎶রেছে আমি তাদের বিচারের দাবি জানাই।”
কান্না জড়িত কণ্ঠে মা শাহিনুর বেগম বলেন, “আমার মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়। আপ🧸নারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।”