• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩০, ১৫ রজব ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


পুরান ঢাকায় কমেছে সাকরাইনের আমেজ


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
পুরান ঢাকায় কমেছে সাকরাইনের আমেজ

আনন্দ উৎসবে টইটম্বুর পুরান ঢাকার অন্যতম উৎসব সাকরাইন। কেউ কেউ এটিকে পৌষ সংক্রান্তিও 𒈔বলে থাকেন। প্রতি বছর ১৪ জানুয়ারি পুরান ঢাকায় পালিত হয় এই সাকরাইন উৎসব। ১২ মাসে ১৩ পার্বণের দেশে এই পৌষ মাসের শেষ দিনটি আকাশে ঘুড়ি আর ঝলকানি আলোর মধ্য দিয়ে পার করেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। তবে এবছর তেমন এই উৎসবের আমেজ নেই।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সাকরাইনকে উপলক্ষে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শাঁখারীবাজার, তাঁতিবাজার, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, গেণ্ডা🥃রিয়া🎶, লালবাগ ও এর আশপাশের এলাকাগুলো সাকরাইন উৎসব ঘিরে বিভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে। বেশির ভাগ বাসার ছাদে সাউন্ড-সিস্টেম, আলোকসজ্জা ও লাইটিং করা হয়েছে।

দিনের শুরু থেকেই পুরান ঢাকার বাড়িতে বাড়িতে চলে পিঠা বানানোর ধুম। পরিবারের সকলেই সেদিন আনন্দে উচ্ছাসিত থাকেন। দাওয়াত দেওয়া হয় আত💃্🎉মীয় স্বজনদের।

সারা দিন এসব এলাকায় আকাশে রঙ-বেরঙের ঘুড়ি ওড়ে। ছাদে কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। অধিকাংশ সময়ে ঘুড়ি কাটা🔯কাটি প্রতিযোগিতা চলে। একজন অপরজনের ঘুড়ি কাটার প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন।

বাসার ๊ছাদে ঘুড়ি উড়াচ্ছিল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সবুজ। বিকেল পর্যন্ত সে ৩ট💖ি ঘুড়ি কেটেছে। অন্যরাও তার ঘুড়ি কেটেছে কয়েকবার। এবারের ঘুড়ি উৎসবের জন্য সে ২০টি ঘুড়ি কিনেছে। বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি চারবুয়া বা কাউটা, টানা চোখ, গোল চোখ, মৌসুমী, লাভ, লাইলাসহ তেলেঙ্গা পতেঙ্গা বাক্স, হারিকেন, চঙ্গা, হাফফা তার পছন্দের ঘুড়ি।

ছেলে-মেয়েদের ঘুড়ি ওড়ানোর আবদারে ধূপখোলা মাঠে এসেছেন লিটন মিয়া। তিনি পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা। কাজের ফাঁকে সময় বের করে তিনি সন্তানদের নিয়ে মাঠে এসেছেন। তিনি বলেন, “ছোটবেলায় সাকরাইন উৎসবে আমিও ঘুড়ি উড়াতাম। ঘুড়ি কাটাকাটিতে সবচেয়ে মজা। এখন কাজের চাপে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। ছেলে-মেয়েꦑদের আবদারে ওদের এখানে নিয়ে আসা।”

পুরান বিভিন্ন গলির দোকানগুলোতে ঘুড়ি পাওয়া গেলেও সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় শাঁখারীবাজারে। দোকানগুলোতে সাজানো হয়েছে নানা রং, আকৃতি ও নকশার ঘুড়ি-লাটাই-সুতা দিয়ে। ক🍸্রেতারা আসছেন দেখছেন আর পছন্দ হলেই দামাদামি করে কিনছেন। কিন্তু দোকানিরা বলছেন বিগত বছরের তুলনায় এবার বিক🐼্রি কম হচ্ছে।

শাঁখারী বাজারের বিক্রেতারা বলেন, চারবুয়া বা কাউটা, টানা চোখ, গোল চোখ, মৌসুমী, লাভ, লাইলাসহ বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি এসেছে।🐲 ৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় এসব ঘুড়ি।

এছাড়া๊ বিভিন্ন ধরনের সুতা ও লাটাই রয়েছে। আকৃতিভেদে লাটাইয়ের দামেও রয়েছে ভিন্নতা। সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ৮০০ টাকার দামেও বিক্রি হচ্ছে। মোটা-চিকনভেদে বিক্রি হচ্ছে নানা রংয়ের সুতা। সর্বনিম্ন ৭০ থেকে ১০০০ টাকা দামের সুতাও এসেছে। বিক্রেতারা এসব সাজিয়ে রেখেছেন দোকানে। তবে তেমন বিক্রি না হওয়ায় হত🥂াশ তারা।

শাঁখারী বাজারের গোপাল স্টোরের মালিক সুজিত কর বলেন, “আগের তুলনায় এবার বিꦍক্রি কম। কয়েক হাজার ঘুড়ি অর্ডার দিয়েছিলাম। যা এসেছে তার অর্ধেকও বিক্রি হয়নি। আগের মতো ছেলেরা সাকরাইনে ঘুড়ি উড়ায় না। এরা গান বাজায়। বাজি ফুটায়। এবার সেটাও কম।”

সুজিত আরও বলেন, “সাকরাইনের সঙ্গে পঞ্জিকার একটা পার্থক্য তৈরি হয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি পঞ্জিকার একদিন আগে বা প🔯রে হয়💟 সাকরাইন। এই দ্বিধার কারণেই এবার সাকরাইনের আমেজ কম।”

ঢাকাবাসী সংগঠনের সভাপতি শুকুর সালেক বলেন, “সাকরাইন মূলত একটি পারিবারিক উৎসব। সবাই পরিবারের সঙ্গে পিঠাপুলি আর ঘুড়ি উড়িয়ে এ উৎসব পালন করে। কিন্তু ডিজে পার্টি উচ্চ স্বরে গান বাজানো এটা আমাদের কালচার না। মুড়ি, খই, বাতাসা, মিষ্টি খাওয়া। একে অপরকে দাওয়াত দেওয়া এটাই আমাদের উৎসবের অনুষঙ্গ। সাকরাইনের নাম🧸ে অপসংস্কৃতি সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।”

উল💟্লেখ্য, প্রায় দুই হাজার বছর আগে চীনে প্রথম ঘুড়ির উৎপত্তি। ইউরোপ বা আমেরিকায় ঘুড়ি ওড়ানোর রেওꦺয়াজ থাকলেও মূলত চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভারত আর বাংলাদেশের মতো এশিয়ার দেশগুলোতেই এই ঘুড়ি খেলার জনপ্রিয়তা বেশি।

Link copied!