• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


নীললোহিত, মানে ভালোবাসার জন্মদিনে...


গৌতম মিত্র
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২, ০৭:৫৪ পিএম
নীললোহিত, মানে ভালোবাসার জন্মদিনে...

১৯৬৬-তে লেখা এই সেই চিঠি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বাতীকে লেখা প্রথম প্রেমপত্র। সুনীলের বয়স তখন ৩২! স্বাতীর বয়স ২৪! বিয়ে হবে পরের বছর। কী লিখছেন সেই চিঠিতে? লিখছেন :
“যে-কথাটা বলার প্রবল ইচ্ছে নিয়ে ঘুরেছি এ ক’দিন, অথচ মুখ ফুটে বলতে পারিনি, বলার সাহস হয়নি, সেদিন সন্ধ্যাবেলা যখন হঠাৎ বলে ফেললুম,  হাঁটুর ওপর মুখ রেখে তুমি যখন আস্তে বললে ‘হ্যাঁ’, সেই মুহূর্তে আমার জীবনটা বদলে গেল। আমি তোমাকে চাই, তোমাকে চাই, তোমাকে চাই— তোমাকে হারাবার ক্ষতি কিছুতে আমি সহ্য করতে পারবো না—এই কথাটা প্রবলভাবে দাবি করতে চেয়েছিলুম, কিন্তু ভয় ছিল যদি এ আমার স্বার্থপরতা হয়, তাছাড়া, আমি তোমাকে চাই, তুমি যদি আমাকে না চাও? সত্যিই, স্বাতী, সত্যিই তুমি আমার হবে, এবং আমি তেমার হবো? আমি তো তোমার হয়েই আছি।’...
আর পরবর্তীকালে স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায় লিখছেন:
নীললোহিত যে রকম মানুষ, তাতে তার কোনও স্ত্রী থাকা সম্ভব নয়। বোধ হয় উচিতও নয়।...
তো, নীললোহিত হলো সেই ছেলেটা। তাকে বিয়ে করে ঘর করতে পারবে না কোনও মেয়ে। আর দুঃসাহস করে কেউ যদি সে-কাজ করেও তাকে ঠকতে হবে। আমি কি ঠকেছি? উত্তরে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’ দুই-ই বলতে হয় আমায়। আসলে আমি তো ঠকতেই চেয়েছিলাম (যদি অবশ্য তাকে ঠকা বলে)। নইলে কী দায় পড়েছিল দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত বাড়ির এক মেয়ের দমদমের কলোনি অবধি গিয়ে ‘কৃত্তিবাস’ সংগ্রহ করার? কী দরকার ছিল বিলেত-ফেরত সব পাণিপ্রার্থীদের বাতিল করে, একদম জিদ ধরে থাকার যে, বিয়ে করলে ওকেই আমি করব।
সুনীল অবশ্য আমায় নিরস্ত করার চেষ্টা করেছিল— “আমরা উদ্বাস্তু, আমরা খুব সাধারণ, তোমার খুব কষ্ট হবে...।”
আমি তখন ওর কোনও কথা শুনতে পেতাম না। ওর কথার ভিতরে যে না-বলা কথাগুলো কবিতা হয়ে বেরিয়ে আসত, সেগুলোই তখন আমার অন্ধকারের টর্চ। 
“ভ্রূ-পল্লবে ডাক দিলে দেখা হবে চন্দনের বনে
সুগন্ধের সঙ্গ পাবো দ্বিপ্রহরের বিজন ছায়ায়
আহা কী শীতল স্পর্শ হৃদয় ললাটে, আহা চন্দন, চন্দন 
দৃষ্টিতে কি শান্তি দিলে, চন্দন, চন্দন... 
ক্ষণিক ললাট ছুঁয়ে উপহার দাও সেই অলৌকিক ক্ষণ 
তুমি কি অমল-তরু, স্নিগ্ধজ্যোতি, চন্দন, চন্দন…”
পড়ে আমার তো তখন পাগল-পাগল অবস্থা। মনে হয়েছিল এ আমার জন্যই লেখা, গভীর গভীরতম বনে আমাকেই সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চাইছে লোকটা। সেই লোকটাই আমার কাছে নীললোহিত, যার সঙ্গে আমি চাইলে গাছতলাতেও থাকতে পারতাম।...
 

আজ নীললোহিতের মানে ভালোবাসার জন্মদিন।

Link copied!