• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


দুর্নীতির দুষ্টচক্র ভাঙবে কী করে?


তানিয়া কামরুন নাহার
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম
দুর্নীতির দুষ্টচক্র ভাঙবে কী করে?

দুর্নীতি বিরুদ্ধে কাজ করতে হলে কোন প্রান্ত থেকে আসলে আগে কাজ করতে হবে? ভেবে ভেবে কূল পাওয়া যায় না। রাজনৈতিক বড় বড় নেতা বলেন, আমলা বলেন কিংবা একদম সাধারণ পর্যায়ের নাগরিক, তাদের মধ্যে অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত, কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। দেশে এখন প্রায় দুহাজারের মতো কোটিপতিই রয়েছেন এবং অস্বাভাবিকভাবে তাদের আয় বাড়ছে। তাও এগুলো তাদের প্রদর্শিত আয় বলꦓেই কিছুটা জানা যাচ্ছে। অপ্রদর্শিত আয়ের খবর তো জানা সম্ভবই নয়, বিশেষত সেগুলো যদি অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়।

কেউ কেউ বলেন, এমন দুর্নীতিবাজদের সংখ্যা অনেক কম। হ্যাঁ, হতে পারে কম, কিন্তু এই কম সংখ্যক দুর্নীতিবাজেরাই যে🐼 রাতারাতি বিপুল অর্থের মালিক বনে যান, তা অনেক দেশের জিডিপির সমান। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ দুর্নীতি করলেও আর কতখানিই বা তার পরিধি? সে তো হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে না। কিন্তু প্রায় ২০ কোটি মানুষের সম্মিলিত দুর্নীতিই বা কোন অংশে কম কিসে? যদিও তাদের অর্থ বিদেশে পাচার হয় না।

এখন কথা হচ্ছে, এই দুর্নীতির অর্থ আসে কোথা থেকে? পাঁচ টাকার বিস্কুট কিনলেও একজন কৃষক, একজন শ্রমিক, একজন রিকশাওয়ালাকে কিন্তু ভ্যাট দিতে হয়। সেই ভ্যাট, আপনার আমার দেওয়া ট্যাক্স আর প্রবাসীদের রেমিট্যান্স থেকেই দুর্নীতিবাজ ও তাদের পরিবারের চৌদ্দ পুরুষের এত বিলাসী জীবন! তাদের হম্বিতম্বি আর ফাঁপরেও উল্টো আপনাকেই চিমসে থাকতে হচ্ছে।

দুর্নীতির সাথে আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে জড়িত। যেমন ধরুন, পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর কিছু টাকা পুলিশকে দেওয়া আমরা অলিখিত নিয়ম বানিয়ে ফেলেছি। এই রকম আরও বহু উদাহরণ রয়েছে। আজ চাইলেও ব🦩্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও এর বাইর যেতে পারবো না। কিন্তু এসব অনিয়ম কিন্তু দিনের পর দিন আপনি আমি দেখে আসছি, এগুলোকেই নিয়ম হিসেবে মেনে আসছি, ভবিষ্যতেও মেনে যাবো। দুর্নীতিকে এখন অনেকে অপরাধ হিসেবেও গণ্য করছে না। দেখাদেখি করে পরীক্ষা দেওয়া কিংবা আগের দিন ফাঁস হ൩ওয়া উত্তর শিখে এসে পরীক্ষা দেওয়াকে তো এখন শিশুরাই কোনো অন্যায় বা অপরাধ বলে মনে করে না। যেন রক্তে মিশে আছে দুর্নীতির সব ছলাকলা।

তাহলে এই দুষ্টচক্র ভাঙবে কী করে? দীর্꧑ঘসূত্রতার জটিল আইনি প্রক্রিয়াও তার নিজস্ব গতিতে সব সময় চলতে পারে না। সর্ষের মধ্যেই যেখানে ভূত দ্রবীভূত হয়ে আছে, সেখানে দুষ্টচক্র আরও মজবুত আকার ধারণ করার কথা এবং তাই হয়েছে।

যদি বলেন, 🍎ধর্ম চর্চার মাধ্যমে দুর্নীতি দূর করার কথা, তবে দেখুন—হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিবাজরাই আরও বেশি ধার্মিক সেজে হজ্জ করছে, আবার ধর্মীয় নীতিবাক্যের বুলি ছাড়ছে। আল্লাহর রাস্তায় তাদের খরচ করা টাকায় সাধারণ মানুষও দুষ্টচক্রের খাঁচায় আবদ্ধ হয়ে যান🌞। 

তাহলে কি এ দুষ্টচক্র✨ের খাঁচাতেই আমাদের বাস করতে হবে?

এসব প্রশ্নের উত্তর আপনাদের মতো আমিও জানি না। কিন্তু না জানাটাই তো শেষ কথা নয়। উত্তর কিন্তু খুঁজতে হবে, সম্মিলিতভাবেই খুঁজতে হবে। কিন্তু দুর্নীতির প্রশ্নে এই সম্মিলিত হওয়ারও উপায় জানা নেই। কারণ, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ বলে আফসোস করলেও, এখন আর কারও পক্ষে এক হওয়াটা সꦉম্ভব হচ্ছে না। এত বেশি দ্বন্দ্ব, রেষারেষি, মানুষে মানুষে হিংসা, ঘৃণা আর স্বার্থের চর্চা, এভাবে এক হওয়া স্বপ্নেই হয়তো সম্ভব হবে।

আকবর আলি খানের আত্মজীবনীতে পড়লাম, মুক্তিযুদ্ধের সময়েও মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তেন। তবে সেই খোটখাটো দ্বন্দ্ব ছাপিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঠিকই👍 বিজয় ছিন♍িয়ে এনেছিলেন।

প্রত্যেক নাগরিকই দুর্নীতির খাঁচা 🐼থেকে মুক্ত হতে চান। এই চাওয়া, এই মুক্তির প্রত্যাশা থেকে একদিন নিশ্চয়ই সবাই সব ভেদাভেদ ভুলে সম্মিলিত হবেন; দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন এবং এই দুষ্টচক্র থেকে বের হয়ে আসবেন। সেই সুদিনের আশাতেই পথ চেয়ে রইলাম। 

Link copied!