উপকূলীয়🗹 এলাকায় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন, টর্নেডোসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বছরের বিভিন্ন সময়ে আঘাত হানে। এতে ঘরবাড়ি, ফসল ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি ไহয়। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল এমনি এক প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে যায় উপকূলীয় এলাকা। প্রাণ হারায় প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ।
সেই ভয়াবহতার পরেই উপকূল সুরক্ষার উদ্যোগ হিসেবে প্যারাবন সৃজন করে উপকূলীয় বন বিভাগ, যা কয়েক দশকে প্রাকৃতিক ধ্বংসযজ্ঞ অনেকটা কমিয়ে আনে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আগের চেয়ে আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে উপকূলে নতুন নতুন বন সৃজন বা সম্প্রসারিত করার কথা থাকলেও উপকূলের রক্ষাকবজ সেই প্যারাবন🧸 ধ্বংস কর🤡া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, কয়েক বছর ধরেই কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া ও ঘট🔯িভাঙা উপকূলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) অধীনে থাকা প্যারাবন দখౠল করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করা প্যারাবনের বাইন ও কেওড়াগাছ কেটে চিংড়িঘের ও লবণ উৎপাদনের মাঠ তৈরি করছেন। শুধু তা-ই নয়, লবণ মাঠ তৈরির জন্য প্যারাবন দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ২ মার্চের সেই ঘটনায় দুই ব্যক্তি নিহত ও অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে এত কিছুর পরেও প্যারাবন দখল থেমে নেই।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’-এর কক্সবাজার জেলা সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অন্তত দুই হাজার একর প্যারাবন ধ্বংস করা হয়েছে কয়েক মাসেই। কেটে꧋ ফেলা হয়েছে অন্তত দুই লাখের বেশি বাইন ও কেওড়াগাছ। প্যারাবন কেটে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট-বড় ৪৫টির বেশি চিংড়িঘের এবং অনেক লবণের মাঠ।
ভয়াল ২৯ এপ্রিল স্মরণ ও নির্বিচার প্যারাবন নিধনের প্রতিবাদে গত ২৬ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে মানিক মিয়া মিল🌃নায়তনে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ছোটকাগজ ‘প্রতিবুদ্ধিজীবী’ ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘এডুসেন্ট্রিক’। এতে অংশ নেন কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, ভাষাবিদ ড. মোহাম্মদ আবদুল হাই, এডুসেন্ট্রিকের চেয়ারম্যান এম রেজাউল করিম রেজা, প্রকাশক মিনহাজ উদ্দিন মিরান, প্রতিবুদ্ধিজীবীর সম্পাদক সাদাত উল্লাহ খান, সাংবাদিক মাহবুব 🐷কামাল, রাজনৈতিক এক্টিভিস্ট আতাউল্লাহ, সমাজকর্মী জসিম কাতাবি, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন, সমাজ নৃগবেষক নির্বান পাল, ঢাকাস্থ মহেশখালী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, যেভাবে প্যারাবন নিধন চলছে তাতে আগামী ২০-৩০ বছর পর মহেশখালী থাকবে কি না, সন্দেহ হয়। সেই ধ্বংসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যেকোনো মূল্যে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। বক্তারা আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেকোনো উপায়ে উপকূলীয় বন রক্ষা করতে হবে। না হলে চরম ঝুঁকির মুখেꦺ পড়বে উপকূল।
প্রসঙ্গত, দেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে নিহতের স🌜ংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি ছিল। যা উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে। ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় উপকূল। এতে যে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয় তাদের বেশির ভাগই প্রাণ হারায় সন্দ্বীপ, মহেশখালী, হাতিয়া দ্বীপে। শুধু সন্দ্বীপেই মারা যায় প্রায় ২৩ হাজার মানুষ।