শেখ হাসিনার পতনের পর ‘আয়না ঘর’ আবার আলোচনায় উঠে এসেছে। সেখান থেকে এরই মধ্যে তিনজন মুক্তি পেয়েছেন। গত♛ দুই দিন রাজধানীর কচুক্ষেতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম হওয়া ম♈ানুষের খোঁজে ভিড় জমাচ্ছেন আত্মীয়স্বজনেরা।
আয়না ঘর নিয়ে যুগান্তর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশ করে, সেখানকার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো। সুইডেনভিত্তিক নিউজ পোর্টাল গোপন কারাগারের সম্ভাব্য অবস্থানও প্রকাশ করেছে, যেখানে বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের বাংলাদেশে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। প্𝓡রতিবেদনটি বলপূর্বক গুমের শিকার দুই ব্যক্তি হাসিনুর রহমান ও শেখ মোহাম্মদ সেলিম-এর অন-দ্য রেকর্ড অ্যাকাউন্টের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যারা বলেছেন যে তাদের ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কারাগারের ভেতরে রাখা হয়েছিল।
ভারতের জি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়না ঘর শুনতে যতটা সাদামাটা, ততটাই রহস্যময়। শেখ হাসিনার আমলে তৈরি এই আয়না ঘরেই রাখা হতো গুম করে রাখা মানুষদের। আলো-বাতাসহীন একটি কক্ষ। সেখানে সারাক্ষণ ঘড়♛ঘড়িয়ে চলে ফ𒅌্যান।
আয়না ঘরে কাদের রাখা হতো
শেখ হাসিনার 𓄧আমলে বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়ে গেছে। তারা কোথায় তাদের কোনো খোঁজ নেই। এমনকি সেনাবাহিনীর লোকজন রয়েছেন ᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚওই তালিকায়। আয়না ঘর আসলে গোয়েন্দাদের একটি গোপন বন্দিশালা বা ডিটেনশন ক্যাম্প।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আয়না ঘর’ হচ্ছে ‘গুমখানা’। হা🍎সিনার শাসনকালে ২০০🌳৯ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে মোট ৬০৫ জনকে গোপনে বন্দী করে রাখা হয়েছিল।
২০০৯ থেকে ২০১✤৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে নিখোঁজ হন ৪০২ জন মানুষ। এ তথ্যটি প্রকাশ করে ঢাকাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। ২০১৪ থেকে জুলাই ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪৪ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়। তাদের মধ্যে ৪০ জন ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, ৬৬ জনকে ♔সরকারি হেফাজতে গ্রেপ্তার অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে ২০৩ জন এখনো গুম রয়েছেন। যারা দীর্ঘদিন গুম থাকার পর ফিরে আসেন, তারা গুমের ব্যাপারে মৌন অবলম্বন করেন। ধারণা করা হয় এসব মানুষদের গুম করে রাখা হয় আয়না ঘরে।
আয়নাঘরে যারা বন্দী থেকেছেন তাদের মধ্যে রয়েছে নর্থ সাউথ বি💫শ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ মোবাশার হাসান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান, ব্যবসায়🔴ী অনিরুদ্ধ কুমার রায়।
এ ছাড়া আয়নাঘর থেকে সম্প্রতജি ছাড়া পেয়েছেন ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম, আবদুল্লাহিল আমান আজমিꩵ, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফের মুখপাত্র মাইকেল চাকমা।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ এ🎶সব ঘটনার জন্য জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার রক্ষাকারী সংস্থা, যেমন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে নিন্দা প্রস্তাব জানায়।
এ সময় গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা মায়ের ডাক নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন। এখানে যাদের পরি🦩বারের সদস্যরা বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে সরকারি সংস্থা কর্তৃক বলপূর্বক গুমের শিকার হয়েছে সে ঘটনাসমূহকে সামনে আনার জন্য এ সংগঠনের সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ বেসরকারি একটি সংবাদ মাধ্যম থেকে ধারণা করছে, যে দেশের বিভিন্ন স্থানে এরকম আরও বেশ কিছু ꦺনির্যাতন ও আটক স্থান থাকতে পারে🌸।
২০২৪ সালের হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী শেখ হাসিনা ক্ষমত✤ায় আসার বছর, ২০০৯ সাল থেকে তার পতন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৬০০টির বেশি গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী আয়নাঘর থেকে খুব কম বন্দি মুক্তি পেয়েছে। তবে কিছু বন্দিকে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্তি দেওয়া হয়। অনেকেই আবার এনকাউন্টারের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশে এ-জাতীয় ঘটনার তদন্ত প্রায় হয়নি বললেই চলে। আয়নাঘরে রাখা অনেকেই দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা যায়। তারপর লাস সরিয়ে দেওয়া হয়। যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের খাতা কলমে কোনো তথ্য রাখা হয় না। আর যারা হাসিনার আস্থাভাজন ছিলেন তারাই আয়না ঘরের দায়িত্ব পেতেন। আয়না ঘরের বন্দীদের সঙ্গে তাদের পরিবারের সদস্যদের দেখা করা বা যোগাযোগের কোনো আইন ছিল না।