• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২ পৌষ ১৪৩১,

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


ধেয়ে আসছে বন্যা!


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৪, ০৮:১১ এএম
ধেয়ে আসছে বন্যা!

সারা দেশে বন্য🃏া পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। সংস্থাটি বলছে, অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে দেশের বন্যাপ্রবণ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। ইতিমধ্যে পাঁচ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিডব্লিউডিবির কেন্দ্রীয় নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান🔯 স্বাক্ষরিত এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড♊ের সতর্কীকরণ বিভাগ জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতলও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া গঙ্গা-পদ﷽্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মুহরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বৃদ্ধি প🤡েয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে।

সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল সামগ্রিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট💦, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কতিপয় ⛎নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি ব﷽ৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বুধবারও♛। ওইদিনও রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা,ꦐ বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে অপরিবর্তিত থাকতে পারে দিন ও রাতের তাপমাত্রা।

ফেনীতে সোমবার রাতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের চাপে মুহুরী ও কহুয়া নদীর ছয়টি স্থানে বাঁধ ভেঙে ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকার রাস্তাঘাট, দোকানপাট, মাছের খামার, পুকুর, দোকানপাট ও ফসলি জমি ডুবে গিয়েছে। ফুলগাজীতে বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন এক 🐬যুবক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে গতকালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় মুহুরী-কহুয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় পাউবো। মৎস্য, কৃষি ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ বন্যায় ক্ষতির সম্ভাব্য তথ্য সংগ্🐠রহ করছে।

ফেনীতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শন𓆏 শেষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ‘মুহু🐎রী-কহুয়া ও ছিলোনীয়া নদী রক্ষায় স্থায়ী সমাধানের জন্য সমীক্ষা কাজ শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আমরা প্রতিবেদন হাতে পাব। আগামী দুই/তিন মাসের মধ্যেই ৭/৮শ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প একনেকে উপস্থাপন করা হবে। আশা করি, আগামী বর্ষার আগেই আমরা এর কাজ শুরু করতে পারব।’

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহা𓃲ড়ি ঢলে তৃতীয় দফা বন্যার কবলে পড়ে সিলেট। প্লাবিত হয়েছে সী꧒মান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জসহ আশপাশ এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব নদনদীর পানি বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা, কুশিয়ারা নদীর পাঁচটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পাউবো। সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট কোম্পানীগঞ্জে বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় দফা বন্যায় এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের সঙ্গে আরো শতাধিক মানুষ নতুন করে আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সিলেট নগরীতেও তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর, ঘাসিটুলা, মাছিমপুর, ছড়ারপার, তালতলা, কুয়ারপার, মেন্দিবাগ, কামালগড়, চালিবন্দর, যতরপুর, সোবহানিঘাট, কালীঘাট, শেখঘাট, তালতলা, জামতলায় বন্যার পানি উঠেছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা আগে থেকে করা হচ্ছিল। পরিস্থিতির জন্য সতর্কও করা হচ্ছিল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দিয়েছে। দোয়রাবাজারে ঢেউয়ের তোড়ে সুরমা নদীতে নৌকা ডুবে শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ হয়েছেন। গতকাল বেলা ১১টায় উপজেলা সদরের আজমপুর খেয়াঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন—সদর ইউনিয়নের পশ্চিম মাছিমপুর গ্রামের নূর আলীর মেয়ে গোলজান বেগম (৭০), আইন উদ্দিনের স্ত্রী ভিক্ষুক জোছনা বেগম (৩০) ও তার দেড় বছরের শিশু কন্যা (তাৎক্ষণিকভাবে নাম জানা যায়নি)। দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস 🔴স্টেশন কর্মকর্তা বিল্লা🐟ল আহমদ জানান, সুনামগঞ্জ সদর থেকে একটি ডুবরি দল এসেছে। উদ্ধার অভিযান চলছে।

খাগড়াছড়িতে টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রাত আড়াইটার দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারায় পাহাড় ধসে পড়ে সড়কের ওপর। এতে ভোর থেকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম-ঢাকা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ꧂খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের শ্রমিকরা মাটি সরালে তিন ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এছাড়া জেলা সদরের শালবাগান, সবুজবাগে পাহাড়ধসে বাসাবাড়িতে পড়েছে। টানা বৃষ্টিতে ছড়া, নদী, খালে পানি বেড়েছে। চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী ও কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় দীঘিনালা থেকে রাঙ্গামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কের মহালছড়িসহ কয়েকটি স্থানে সড়কের ওপর পানি উঠে পড়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সাজেকে আটকে পড়েছে সাত শতাধিক পর্যটক।

এদিকে রং𝓀পুরে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে বিদ্যমান বিপৎসীমা ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার গতকাল থেকে পরিবর্তন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ওই পয়েন্টের নতুন বিপৎসীমা উল্লেখ করা হয়েছে ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুরে পাউবোর এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতনদের পরামর্শে বিপৎসীমা নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে কয়েক দিন ধরে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎস🤡ীমার ওপর থাকলেও গতকাল নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।’

নীলফামারীর ডিমলায় গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। এতে উপজেলার খগা খড়িবাড়ী, খালিশা চাপানীর বাইশপুকুর, টেꦰপা খড়িবাড়ী, ঝুনাগাছ চাপানী, পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নসহ বেশকিছু এলাকার নিম্নাঞಌ্চল তলিয়ে গেছে।

গাইব🍌ান্ধায় অবিরাম বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সব🌸 নদ-নদীর পানি বেড়েছে। একই সঙ্গে এসব এলাকায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন নদীতীরে বসবাসরত বাসিন্দারা।

Link copied!