• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


জাপানে রবীন্দ্র আন্দোলন


প্রবীর বিকাশ সরকার
প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৪, ০৪:৪০ পিএম
জাপানে রবীন্দ্র আন্দোলন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জাপানের সঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পর্ক শতবর্ষ পুরনো। ১৯১৩ সালে এশিয়া মহাদেশে প্রথম নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হলে এশিয়ার অন্যতম প্রধান দেশ জাপানে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তাঁর জনপ্রিয়তা পর্বতসমান হয়ে ওঠে বিভিন্ন স্তরে। নানাবিধ ক🌳র্মকাণ্ডের কারণে রবীন্দ্রনাথকে জাপানিরা নানাভাবে তাঁকে চেনার জন্য, জানার জন্য আগ্রহী হয়ে পড়েন। ১৯১৫ সাল থেকে তাঁর প্রতি গভীর আগ্রহ থেকে প্রথম রবীন্দ্র আন্দোলন গড়ে ওঠে বুদ্ধিজীবী মহলে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত চলে।

যুদ্ধের পর ১৯৫২ সাল থেকেই পুনরায় তাঁর নাম শিক্ষাঙ্গন এবং নবীন-প্রবীণ বুদ্ধিজীবী মহলে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তাঁর সাহিত্যের কারণে। শান্তিনিকেতন তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় জাপানি ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা যাওয়া-আসা শুরু করেন। সেইধারা ধরে ১৯৬১ সালে ঘটা করে তাঁর জন্মশতবর্ষ উদযাপিত হয় জাপানের একাধিক শহরে ১৯৫৯ সালে গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী। বিপুল পরিকল্পনা ও কর্মকাণ্ড সম্পাদনার কারণে এরকম জন্মজয়ন্তী উদযাপন ভারতের বাইরে এক বিস্ময়কর বিরল ঘটনা বলে প্রতিভাত। এই আন্দোলন ১৯৬৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বজায় ছিল। যাকে দ্বিতীয় রবীন্দ্র আন্দোলন 🎐বলা যায়। 

১৯১৬ সালে জাপানে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

এরপর আশি ও নব্বই দশক জুড়ে জাপানে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা, সভা, সেমিনার ও অনুষ্ঠানাদি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানী টোকিওসহ বিভিন্ন জায়গায়। এইধারা বর্তমানে ক্ষীণ হলেও প্রবাহবান। কোথাও না কোথাও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আলোচনা, না হয় গবেষণা, গ্রন্থপ্রকাশ, আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত꧑ হচ্ছে। শতবছরের ব্যবধানে আজও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপানে নানাভাবে প্রাসঙ্গিক। তাঁকে নিয়ে এত মাতামাতি বিদেশিদের মধ্যে জাপানি ছাড়া আর কোনো জাতির মানুষ করেছে বলে মনে হয় না।

জাপান-বাংলা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অগ্রণী ভূমিকা ও অবদান প্রশ্নাতীত। যদিও প্রথম উদ্যোগটি গ্রহণ করেছিলেন মনীষী ওকাকুরা তেনশিন। ১৯১৩ সালে তাঁর মত্যুর পর জাপান দেশটি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের প্রবল কৌতূহল এবং আগ্রহ দুই অঞ্চলের মধ্যে ভাববিনিময় সম্পর্ককে জোরদার করেছিল। তাঁর কারণেই জাপানে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের আগুন বিস্তৃত হয়েছিল বিপ্লবী রাসবিহারী বসুসহ একাধিক তরুণ বিপ্লবীর মাধ্যমে।

জাপান-রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে নেত⛦াজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং তৎকালীন জাপানের প্রধানমন্ত্রী জেনারেল তোজো হিদেকির যৌথ অভিযান পরিচালনায় ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন, যা চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে ১৯৪৩ সালে এবং ফলস্বরূপ ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভে সক্ষম হয়। অনুরূপ, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যেসকল জাপানি নাগরিক প্রত্যক্ষ সাহায্য ও সহযোগিতা করেছেন নানাভাবে তাঁরা ছিলেন ওকাকুরা-রবীন্দ্রনাথের ভক্ত, শিষ্য ও অনুসারী। কাজেই বলা যায় জাপানে তিনবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে জাপানিদের মননশীল আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। এই আন্দোলনের অতীত এবং ফলাফল অতিসংক্ষেপে পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।      

স্বগৃহে রবীন্দ্রগবেষণায় নিয়োজিত সস্ত্রীক কাজুও আজুমা

১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দের বিদেশি শিষ্যা মার্কিন নাগরিক মিস জোসেফিন ম্যাকলাউড (Josephine MacLeod) জাপানে আগমন করেন এবং ওকাকুরা তেনশিনের কাছে চারুকলা বিষয়ক শিক্ষালাভ করেন। সম্ভবত তারই প্ররোচনা বা আগ্রহে আগ্রহী হয়ে তেনশিন মিস ম্যাকলা💦উড এর সঙ্গে কলকাতার দিকে যাত্রা করেন বছরের শেষ দিকে। তাঁদের সঙ্গেꦇ আরও ছিলেন তেনশিনের শিষ্য তরুণ ভিক্ষু হোরি শিতোকু। তাঁরা ১৯০২ সালে মাদ্রাজ হয়ে কলিকাতায় পৌঁছান।

ভারতে ত💎েনশিন প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত করেন। ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্বামী বিবেকানন্দ তার শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতা, ওলে বুল (ধীরামাতা), রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ, নন্দলাল বসু, অরবিন্দ ঘোষ প্রমুখের সঙ্গে। তিনি রবীন্দ্রনাথের ভাইপো সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন। এখানেই তিনি তাঁর বিখ্যাত🉐 দুটি গ্রন্থ যথাক্রমে ‘The ideals of the East’  এবং ‘The Awakening of the East’ এর পাণ্ডুলিপি লেখেন।

১৯০৩ সালে রবীন্দ্রনাথের অনুরোধে তেনশিন তার প্রদান দ꧃ুইজন শিষ্য চিত্রশিল্পী ইয়োকোয়ামা তাইকান এবং হিশিদা শুনসোকে ভারতে প্রেরণ করেন ত্রিপুরা রাজ্যের রাজপ্রাসাদ অলঙ্করণের কাজে। তাঁরা রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন।

১৯৭৩ সালে জাপানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রবীন্দ্রগবেষক অধ্যাপক কাজুও আজুমা 

১৯০৪ সালে তেনশিনের আরেক জন শিষ্য চিত্রশিল্পী কাৎসুতা শোওকিন কল🥃কাতায় যান। শান্তিনিকেতনে জাপানি চিত্রকলা শিক্ষা দেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গভীর বন্ধুত𓃲্ব গড়ে ওঠে।

১৯১২ সালে ইউরোপ থেকে ফেরার🌠 পথে তেনশিন ভারতে অবতরণ করেন। কলকাতায় যান। সেখানে বাংলার নারী কবি প্রিয়ম্বদা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় ঘটে এবং দুইজনেই প্রণয়ে আবদ্ধ হন।

১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ আমেরিকার বোস্টন শহরে গেলে পরে তেনশিনের সঙ্গে পুনরায় সাক্ষাৎ ঘটে। তেনশিন তখন বোস্টন জাপানি জাদুঘরের পরিচালক ছি🥃লে𝐆ন। এই সালেই অসুস্থ হয়ে তেনশিন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর কয়েক মাস পর রবীন্দ্রনাথ এশিয়ায় প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই সংবাদ জাপানে দাবানলের মতো ছড়িয়ে যায়। অবশ্য তার আগেই জাপানি শিক্ষা ও সংস্কৃতিমহলে রবীন্দ্রনাথ পরিচিতি লাভ করেন ওকাকুরা তেনশিন, য়োকোয়ামা তাইকান, হিশিদা শুনসোও, কাৎসুতা শোওকিন, বৌদ্ধপণ্ডিত ও তিব্বত ভ্রমণ পর্যটক কাওয়াগুচি একাই প্রমুখের মাধ্যমে।

তেনশিনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর থেকেই রবীন্দ্রনাথ জাপান সফরে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কিন্তু সুযোগ পাওয়া যাচ্ছিল না। নোবেল পুরস্কার তাঁকে সেই সুযোগ করে দেয়। ১৯১৫ সালে জাপানের আমন্ত্রণ পেয়েও তিনি জাপানে আসতে পারেন নি। পরের বছর ১৯১৬ সালে আসেন। জাপানের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে পরিচিত হন। বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দেন। য়োকোহামা বন্দর নগরে অবস্থিত বিখ্যাত সানকেইএন বাগানবাড়িতে প্রায় তিনমাস অবস্থান করেন। এই সালেই তেনশিনের অনুসারী 📖খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী কাম্পো আরাই রবীন্দ্রনাথের আমন্ত্রণ পেয়ে কলকাতায় যান এবং দুই বছরের বেশি সময় বিচিত্রা ভবনে জাপানি চিত্রকলা শিক্ষা দেন।

১৯৯৪ সালে শান্তিনিকেতনে প্রতিষ্ঠিত নিপ্পন ভবন 

১৯১৭ সালেও রবীন্দ্রনাথꦅ আমেরিকা থেকে ফেরার পথে জাপানে অবতরণ করেন। এটা তাঁর দ্বিতীয় জাপান ভ্রমণ।

১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ তাঁর ভক্ত মাদাম কোওরা তোমির আমন্ত্রণেไ 🦩চিন ভ্রমণ শেষে জাপানে আগমন করেন। বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দেন। এটা তার তৃতীয় জাপান সফর।

১৯২৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ক্যানাডার পথে জাপানে অবতরণ করেন এবং ফেরার পথেও জাপানে বিশ্রাম নেবার জন্য অবতরণ꧒ করেন। এটা ছিল তার যথাক্রমে চতুর্থ এবং পঞ্চমবার জাপান সফর। সর্বমোট তিনি পাঁচবার জাপানে আসেন। প্রতিবারই তিনি জাপান দ্বারা🌞 প্রভূত প্রভাবিত হন। জাপানিরাও তার প্রভাব গ্রহণ করেন। অনেক ভক্ত তার এই দেশে সৃষ্টি হয়। জাপানিদের প্রশংসার পাশাপাশি তিনি জাপানের অতিরিক্ত পাশ্চাত্যানুকরণ এবং অতিজাতীয়তাবাদী কার্যক্রমের কঠোর সমালোচনা করেন।

রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে জাপানে গবেষণা শতবছর ধরেই হয়ে আসছে। যা এক বিস্ময়কর ব্যাপার! বিভিন্ন স্তরের অগণন জাপানি নাগরিক রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে চিন্তা করেছেন তাঁর বিভিন্ন দিক নিয়ে। ফলে বলা যায় জাপানে রবীন্দ্রগবেষণা অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। এমনটি বিশ্বের আর কোনো দেশে পরিলক্ষিত হয়নি, এখনো হয় না। জাপানে বিগত শতবর্ষ ধরে প্রচুর লেখালেখি এবং গবেষণা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। 

রবীঠাকুরকে  নিয়ে বিভিন্নভাবে কথা বলেছেন, আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং চিন্তা ﷽ও গবেষণা করেছেন এমন প্রথিতযশা ব্যক্তিরা হচ্ছে🌊ন:

মনীষী, শিল্পাচার্য ওকাকুরা তেনশিন, চিত্রশিল্পী য়োকোয়ামা তাইকান, চিত্রশিল্পী কাৎসুতা শোওকিন, চিত্রশিল্পী কাম্পো আরাই, জাপানি পুঁজিবাদের জনক, শিল্পপতি শিবুসাওয়া এইইচি, সাহিত্যিক রবীন্দ্রঅনুবাদক য়োশিদা গেনজিরোও, সঙ্গীতজ্ঞ মাসু গেনজিরোও, জুদোও ক্রীদাবিদদ্বয় সানো জিননোসুকে ও তাকাগাকি শিনজোও, বৌদ্ধভিক্ষু কাওয়াগুচি একাই, অন্তর্জাতিক ধর্মবিশেষজ্ঞ.অধ্যাপক ড. আনেসাকি মাসাহারু, নৃত্যশিল্পী ইরিয়ে শিজুয়ে, রেশম বণিক হারা তোমিতারোও, রাজনীতিবিদ তোয়ামা মিৎসুরু, ভারতীয় দর্শনের অধ্যাপক বৌদ্ধপণ্ডিত ড. তাকাকুসু জুনজিরোও, শিক্ষাবিদ, নারীশিক্ষার পথিকৃৎ ড. নারুসে জিনজোও, কাগজ ব্যবসায়ী, আধ্যাত্মিক সংস্কৃতি গবেষক শিক্ষাবিদ ড. ওওকুরা কুনিহিকো, মনস্তত্ত্ববিদ, রবীন্দ্রগবেষক, অনুবাদক মাদাম ড. কোওরা তোমি, ভারতীয় দর্শনের অধ্যাপক, বৌদ্ধপণ্ডিত ড. বিয়োদোও ৎসুশোও, চিন্তাবিদ, রাজনীতি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ ওকাকুরা কোশিরোও, শিল্পকলা গবেষক-ইতিহাসবিদ ইয়াশিরো য়ুকিও, সঙ্গীতজ্ঞ আয়াসুজি কিয়োসে, অর্থনীতির অধ্যাপক ইয়ামাগুচি কিয়োসে, ফরাসি সাহিত্য গবেষক, রবীন্দ্র অনুবাদক ইনাজু কিজোও, ফরাসি, জার্মান সাহিত্য গবেষক, রবীন্দ্র অনুবাদক কাতায়ামা তোশিহিকো, রবীন্দ্রগবেষক, অধ্যাপক কাসুগাই শিনইয়া, আন্তর্জাতিক রাজনীতি সমালোচক সাকামোতো তোকুমাৎসু, রবীন্দগবেষক, অধ্যাপক মোরিমোতো তাৎসুও, কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যরচয়িতা, চিত্রশিল্পী, দার্শনিক মুশাকোওজি সানেআৎসু, রবীন্দ্রগবেষক, অধ্যাপক ওওরুই জুন, রবীন্দ্রগবেষক, অনুবাদক, শিক্ষাবিদ কাজুও আজুমা, বাংলা ভাষার শিক্ষক, রবীন্দ্র গবেষক মাদাম কেইকো আজুমা, ভাষাবিদ, প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক ড. নারা ৎসুয়োশি,❀ রবীন্দ্র অনুবাদক, গবেষক, অধ্যাপক ওসুদা মাসায়ুকি, রবীন্দ্র গবেষক, অনুবাদক, অধ্যাপক ড. নিওয়া কিয়োকো, ভাষাগবেষক, রবীন্দ্র অনুবাদক ওওনিশি মাসায়ুকি, গবেষক, অধ্যাপক ওকাকুরা তাকাশি, প্রাবন্ধিক নিশিওকা নাওকি, ভাষা বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক মিজোকামি তোমিও, চিত্রশিল্পী ফুকু আকিনো, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীদ্বয় কাম্বে তোমোকো এবং ওকুদা য়ুকা আরও অনেক।

উপর্যুক্তদের মধ্যে জাপানশীর্ষ রবীন্দ্রগবেষক ছিলেন অধ্যাপক কাজুও আজুমা। ২০১১ বছরের জুলাই মাসের ২৮ তারিখে ৭৯ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বিশ্বভারতীর জাপানি বিভ🤪াগের অধ্যাপক ছ𒁃িলেন। ১৯৭১ সালে জাপানে প্রতিষ্ঠা করেন জাপান-টেগোর অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থা থেকে ১৯৮৮ সালে ১২ খণ্ডে নির্বাচিত রবীন্দ্র রচনাবলি জাপানি অনুবাদের উদ্যোক্তা এবং রবীন্দ্রনাথের স্বপ্ন ‘নিপ্পন ভবন’ ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করে তিনি গুরুদেবের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেন। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কলকাতার সল্টলেকে ‘ভারত-জাপান সংস্কৃতি কেন্দ্র: রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবন’।

২০০৭ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবন  (বামে)। ১৯৬১ সালে জাপানে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষ উৎসব উদযাপন 

বাংলাদেশেও একই সময়ে অনুর✃ূপ ‘বাংলাদেশ-জাপান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন অধ্যাপক আজুমা। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত সিলেটবাসী তাঁরই শুভাকাঙ্ক্ষী শিষ্য দারাদ আহমেদ পুরো বাজেটের সাড়ে ৬ কোটি টাকা আ꧙ত্মসাৎ করে ফেলায় প্রকল্পটি আর বাস্তবায়িত হয়নি। এই জঘন্য অপরাধের বিচার চেয়ে আজুমা দম্পতি বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি লিখেও কোনো সাড়া পাননি। এই কলঙ্ক আর কখনোই বুঝি মোচন হবে না।

অধ্যাপক আজুমা ২০০০ সালে বিশ্বভারতীর ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি, ২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ এবং ২০০৮🎶 সালে জাপান সরকারের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘জুইহোও চুউজু শোও’ (Order of the Sacred Treasure) অর্জন করেন। ২০১০ সালে আমার প্রচেষ্টায় তিনি বাংলা একাডেমির ফেলোশিপে সম্মানিত হন। এছাড়াও বহু পুরস্কার ও পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি জীবদ্দশায়।

অধ্যাপক আজুমার সঙ্গে আমার সুদীর্ঘ ২৫ বছরের বেশি গভীর বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরই অনুরোধে আমি জাপান ও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্ক, জಞাপান-ভারত সম্পর্ক এবং জাপান-বাংলা সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করছি বিগত আড়াই দশক ধরে।

লেখক: শিশুসাহিত্যিক, কথাসাহিত্যিক ও গবেষক 

সাহিত্য-সংস্কৃতি বিভাগের আরো খবর

Link copied!