বইমেলায় প্রকাশღিত হয়েছে কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমানের দুটি বই, উপন্যাস ‘রাজনটী’ এবং পনেরোটি গল্প নিয়ে ‘কয়েকজন দেহ।’ বই দুটি প্রকাশ করেছে পাঠক সমাবেশ।
‘রাজনটী’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১১ সালে। উপন্যাসটি ভূষিত হয় এইচএসবিসি-কালি ও কলജম পুরস্কারে। গত বারো বছরে উপন্যাসটির কয়েকটি মুদ্রণ ও সংস্করণ প্রকাশিত হয়। পাঠক-চাহিদা বিবেচনা এবার প্রকাশিত হলো যুগপূর্তি সংস্করণ।
‘রাজনটী’ রচিত লোকপুরাণের এক বাইজিকে নিয়ে, যার নাম গুলনাহার। অষ্টাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, ইংরেজরা যখন ভারতবর্ষ দখল করে, এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কালে তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল তার মা। তার ঠাঁই হয়েছিল জাজিনগরের রাজধানী উদয়াচলের♌ এক বাইজিকোঠায়। রূপ, যৌবন, নৃত্য ও গীতে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল তার খ্যাতি। তার জলসায় আসতেন মহারাজ, মন্ত্রীবর্গ, জমিদার ও বণিকরা। একদিন যুবরাজ কর্তৃক লাঞ্ছ🦄িত হয়ে আত্মসম্মানটুকু নিয়ে উদয়াচল ত্যাগ করে সে পাড়ি দেয় অজানার উদ্দেশে। তাকে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখান পণ্ডিত অজয় কুমার। তার সহযোগিতায় সে চলে আসে জন্মভূমি হরিদশ্ব গ্রামে। ততদিনে তার পৈতৃকবাড়ি হয়ে গেছে বেদখল। চিরতরে বাইজিবৃত্তি ছেড়ে সে শুরু করে নতুন জীবন। গ্রামের কেউ জানত না তার অতীতকথা। পাপের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে সে নির্মাণ করেছিল একটি মসজিদ। কিন্তু একদিন প্রকাশ হয়ে পড়ল তার প্রকৃত পরিচয়। সমাজ দাঁড়িয়ে গেল তার বিরুদ্ধে, অস্বীকৃতি জানাল তার নির্মিত মসজিদে নামাজ পড়তে।
যুগপূর্তি সংস্করণ প্রসঙ্গে স্বকৃত নোমান বলেন, ‘প্রতি বছর বইমেলায় অনেক উপন্যাস প্রকাশিত হয়।𒁃 অধিকাংশ উপন্যাস মেলার পর আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। আমার উপন্যাসটি পাঠক বারো বছর ধরে পড়ছে, কয়েকটি মুদ্রণ ও সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রকাশিত হলো যুর্গপূর্তি সংস্করণ, এটা নিঃসন্দ𝄹েহে আমার জন্য আনন্দের ঘটনা।’
বইটির প্রকাশক সাহিদুল ইসলাম বিজু বলেন, ‘ইতিহাস, লোকপুরাণ ও 🐽কল্পনার মিশেলে রচিত স্বকৃত নোমানের এই উপন্যাস এক যুগ𒐪 ধরে পঠিত হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হতে থাকবে।’
অপরদিকে ‘কয়েকজন দেহ’ স্বকৃত নোমানের পঞ্চম গল্পের বই, যাতে স্থান পেয়েছে পনেরোটি গল্প। গল্পগুলো মূলত প্রেম ও কাম নিয়ে। বইটি সম্প🍎র্কে স্বকৃত নোমান বলেন, ‘প্রেম সর্বোৎকৃষ্ট মানবীয় অনুভূতি। এ কেবলই অনুভূতি, ক্রিয়া নয়। প্রেমের পরবর্তী ধাপ কাম। এ কেবল অনুভূতি নয়, ক্রিয়াও। এই ক্রিয়ার মাধ্যমে অব্যাহত রয়েছে সৃষ্টিপ্রক্রিয়া। কিন্তু কামের রয়েছে শৃঙ্খলা। কাম যখন প্রেমবর্জিত ও শৃঙ্খলাচ্যূত হয়, তখন ঘটে এর বিকার। নারী-পুরুষের দেহকেন্দ্রিক প্রেম, কাম ও বিকার নিয়ে রচিত এ বইয়ের অধিকাংশ গল্প। বাকি গল্পগুলো মানবেতর প্রাণিসহ নানা বিষয়ে রচিত।’
প্রকাশক সাহিদুল ইসলাম বিজু বলেন, ‘উপন্যাসের পাꦜশাপাশি গল্পেও পারঙ্গমতার প্রমাণ রেখেছেন স্বকৃত নোমান তাঁর এই পঞ্চম গ💛ল্পের বইয়ে। পনেরোটি গল্প পাঠে পাঠকেরা পাবেন সাহিত্যরস আস্বাদনের পরিপূর্ণ তৃপ্তি।’
বই দুটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী আনিসুজ্জামান সোহেল। একুশে বইমেলায়𝔉 পাঠক সমাবেশের ৭ নং প্যাভিলিয়নে বই দুটি পাওয়া যাচ্ছে।