• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


তিস্তার চরে ফসল বুনে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা


এস. কে. সাহেদ, লালমনিরহাট
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২২, ১০:১৫ এএম
তিস্তার চরে ফসল বুনে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২৮ হাজার কৃষককে প্রণোদনার আওতায় এনেছে সরকার। গতবারের বন্যায় সব হারানো মানুষগুলো তিস্🍌তার বালুচরে ফসল ফলিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তিস্তার জেগে ওঠা চরের বালু সরিয়ে নতুন করে ফসল বুনতে শুরু করেছেন কৃষকরা।

প্রতিবছর বন্যা, নদীভাঙন ও খরার সঙ্গে যুদ্ধ করে আসছে তিস্তাপারের মানুষ। গত বছরের ২০ অক্টꦚোবরের আকস্মিক বন্যায় কোথাও উঠতি ফসলে বালুচাপা, আবার কোথাও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে আবাদি জমিসহ ফসল। এদিকে পৌষের শুরুতেই শুকিয়ে গেছে প্রমত্তা তিস্তা নদী। মরা তিস্তার বুকে জেগে উঠেছে বালুচর। সেই উপরিভাগের বালু সরিয়ে সবুজ ফসল বুনতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন উদ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কৃষকের শ্রমে তিস্তার বুক চিরে উঁকি দিচ্ছে সবুজ সফল।

সরেজমিন লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ও আদিতমারি উপজেলার চর গোবর্ধন, বালাপাড়া, কুটিরপাড়, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা, চর বৈরাতী, ভোটমারী, শৈইলমারী ও পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম তিস্তার চরসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দেখা গেছে, তিস্তার আকস্মিক বন্যার পর পানি নামার ক্ষতচিহ্ন ভেসে উঠ🐷েছে। আশপাশে এখনো পড়ে আছে বিধ্বস্ত বাড়িঘর। তিস্তার বালুতে চাপা পড়ে আছে কৃষকের ফসলি ক্ষেত। কৃষকরা কাঁচি ও কোদাল দিয়ে সেই বালু সরানোর চেষ্টা করছেন। পানি সরে যাওয়ার পর বালু সরিয়ে চাষ করে নতুন করে ফসল বুনতে শুরু করছেন কৃষকরা। শীতকালীন সবজির ক্ষেতসহ মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা, পেঁয়াজ, আলুসহ নতুন ফসল রোপণ করছেন তারা। এর মধ্যে তিস্তার চরে গজাতে শুরু করেছে ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল।

জানা গেছে, গত বছরের বন্যায় তিস্তা-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে দেখা দেয় আকস্মিক বন্যা। এতে ধান, ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজ, মরিচ ও চিনাবাদাম, মিষ্টিকুমড়াসহ বিভিন্ন উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বন্যায় জেলার ৫ উপজেলায় ২ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমির রোপা আমন, ১০൩০ হেক্টর জমির ভুট্টা, ৯০ হেক্টর জমির কাঁচা মরিচ, আলু, পেঁয়াজ, এবং ১০০ হেক্টর জমির চিনাবাদাম, কুমড়া, ডাল ক্ষেত পানিতে ডুবে যায়। এতে মোট ২০৪৫ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়। 

সবজি ক্ষেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত রহিমা বেওয়া বলেন, “বন্যা আর খরায় আমাদের কষ্ট✨ের ফসল ঘরে তুলতে দেয় না। গেল বন্যায় সব ভেসে গেছে। এখন নতুন করে চরের মধ্যে আলু, পেঁয়াজ, কুমড়া, ভুট্টা লাগিয়েছি। আলু তোলার পর বাদাম লাগামো।”

কালীগঞ্জ উপজেলার চর বৈরাতী, ভোটমারী, শৈইলমারী, কৃষকরা বলছেন, অসময়ে তিস্তার আকস্মিক বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ আরও কয়েক গুণ বেশি। তাদের ধান, আলু, সবজি, বাদামসহ বিভিন্ন ফস🃏লের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দেনায় পড়েছে অনেক পরিবার। তারপরেও আবার নতুন করে চাষাবাদ শুরু করেছেন। বালুচর এখন তাদের জন্য আশীর্বাদ। এই চরের বালু মাটিতেই ফলবে সোনার ফসꦿল। 

আদিতমারি উপজেলার তিস্তা চর গোবর্ধন এলাকার কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, “গেল বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে। ভুট্টা চা🍰ষ করার জন্য ৭ বিঘা জমি তৈরি করছি। জমিতে বালু পড়েছে হাঁটু পর্যন্ত। বালু সরিয়ে জমি তৈরি করতে হচ্ছে।”

কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, “আবাদি জমি ꦉসব পানিতে ডুবে গেছে। পানিতে পচে গেছে আলু, শাকসবজি, কুমড়ার ক্ষেত। কৃষি অফিস থেকে নাম লেখে নিয়ে গেছে।”

জেলা কৃষি ꩲবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চরাঞ্চলে ফসলের আবাদ ভালো হয়েছিল। আকস্মিক বন্যায় জেলার ৩০ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মোট ২০৪৫ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। জেলার ৫ উপজেলার মোট ২৮ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে প্রণোদনার আওতায় এনেছে সরকার। এর মধ্যে রবি মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা বেষ্টিত জেলার ৫ উপজেলার প্রায় ১৬ হাজার কৃষক প্রণোদনা পাবেন। এছাড়া কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন ফসলের 🌼সার ও বীজ সহায়তাও দেবে সরকার। 

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, &ld🐟quo;রবি মৌসুমে মোট ছয়টি ফসলের যেকোনো একটির জন্য ২৮ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে শুরুতে বন্যায় অতি ক্ষতিগ্রস্ত ৫ উপজেলার প্রায় ১৬ হাজার কৃষক এই প্রণোদনার আওতায় আসবেন। এসব কৃষকদের মাঝে 🉐বিভিন্ন ফসলের সার ও বীজ সহায়তা দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের কৃষি অধিদপ্তর থেকে নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

Link copied!