যমুনা নদীতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণকাজ। জাপান ও বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে ১৬ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুর প্রায় ২ কিলোমিটার কাঠামো এখন দৃশ্যমান। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুর ৪৯টি স্প্যানের মধ্যে বসানো হয়েছে ১৮টি স্প্যান। সমানতালে এগিয়ে চলছে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল অংশের সংযোগ রেলপথ নির্মাণের কাজও।
প্রকল্পের স🌞ার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৫ শতাংশ। কাজের গতি ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুটি উদ্বোধন হবে বলে ‘সংবাদ প্রকাশ’কে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সরেজমিন দেখা যায়, বঙও্গবন্ধু যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উজানে দেশের দীর্ঘতম ডুয়েল গেজ ডাবল ট্ꦺর্যাকে নির্মাণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। ইতোমধ্যে সব পিলারের পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে। শেষ হয়েছে ৩১টি পিলারের কাজ। যার ওপর বসানো হয়েছে ভিয়েতনাম থেকে আনা স্টিলের ১৮টি স্প্যান। এগিয়ে চলছে বাকি পিলারগুলোর কাজও। সেতুর সঙ্গে রেল সংযোগ তৈরি করতে দুই পাড়ে ভায়াডাক্ট ও ৩০ কিলোমিটার ডাবল লাইনের রেলপথের কাজও দ্রুত এগোচ্ছে। টাঙ্গাইল অংশে মাটি ভরাটের কাজ শেষে বসানো হচ্ছে রেলট্র্যাক। আর সিরাজগঞ্জ অংশে মাটি ভরাটের কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রকল্পের টাঙ্গাইল অংশে ৮০ শতাংশ ও সিরাজগঞ্জ অংশে ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
সব ঠিকঠাক থাকলে নির্দিষ্ট সময়েই শেষ হবে প্রকল্পের কাজ। এ জন্য দিনরাত দেশি বিদেশ🌊ি প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে চলছে সেতুর কাজ। সেতুটি নির্মিত হলে উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন যোগাযোগ সহজ হবে। শিল্প ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে এগিয়ে যাবে এ অঞ্চল।
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জান্নাত আরা তালুকদার হেনরি বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। আগে পেয়েছি বঙ্গবন্ধু সেতু, এবার পেলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। এই রেল সেতু উত্তবঙ্গের মানুষের জন্য আশীর্বাদ। কারণ আমরা সবাই জানি🅺 উত্তরবঙ্গের মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছুটা হলেও পিছিয়ে ছিল। আশা করছি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সেতুটি উদ্বোধন হবে।”
এ বিষয়ে বঙ্গবন্💜ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শেখ নাইমুল হক বলেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুতে ৩২ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু চালু হলে ৮৮ জোড়া ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করতে পারবে। ফলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে।
সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন🗹ের পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সে♐তু নির্মাণের ফলে উত্তরাঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও ব্যবসার এক বিশাল দ্বার খুলে গেছে। ইতোমধ্যে যমুনার পশ্চিম পাড়ে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন নির্মাণকাজ চলছে। এখানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে চুক্তিসম্পাদন ও নির্মাণকাজ চলছে। প্রায় ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়া শিল্পপার্কসহ উত্তরের ২২ জেলার বহু প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত মালামাল ও যাতায়াতের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে যমুনায় নির্মাণাধীন দেশের বৃহৎ রেলসেতু।
এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী মো. তানবিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে রেল সেতুতে বিভিন্ন সাইটꦺের কাজ চলছে। তবে মূলত কাজগুলো দুটি সাইটে ভাগ করা। একটা ল্যান্ড সাইট ও রোয়েভার সাইট। সিভিল ওয়ার্কের কাজ দুভাগে বিভক্ত। টাঙ্গাইল সাইডে ডাব্লিও ডি ১ ও সিরাজগঞ্জ সাইডে ডাব্লিও ডি ২ প্যাকেজ কাজ করছে। এই মুহূর্তে সিরাজগঞ্জের চেয়ে টাঙ্গাইল প্ꩵরান্তে কাজের অগ্রগতি বেশি। এ ছাড়া দুই পাড়ের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে।
সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণꦓ প্রকল্পের আওতায় ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার রেল সেতু নির্মাণ হচ্ছে। সুপার স্ট্রাকচারের ৪৯টি স্প্যানের মধ্যে ১৮টি স্প্যান ইনস্টল করেছি। সার্বিক অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। সেতুটি নির্মাণ হলে প্রতিদিন ৮৮ জোড়া ট্রেন চলাচল কব𝄹ে। জয়দেব পুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডুয়েল লাইন হলে এর ক্যাপাসিটি আরও বাড়বে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুটি উদ্বোধন হবে।”