• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


৩৪ বছর ধরে বোন পাকিস্তানে, ফেরার অপেক্ষায় ভাই-বোনেরা


রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ০৯:৪৪ এএম
৩৪ বছর ধরে বোন পাকিস্তানে, ফেরার অপেক্ষায় ভাই-বোনেরা
সুফিয়া বিবি। ছবি : সংগৃহীত

১৯৯০ সালের কথা। অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সুফিয়া বিবি (৫৯)। তখন তার বয়স ছিল ২৫-২৬ বছর। ওই সময় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। পরে হাল ছ🏅েড়ে দেন পরিবারের লোকজন। তাদের ধারণা ছিল, সুফিয়া হয়ত বেঁচে নেই।

হঠাৎ সো🏅মবার (১৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘দেশে ফেরা’ নামের একটি পেজে সুফিয়ার পরিচয়সহ ভিডিও সাক্ষাৎকার প্রচার করে পরিবারের সন্ধান চাওয়া হয়। পরে তা দ্রুত ভাইরাল হয়। সুফিয়ার পরিবারের সদস্যরাও চিনতে পেরে তাকে ফিরে পেতে উদ্গ্রীব হয়ে উঠেন।

ফেসবুকে সুফিয়া জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে পাকিস্তানের করཧাচির ছোট একটি গ্রামে রয়েছেন। সুফিয়ার গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কাশিগঞ্জ নাওপাড়া গ্রামে।

ওই গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুফিয়ারা ছয় ভাই ও পাঁচ বোন। ভাই–বোনের মধ্যে সুফিয়া চতুর্থ। ১৯৭৮ সালের দিকে তার বিয়ে হয় বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের সৌলাপাড়া গ্রামের আবদুল জব্বারের সঙ্গে। এরপর সুফিয়ার কোলজুড়ে আসে দুই মেয়েসন্তান, নাম রাখা হয় জোবেদা বেগম ও ছোবেদা ♈বেগম। বিয়ের সাত বছর পর স্বামী জব্বার মারা গেলে দুই সন্তান নিয়ে সুফিয়া ফিরে আসেন বাবার বাড়িতে।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে বাবা🗹র বাড়ি থেকে অভিমান করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সুফিয়ার বয়স ছিল ২৫-২৬ বছর। তার নিখোঁজের বছর দুয়েক পর বড় মেয়ে ছোবেদা এবং ১৬ বছর পরে ছোট মেয়ে জোবেদা মারা যান। অন্তত ২০ বছর আগে মারা গেছেন সুফিয়ার বাবা চাঁন মামুদ ও মা শরিতন নেছাও। তবে তার সব ভাই-🥂বোন এখনো বেঁচে আছেন।

সুফিয়ার ভাই সহিদার রহমান বলেন, “সোমবার রাতে ফেসবুকে ভিডিওতে দেখতে পাই, আমার বোন সুফিয়া মা–বাবা, ভাই–বোন সবার নাম বলছেন। তবে বোনকে দেখেই আমি চিনতে পারি। গত বুধবার মু🍸ঠোফোনে ভিডিও কনফারেন্স করে আমরা সব ভাই–বোন তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছি। এ সময় বড় বোন সুফিয়া আমাদের খোঁজখবর নেন এবং দেশে ফেরার জন্য আকুতিমিনতি করেন। সুফিয়া বর্তমানে পাকিস্তানের করাচিতে আছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে তিনি পাকিস্তানে গেছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি। এখন বোনকে কীভাবে আমরা ফেরত পাব, তা বুঝতে পারছি না। তবে আমরা তাকে ফেরত পাওয়ার আশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছি।”

তার আরেক ভাই মতিয়ার রহমান বলেন, “৩৩ বছর আগে পরিবারের সদস্যদের ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বড় বোন সুফিয়া। তাকে অনেক জায়গায় খুঁজেও পাইনি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম, তিনি বেঁচে নেই। হারিয়ে যাওয়া⛄র পর মা–বাবাও শোকার্ত হয়ে মারা গেছেন। তারা আজ বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। আইনি জটিলতা কাটিয়ে এখন আমরা বোনকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে ✱আনার জোর দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে।”

কাঁচামাল ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, “সুফিয়া আমার ফুপু। তিনি নিখোঁজ হওয়ার সময় আমার বয়স ছিল ছয়-সাত বছর। মা-বাবাসহ স্বজনরা ফুপুকে খুঁজে না পেয়ে আশা ছেড়ে দেন। বাবা বলতেন তোর ফুপু বেঁচে নেই। হঠাৎ সোমবার ফেসবুকে ঢুকে এক বয়স্ক নারীর ভিডিও দেখতে পাই। সেখানে তিনি পরিবারের বর্ণনা দেন। বর্ণনায় দেখলাম আমার জেলা, উপজেলা, গ্রাম, দাদা-দাদি ও আমার বাবার নামসহ চাচা-ফুপুদের নাম বলছেন। তখন 🌜আমি দ্রুত বাবাকে ভিডিওটি দেখালে বাবা বলেন এটা তো নিখোঁজ হওয়া আম🌱ার বোনটি। বোন বেঁচে আছেন বলে চিৎকার দিয়ে ওঠেন বাবা।”

মধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আলম বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। আমিও চাই, সুফিয়া নিজ দেশে স্বজনদের কাছে ফিরে আসুক। এখন সুফিয়ার স্বজনেরা যে ধ🗹রনের সহযোগিতা চাইবে, তা করা হবে।”

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজির হোসেন বলেন, “সুফিয়াꦫর বিষয়টি শুনেছি। তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমার সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করেনি। যোগাযোগ করলে অবশ্যই বিষয়টি দেখা হবে।”

Link copied!