রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলা দুর্গম ফারুয়া ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে প্♌রায় ১৫ হাজারের বেশি মানুষের বাস। ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা নཧা থাকায় নৌপথই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। ফারুয়া ইউনিয়নে দুটি নিম্ন মাধ্যমিক ও ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ না থাকায় দুর্গম ইউনিয়নের লোকজন সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ক্ষেত্রে বঞ্চিত রয়েছেন।
সরেজমিনে ফারুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভৌগোলিকভাবে দুর্গম হওয়ায় ও সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা না থাকায় ইউনিয়নে মানুষ বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত রয়ে💟ছেন।
স্থানীয় বরুন তঞ্চঙ্গ্যা, রতন তঞ্চঙ্গ্যা, লক্ষী চাঁন তঞ্চঙ্গ্যাসহ আরও অনেকে বলেন, “আমাদের ইউনিয়নে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আমরা দূরের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে যোগাযো💧গ করতে পারি না। দেশের বিভিন্ন জায়গার খবর আমরা পাই না। সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত।”
সূর্যের হাসি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী তিশা চাকমা বলেন, “আমরা এখানে অনেক কষ্টে আছি। এখানে বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা রোগী এলে ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা দিতে পারি না। এ ছাড়া মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় অনেক সময় জরুরি মুহূর্তে রোগী এলে আমাদের ওপর মহলে যোগাযোগ করার সেই ব্যবস্থাও এখানে নেই। যদি নেটও🦋য়ার্ক ও বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যেত তাহলে এখানকার মানুষের ও আমাদের ক্লিনিকের জন্য অনেক সুবিধা হতো।“
ফারুয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ♋সহকারী শিক্ষক অরুপ বড়ুয়া বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় সরকার আমাদের কোনো ল্যাপটপ দেয়নি। যার কারণে আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিতে পারছি না। নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের ক্লাস ও অফিসের বিভিন্ন কাজ শহরে গিয়ে করতে হয়। শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি ঠিকমতো পায় না, আর জানেও না টাকা পেয়েছে কি না। এসব সর্ম্পকে খোঁজ খবরও নিতে পারে না যার কারণে শিক্ষার্থীরা সরকারের আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই সরকার আমাদের বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক দেওয়ার ব্যবস্থা করুক যাতে করে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয় ও বিদ্যালয়ের পাঠদান সুষ্ঠুভাবে করা যায়।”
ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, “বিলাই🍨ছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়ন রাঙামাটি জেলার মধ্যে একটু দুর্গম ও প্রত্যন্ত ইউনিয়ন। বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশের এই সময়ে আমাদের দৈনন্দিন অফিসের যে কার্যক্রম সব অনলাইনে করতে হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের এখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ৫০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদর বা জেলা শহরের গিয়ে করে আসতে হয়। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ সব ধরণের ভাতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিকাশ বা নগদে পেমেন্ট করা হয়। কিন্তু এখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত ফারুয়া ইউনিয়নবাসী।”
বিলাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিলাইছড়ি ফারুয়া ইউনিয়ন অত্যন্ত দ🍃ুর্গম একটা ইউনিয়ন। সেখানে এখন পর্যন্ত কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট সংযোগ নেই। আমরা ফারুয়া ইউনিয়নকে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার জন্য আবেদন করেছি এবং ইতোমধ্যে সরকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে ফার🎶ুয়া ইউনিয়নকে নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা ফারুয়া ইউনিয়নে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাব।”