খুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ও একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ জাদুঘর উদ্বোধন করবেন। জাদুঘর ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়াম্যান ড. মুনতাসীর মামুন জানিয়েছেন ইতোমধ্যে প্রস্তুতিমূলক সব আনꦐুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।
এটি বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আনার পথে আরেকধাপ এগিয়ে যাওয়া বলে মনে করছেন মুক্তিযুদ্ꦡধ গবেষকরা।
জা🐻দুঘরের রূপকল্পে লেখা আছে, একাডেমিক পরিসরের বাইরে গণহত্যার ইতিহাস😼কে তুলে ধরার বিভিন্ন সৃজনশীল প্ল্যাটফর্মে কাজ করা এর উদ্দেশ্য। মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার ইতিহাস রচনাকে ত্বরান্বিত করতে উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সম্ভাব্য গবেষক তৈরি করা হবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের গণহত্যাকে তুলে ধরা এবং স্বীকৃতি অর্জন করার পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বিভিন্ন নীতি প্রণয়নের জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ সৃষ্টি করবে এই প্রতিষ্ঠান।
‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’ শুধু বাংলাদেশেরই নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর। ২০১৪ সালের ১৭ মে খুলনা শহরের একটি ভাড়া বাড়িতে এই জাদুঘর ও আর্কাইভের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জাদুঘরকে জমি এবং বাড়ি উপহার দেন এবং সেটিকে সংস্কার করে খুলনার ২৬ সাউথ সেন্ট্রাল রোডের নিজস্ব ভবনে গণহত্যা জাদুঘর নতুন করে যাত্রা শুরু করে ২০১৬ সালের ২৬ মার্চ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়াম্যান হিসেবে দায়িত্ব প𒉰ালন কর🌟ছেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।
এ জাদুঘরের অধীনে বধ্যভূমিতে ৩০টি স্মৃতিফলক, ২০ জেলায় গণহত্যা জরিপ, ৮০টি গণহত্যা নির্ঘণ্ট প্রকাশ ও ১৫০ জন গবেষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, আর্কাইভে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত প্রায় ৯ হাজার ছবি ও দুষ্প্রাপ্য পত্র-পত্রিকা রক্ষিত রয়েছে। এই জাদুঘরই প্রথম ডিজিটাল জেনোসাইড ম্যাপ🦹 তৈরি করেছে এবং এসব ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
তরুণ প্রজন্মের কাছে একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যার চিত্র তুলে ধরতে জাদুঘরে রয়েᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚছে প্রতীকি বধ্যভূমি। রয়েছে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র। রয়েছে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে লিখিত প্রেস রিলিজ, ১৯৭২ সালে শহিদ পরিবারকে দেওয়া চেক, চিঠিসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুষ্প্রাপ্য সব নথিপত🐲্র ও নিদর্শন রয়েছে। ৭ই মার্চের ভাষণের সেই মাইকটি রয়েছে জাদুঘরে।
প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলে বয়লারের মধ্যে ঢুকিয়ে অসংখ্য মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। একাত্তরের সেই গণহত্যার চিত্র তুলে ধরতে সেই বয়লারের অংশ রয়েছে জাদুঘরে। পাকিস্তানি সেনাদের নির্যাতনের চিত্র জীবন্ত আকারে তুলে ধরতে জাদুঘরে রয়েছে, প্রতীকী টর্চার সেল। প্রতিরোধ যুদ্ধে ব্যবহার করা দܫেশীয় অস্ত্রসহ অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে জাদুঘরে।
মুনতাসীর মামুন 𒐪বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বড় উপাদান গণহত্যা ও নির্যাতনের ইতিহাস। প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে না এলে এতো বড় উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পথে এই প্রকল্প অনন্য উদ্যোগ। এটি এই দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম জেনোসাইড মিউজিয়াম। আমরা এর কাজ করতে পেরে গর্বিত, আনন্দিত। এবং সবচেয়ে বিশেষ দিক হলো, এটি করা হয়েছে ঢাকার বাইরে, খুলনায়। এখন থেকেই এটাকে কেন্দ্র করে গণহত্যা বিষয়ক গবেষণা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পথে এগোতে আর বাধা থাকবে না বলে আমি বিশ্বাস করি। এখানে ইতোমধ্যে দেশের বাইরে থেকেও জেনোসাইড বিষয়ক গবেষকরা এসেছেন, বিস🎶্মিত হয়েছেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল ও নির্মূল কমিটির সভাপতি এবং এই জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি শাহরিয়ার কবীর বলেন, শুধু গণহত্যা নিয়ে ইউরোপ আমেরিকায় জাদুঘর আছে। কিন্তু এশিয়ায় তেমন কিছু ছিল না। মুনতাসির মামুনের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্ণাঙ্গ সহায়তায় এটা করা গেছে। উদ্যোগটি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মত🗹োই বেসরকারি উদ্যোগ। গণহত্যা নিয়ে যারা গবেষণা করবেন এই জাদুঘর আর্কাইভ তাদের সেই সুযোগ করে দিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। এই জায়গায় আমাদের বড় অপূর্ণতা ছিল, এই জাদুঘর আর্কাইভ প্রౠতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সেটা পূরণ করল।