দিনাজপুর জেলায় উৎপাদিত লিচুর স্বাদ আর মানের জন্য দেশজুড়েই এর কদর একটু বেশি। গত বছর জেলায় ৫ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদন হয়েছিল ৩১ হাজার ✃৭৯০ মেট্রিক টন। কি💫ন্তু চলতি বছর লিচু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার কৃষক আর বাগানিরা। কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে লিচুর মুকুলে পরিবর্তে গাছে এসেছে নতুন পাতা।
জেলা পরিষদের তথ্য বলছে, জেলায় ১৩টি উপজেলাতেই লিচুর আবাদ হয়। তবে প্রধান স্থানের তালিক🌺ায় রয়েছে সদর, চিরিরবন্দর, বিরল, বীরগঞ্জ এবং বিরামপুর উপজেলা। এরমধ্যে সদর উপজেলাতেই বেশি হয় মৌসুমি এই ফলের উৎপাদন। এসব উৎপাদিত লিচুর মধ্যে রয়েছে মাদ্রাজি, বোম্বাই, বেদানা, চায়না থ্রি এবং কাঁঠালি বোম্বাই জাতের লিচু।
মোট উৎপাদিত লিচুর ৩৯ শতাংশই বোম্বাই জাতের। এরপর মাদ্রাজি ৩০ শতাংশ, চায়না থ্রি ২৫ শতাংশ, বেদানা ৫ 🤪শতাংশ এবং কাঁঠালি জাতের লিচু উৎপাদন হয় ১ শতাংশ। আর উৎপাদিত লিচুর ৮০ শতাংশই চলে যায় দেশের 𒐪বিভিন্ন স্থানে।
অপর দিকে কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ১৩ হাজার ৯৯১টি লিচু বাগান রয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫ হাজার ২৮১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। আর ওই বছরই উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ৪৬ মেট্রিক 📖টন। একইভাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে ২৬ হাজার ৪৮ মেট্রিক টন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৫ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে ৩৩ হাজার ৪৮৪ মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ 🍬হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে ২৮ হাজার ৭৭৬ মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছর ৫ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে ৩১ হাজার ৭৯০ মেট্রিকটন এবং চলতি মৌসুমে (২০২২-২৩) লিচুর আবাদি জমির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে গত অর্থ বছরের মতোই।
জীবন নামে লিচু চাষি বলেন, “এবার যেদিকেই যাচ্ছি শুধু গাছে গাছে শুধু নতুন প꧒াতা। মুকুল তেমন নেই বললেই চলে। আমা🍌রও বাগান কেনা আছে। মুকুল কম আসায় এবার লিচুর পরিমাণ কম হবে। কয়েক বছর তো লোকসান খাইছি। গত বছর একটু লাভ হইছে। এবার একটু লাভের আশা করছিলাম। কিন্তু যে নতুন পাতা আসছে। তাতে ভালো ফলন আসবে না।”
মোসাদ্দেক হোসেন নামের এক উদ্ভিদবীদ বলেন, দিনাজপুর লিচুর জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু বাগানগুলোতে লিচুর ফলন কমে আসছে। গত বছরের তুলনায় এবার নতুন পাতার পরিমাণ বেশি। মূলত শীত ও উষ্ণ আবহাওয়ার সংমিশ্রণে বসন্তকালের শুরুতে যখন লিচুর শীষ বের হয়ে মুকুল দিয়ে ফুল পরিস্ফুটিত হয়ে লিচু হয়, সেই জায়গাটিতে যেই অক্সিন নামক হরমোনটি দায়ী, সেই হ💃রমোনটি মিশ্রিত না হওꦜয়ার কারণে নতুন পাতা বের হচ্ছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ আলম বলেন, এ বছর লিচুর অফ ইয়ার। অর্থাৎ গত বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর লিচুর ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কম হয়েছে। এখন লিচুর পাতার মধ্যে ময়লা জমে আছে। এর জন্য কৃষকদের অবশ্যই যত্নশীল হতে হবে। প্রথমে শুধু পানি স্প্রে করে পাতাগুলো ধুয়ে দিতে হবে। পরে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম বোরন মিশিয়ে সܫ্প্রে করলে লিচুর মুকুল আসার সম্ভাবনা বাড়ে।