জরুরি বা মুমূর্ষু রোগীকে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা হাসপাতালে পৌঁছে দিতে অ্যাপসের মাধ্যমে চালকের কল দিলেই বাড়ি চলে যাচ্ছে ‘স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স’। গ্রা🐼মের মেঠোপথে যেখানে সময় মতো কোনো চার চাকার যান্ত্রিক গাড়ি পাওয়া যায় না। সেখানে একটি মাত্র কলের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে ‘স্বপ্নযাত্র⭕া অ্যাম্বুলেন্স’ সার্ভিস।
এক সময় কোনো মানুষ অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে বেগ পেতে হতো। এখন এই অঞ্চলের মানুষ সহজেই🌄 পাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। দিনে-রাত যেকোনো সময়ই রোগীদের সেবায় প্রস্তুত স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। দেশের প্রথম অ্যাপস ভিত্তিক এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিন-দিন সাড়া ফেলতে শুরু কর🅠েছে স্থানীয়দের মাঝে। অল্প খরচে কম সময়ে স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে খুশি তারা।
লক্ষ্মীপুরে গ্র🅠ামীণ পর্যায়ে মানুষের মাঝে জরুরি সেবা পৌঁছে দিতে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দের ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধ🔯ারণ মানুষ।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার প্রত্যন্ত চর অঞ্চল চরবাদাম ইউনিয়নে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জেলা প্র🌟শাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দের উদ্যোগে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের মাধ্যমে শুরু হয় ‘স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স’ সার্ভিসের কার্যক্রম। একটি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে এই সার্ভিসের কার্যক্রম শুরু করার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের জন্য ৬টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়। এছাড়া গত ২৭ মে জেলার কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ও হাজিরহাট ইউনিয়নেও ‘স্বপ্নযাত্রা অ🦩্যাম্বুলেন্স’ সার্ভিসের কার্যক্রম চালু করা হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন জানান, জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ‘আমার গ্🐼রাম, আমার শহর’ বাস্তবায়নে লক্ষ্মীপুরে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের প্যাসেন্ট সাপোর্ট ফান্ড, উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিল, এলজিএসপি-৩ প্রকল্প, ইউজিডিপি প্রকল্পের প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংস্থান করে ইউনিয়ন পরিষদের অনুকূলে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করা হয়। আরও ৯টি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রামগতি উপজেলার মে🧜ঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম চরের অসহায় রোগী পরিবহনের 🦄উদ্দেশ্যে একটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান। এ সকল অ্যাম্বুলেন্স প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে সারাদেশে রোগী পরিবহনের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা, অগ্নিকাণ্ডসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্রুত সেবা প্রদান করছে।
সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, এ সব অ্যাম্বুলেন্স ইউপি চেয়ারম্যানদের অধীনে আছে।🅘 এ𝔍কজন করে চালক নিযুক্ত আছেন প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্সে। আর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ তাদের এ অ্যাম্বুলেন্স রক্ষণাবেক্ষণ করছে। মোবাইলের প্লে স্টোর থেকে প্রথমে স্বপ্নযাত্রা নামের অ্যাপস ডাউনলোড করতে হয়। সেখান থেকে বিস্তারিত তথ্য ও সেবা পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও রোগীরা জরুরি প্রয়োজনে নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া মাত্র অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পৌঁছে যায়। স্বল্প ভাড়ায় জেলা সদরের সরকারি হাসপাဣতাল, থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জরুরি রোগী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে দিন-দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই সেবা কার্যক্রম। স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসে নন এসি প্রতি কিলোমিটারের জন্য ১৮ টাকা ও এসি ২০ টাকা হারে ভাড়া দিতে হয়।
সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের বাসিন্দা খোরশেদ আলম, মান্দারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, বশিকপুর ইউনিয়েনের বাসিন্দা আলেয়া বেগম, চর বাদাম ইউনিয়নের বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, কিছুদিন আগেও গ্রামের রোগীদের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার ওপর নির্ভর করতে হতো। অনেক সময় এগুলোও পাওয়া যেত না। কিন্তু স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স নামের এই সেবা চালু হওয়ায় ইউনিয়নবাসীর ব্যাপক উপকার হয়েছে। দিন-রাত সব সময় ইউ🃏নিয়ন পরিষদে এই অ্যাম্বুলেন্সগুলো অবস্থান করে। চালকের কাছে থাকা নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন দেওয়া মাত্রই তা পৌঁছে যায় রোগীর দরজায়। স্বল্প ভাড়ায় রোগী আনা নেওয়ার এ কার্যক্রম ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রামে বসে মানুষ যেন শহরের সেবা পেতে পারে সেই লক্ষ্যেই ‘স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স’ সার্ভিস এর কার্যক্রম চালু করা হয়। মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমানোও আমাদের লক্ষ্য। এ সেবা প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অচিরেই জেলার অন্য ইউনিয়নগুলোকেও এই সার্ভিসের আওতায় আনা হবে। এই উদ্যোগ স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।”