• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


প্রধানমন্ত্রীর আগমন

বিভাগ বাস্তবায়ন ও বিশ্ববিদ্যালয় চান ফরিদপুরবাসী


হারুন-অর-রশিদ, ফরিদপুর
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৩, ১০:১২ এএম
বিভাগ বাস্তবায়ন ও বিশ্ববিদ্যালয় চান ফরিদপুরবাসী

পদ্মা সেতু চালুর মধ্যে দিয়ে পূরণ হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের লালিত স্বপ্ন। পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে রেলপথ। এই রেলপথ দিয়ে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ সꦬ্টেডিয়ামে এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন তিনি। তবে, ওই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর দিকে কিছু দাবি নিয়ে তাকিয়ে আছেন ফরিদপুরবাসী। তারা চান ফরিদপুরকে বিভাগ ঘোষণা ঘোষণা এবং জেলা শহরে একটি সরকারি 🍸বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হোক।

ফরিদপুরের মানুষের দাবি, ফরিদপুর একটি পুরোনো জেলা শহর। এই জেলায় জন্ম হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজ🎐িবুর রহমানের, জেলা শহরে রয়েছে তার পদচারণা। এ মাটি অবহেলায় থাকতে পারে না। ফরিদপুরের নামে বিভাগ বাস্তবায়ন এবং জেলা শহরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অবশ্যই অগ্রগণ্য হওয়া উচিৎ বলে তারা মনে করেন।

তাদের দাবি, ফরিদপুর বা পদ্মা বিভাগ বাস্তবায়ন করতে হলে ফরিদ🦹পুরে অবকাঠামোমূলক উন্নয়ন করতে হবে। এরমধ্যে ফর💯িদপুরে বিভাগীয় হেডকোয়ার্টার, একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন সরকারি অফিসের দপ্তর, অধিদপ্তর, ক্যান্টনমেন্ট, মহিলা ক্যাডেট কলেজ, ইপিজেড, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি, গ্যাস লাইন ও পদ্মা নদী সংলগ্ন পর্যটন কেন্দ্র করতে হবে।  

ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা এই ‘ফরিদপুর’। অনেক গুনি ব্যক্তিদের জন্ম ও পদচারণা রয়েছে এই মাটিতে। অনেক আউলিয়া-দরবেশ, রাজনীতিক, পূণ্যাত্মার🌄 আবাসভূমি হিসেবে এ অঞ্চল অত্যন্ত সুপরিচিত। বর্তমানে আরও বদলে গিয়েছে জেলা শহর। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নতুন করে সেজেছে শহর। এ জেলাকে ঘিরে বিভাগ বাস্তবা🍬য়নের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে ১৯৮৫ সাল থেকেই। তৎকালীন ‘ফরিদপুর বিভাগ ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন’ কমিটির মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেন ফরিদপুরের অনেক প্রবীণ ও গুনী ব্যক্তিরা। সেসময়ে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর অধ্যাপক এম.এ আজিজ।

২০০৯ সাল পর্যন্ত ‘ফরিদপুর বিভাগ ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন’ কমিটির মাধ্যমে তিনি আন্দোলন চালিয়ে এসেছেন। পরবর্তীতে পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হলে ওই কমিটির নাম দেওয়া হয় ‘ফরিদপুর উন্নয়ন কমিটি’। এই কমিটির মাধ্যমেই🎃 ফরি💜দপুর বিভাগ বাস্তবায়ন, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের দাবিতে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি এই কমিটির সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে কথা হয় প্রবীণ এই শিক্ষাবিদের সঙ্গে। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “এই অঞ্চলের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে ১৯৮৫ সাল থেকেই ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়নে❀র জন্য নিয়ম��তান্ত্রিকভাবে আন্দোলন, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, প্রেস ব্রিফিং করেছি।“

ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম কুমার সাহা বলেন, “ফরিদপুরে পাবলিক বিশ🐭্ববিদ্যালয় স্থাপন করা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা অনেকদিন যাবৎ বিষয়টি নিয়ে কথা-বা🐻র্তা বলে আসছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দুই/একবার উত্থাপণ করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ফরিদপুর জেলা ভেঙে পাঁচটি জেলা হয়েছে। ত💟ারমধ্যে গোপালগঞ্জে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন রাজবাড়ীতে বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে। অথচ ফরিদপুরে 🍷কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। আমাদের প্রাণের দাবি, ফরিদপুরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিৎ। বঙ্গবন্ধুর এই মাটি অবহেলায় থাকতে পারে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, বঙ্গবন্ধুর এই মাটিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা করা হোক।”

এই অঞ্চলে শিক্ষার মানোন্নয়নে পাবলিক পাবলিক ব▨িশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন ফরিদপুরের নাগরিক সমাজ। সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামী বলেন, “পুরোনো এই জেলা শহরে বঙ্গবন্ধুর পদচারণা রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এই জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া জরুরি এবং বিভাগ বাস্তবায়ন হলে সেটি পদ্মা নামে নয়, ফরিদপুর নামেই হওয়া উচিৎ।”

ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক পান্ন🌱া বালা বলেন, “আমাদের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই। আশেপাশে অনেক জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা শোনা যাচ্ছে কিন্তু ফরিদপুরের নাম সেখানে দেখছি না। আমরা অবিলম্বে ফরিদপুরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যꦐালয় করার দাবি জানাচ্ছি। এই অঞ্চলে শিক্ষার ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য ভূমিকা রাখবে।”

একই দাবি জানাচ্ছেন জেলার সাধারণ মানুষ। সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফরিদপুরকে অবহেলিত জেলা বলে আক্ষেপ প্রকাশ করছেন। তারা ♍মনে করেন, এখানে সবার আগে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা দরকার। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন যেমন আমাদের প্রাণের দাবি, তেমনি অবিলম্বে ফরিদপুরকে বিভাগ ঘোষণাও আমাদের দাবি।”

এদিকে ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল নিয়ে ফরিদপুর বিভাগ গঠনের বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় পদ্মা নামে নতুন বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর একনেক সভায় বিভাগ বাস্তবায়নের ঘোষণা আসতে পারে- এমন আশায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটে ফরিদপুরবাসীর। ক✱িন্তু ওই সভায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণ দেখিয়ে পদ্মা বিভাগ বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, খুব শিগগিরই বিভাগ বাস্তবায়ন হবে। দক্ষিণবঙ🐭্গের ২১টি জেলার উন্নয়নের জন্য পদ্মা সেতু🔥 হয়েছে এবং এই অঞ্চলে শিল্পায়নের জন্য পদ্মা বিভাগ বাস্তবায়ন সকলের দাবি। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি। তারপরও জনগণের দাবি পূরণে আমি কাজ করে যাবো।”

আক্ষেপ জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেছ আলী ইছা। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “আমরা পাকিস্তান আমল থেকেই নিগৃহীত। আমাদের এই অঞ্চল শিল্পায়ন নেই, সাধারণ মানুষের উন্নয়নে তেমন কিছু নেই। শিক্ষা ব্যবস্থায় জাতীয় পর্যায়ে সেরকম কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। দেশের উন্নয়নে যতকিছু প্রয়োজন, তার থেকে আমরা সবসময়ই বঞ্চিত। আমরা আশায় ছিলাম বর্তমান সরকার বিভাগ দেবে ক🌳িন্তু সেটাও আমরা পাইনি।”

ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চ বলছে, “ফরিদপুর বিভাগ হওয়া অবশ্যই অগ্রগণ্য হওয়া উচিৎ এব𒉰ং বিভাগ বাস্তবায়ন হলে সদর দপ্তর ফরিদপুর জেলা সদরেই করার আমরা দাবি করি। এতে মনে করি, বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান জ🌊ানানো হবে এবং এই অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে।”

উল্লেখ্য, ১৭৮৬ সালে ফরিদপুর জেলা প্রতিষ্ঠা লাভ করে (মতান্তরে ১৮১৫)। তখন জেলার নাম ছিল জালালপুর এবং সদ🌜রদপ্তর ছিল ঢাকা। ১৮০৭ খ্রিষ্টাব্দে জেলার সদরদপ্তর ফরিদপুর শহরে স্থানান্তর করা হয়। ফরিদপুরে আসার পরও জেলার নাম ‘জালালপুর’ ছিল। প্রখ্যাত সাধক ও দরবেশ খাজা মাইনউদ্দিন চিশতী (রহঃ) এর শিষ্য শাহ ফরিদ(রহঃ) এর নামানুসারে ১৮৩৩ সাল থেকে জেলার নাম ‘ফরিদপুর’ ব্যবহৃত হতে থাকে। যা মোঘল আমলে ফতেহাবাদ নামে🐟 পরিচিত ছিল। বর্তমানে ফরিদপুর ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর নামে পাঁচটি জেলা।

Link copied!