বৈশাখের এই সময়ে হাওর🅠ের চারদিকে পাকা সোনার ধানের মৌ মৌ গন্ধ। মেঘমুক্ত আকাশে সূর্যের চোখ রাঙানি, তীব্র তাপদাহের দাপট উপেক্ষা করে হাওরের গভীর থেকে ধান কাটা ও খলায় মাড়াইয়ের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। হাওরে বিশাল এই কর্মযজ্ঞে প্রচণ্ড তাপদাহে কৃ✤ষক-কৃষানিসহ দিশেহারা নিম্ন, মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ।
জরুরি প্𝐆রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না লোকজন।🍸 এদিকে লোডশেডিংয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। গাছের পাতাও নড়ছে না। গরমে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশু এবং বয়স্ক মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন।
সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র গরমে হাওরের খলায় খলায় কৃষান ও কৃষানি ও তাদের সন্তান আত্মীয়স্বজনেরা কেউ ছাতা হাতে কেউ বা ত্রিপাল টানিয়ে খলায় বসে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন। গরমের কারণে হাওরে শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি ধান কাটা মেশিনের সংকট থাকায় হাওরে ধান কাটা শ্রমিকরাও এই গরমে ধান কাটতে হাওরে সহজে যেতে চায় না। যারা যেতে চায় তারাও আবার অধিক টাকা দাবি করার ফলে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। প্রতি বিঘায় অন্যান্য বছর ৩ হাজার টাকায় ধান কাটলে🌃ও এবার ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দাবি করছেন শ্রমিকরা।
সুনামগঞ্জ কৃষি অফিস জানিয়েছে, এবার সুনামগঞ্জের ১৩৭টি হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক📖্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আবাদ করা জমি থেকে ১৩ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি 🌠বিভাগ। এর মূল্য প্রায় ৪ হাজার ১১০ কোটি টাকা।
জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পথচারী জা𝄹হিদ মিয়া বলেন, “প্রচণ্ড গরমে ঘরে বিদ্যুৎ না থাকলে থাকাও যাচ্ছে না। আর বাইরেও প্রচণ্ড তাপ, অবস্থা খারাপ। বাহিরে বাতাসও নেই এরপরও জরুরি প্রয়োজনে বের হয়েছি।”
জেলার সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নে ধান কাটতে আসা শ্রমিক আনিস মিয়া বলেন, “প্রতি বছরের মতো এবারও ধান কাটতে ১৫ জনের একটি দল নিয়ে এসেছি। কিন্তু এই গরমে হাওরে থাকা কঠিন হয়ে গেছে। কিন্তু কিছুই করার নাই পেটের দায়ে ধান কাটতে হচ্ছে। হাওর থেকে ধান কেটে মাথার করে খলায় আনার পর দম যায় যায় অবস্থা। প্রতি একটি বোঝায় ৫৫-৬০টি ধানের আঁটি আনা হয় এতে প্রায় এক মনের বেশি ধান হবে। একবার আনার পর আধা ঘণ্টা বসে জিরাইয়া (বিশ্রাম নিয়ে) পরে আবারও হাওরে যাই�🐟�।”
জেলার তাহিরপুর উপজেলার শনি হাওরের কৃষক সাদেক আলী জানান, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে গরমে অবস্থা খুবই খারাপ, এরপরও ধান মাড়াই ও শুকানো𝄹র কাজ করতে হচ্ছে প্রচণ্ড তাপের মধ্যে। কোনো উপায় নেই। ধান শুকাতে হবে, না হলে জীবন বাঁচানোও দায় হয়ে পড়বে। এরপরও ভালো যে আগাম বন্যা আমাদের ফসলের ক্ষতি হয়নি। অন্যান্য বছর দুশ্চিন্তায় থাকতে হত হাওরের হাজার হাজার কৃষকদের।”
জামালগঞ্জ উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রীকান্ত তালুকদার বলেন, “আগে ধান কাটার জন্য প্রতি বিঘায় ৩ হাজার টাকা করে আলাপ করেছি। গরমের কারণে শ্রমিকরা এখন সাড়ে চার হাজার ট🌞াকা দাবি করছে। ধানও পেকে গেছে তাই দেন দরবার করে প্রতি বিঘায় ৪ হাজার টাকা করে ধান কাটছি। কোনো উপায় নেই, কষ্টে ফলানো হাওরে পাকা ধান তো আর হাওরে রাখা যাবে না।”
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মির্জা রিয়াদ হাসান জানান, তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে বেশি বেশি ডাবের পানি অথবা বিশুদ্👍ধ পানি পান করতে হবে। বিশেষ করে গর্ভবতী, শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। প্রচণ্ড তাপমাত্রার কারণে জ্বর সর্দি ও ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও চিকিৎꦛসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।