• ঢাকা
  • শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১, ২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


শিশুশ্রম আর বাল্যবিয়ে

স্কুল থেকে ঝরে পড়ছে উপকূলীয় শিশুরা


রিজাউল করিম, সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৩, ১২:৫৯ পিএম
স্কুল থেকে ঝরে পড়ছে উপকূলীয় শিশুরা
ফাইল ছবি

সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম রোধ করা যাচ্ছে না। এ কারণে বিদ্যালয় থেকে ঝরꦰে পড়ছেꦅ উপকূলীয় শিশুরা।  

শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ🐻্য অনুযায়ী, ২০২০꧟ সালে উপজেলার ৪৬টি বিদ্যালয়, ৩৬টি মাদ্রাসা ও ৩টি কারিগরি (ভোকেশনাল) বিদ্যালয়ে মোট ৫ হাজার ৬৫৭ জন শিক্ষার্থী অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। ওই বছরের পরীক্ষার্থীরাই ২০২৩ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। আর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয় মাত্র ৩ হাজার ২৯৩ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ ওই ব্যাচের কমপক্ষে ২ হাজার ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে।

শিক্ষকরা জানান, ছেলে শিক্ষার্থীদের ঝর🐻ে পড়ার প্রধান কারণ দারিদ্রতা, এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার পেছনে মূলত দায়ী বাল্যবিবাহ। বিয়ে হওয়ার পরে ছাত্রীদের পক্ষে পড়াশোনা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সচেতনতার অভাꦇবে মেয়ে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ বাল্যবিবাহ ও পারিবারিক আর্থিক দুরবস্থার কারণে দ্রুতই শিক্ষা থেকে ঝরে পꦚড়ছে। যদিও গত কয়েক বছর সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগে এ চিত্রে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। সরকার উপবৃত্তি ও বিনামূল্যে বই দেওয়াসহ নানা উদ্যোগের মাধ্যমে দেশে শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে মেয়েদের অংশগ্রহণ ও টিকে থাকার হার বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। 

তবে ব্যতিক্রম চিত্র লক্ষ্য করা যায় ছেলে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। মূলত দারিদ্র্যের কারণেই ঝরে পড়া এসব ছেলে শিক্ষার্থী মাধ্যমিকের আগেই পড়াশোনা ছেড়ে দিচ্🍷ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা। 

পরিবারের ভরণ-পোষণের তাগিদে জীবিকা উপার্জন করতে গিয়ে ঝরে পড়া এসব শিক্ষার্থী শিশুশ্রমের শিকার বলে দাবি তাদের। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ছে তারা। এ থেকে গড়ে উঠছে ছোট ছোট কি𓂃শোর গ্যাং।

উপজেলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। সংস্থাটি এ বছর উপজেলায় ৩টি বাল্যব🥃িবাহ🌠 বন্ধ করেছে প্রশাসনের সহায়তায়।

🍒ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচির (বিএলসি) উপজেলা কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, অনেক সময় অভিভাবকেরা দূরে কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মেয়ের বিয়ে দেন। ফলে সব বিয়ে রোধ করা সম্ভব হয় না।

উপজেলার প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ থেকে ২০༒২৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩৪টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়। তবে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, বহু বিয়ে প্রশাসনের অগোচরে হয়ে গেছে।

উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের সাপখালী গ্রামের এক দরিদ্র অভিভাব𒀰ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি এক আত্মীয়ের কথা শুনে সপ্তম শ্রেণিতে পড়া মেয়েকে বিয়ে দেন ২০২১ সালে। মাত্র চার মাসের মাথায় মেয়✱ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এখন মেয়েটি বাপের বাড়িতেই থাকে। তার পড়াশোনাও আর হয়নি।

সদর ইউনিয়নের (শ্যামনগর পৌরসভা) মাহমুদপুর গ্রামের জোবেদা সোহারাব মডেল✱ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক মেয়ে শিক্ষার্থীর বিয়ে হয় ২০২২ সালে। পড়াশোনাও আর হয়নি। তার বাবার দাবি, ভালো সম্বন্ধ পেয়েছেন, তাই আর দেরি না করে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন।

কৈখালী ইউনিয়নের সাপখালী গ্রামের মোস্তফা গাজী বলেন, তার ছেলেকে পারিবারিক অসচ্ছলতা ও দরিদ্রতার কারণে বেশি পড়াশোনা করাননি তিনি। সপ্তম শ্র✃েণির পর তাকে কাজের জন্য ইটভাটায় পাঠিয়ে দেন। এ বছরও ইটভাটা মালিকপক্ষের নিকট থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েছেন তাকে কাজে পাঠানোর জন্য।

জোবেদা সোহরাব মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান 𝔉শিক্ষক মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, তার বিদ্যালয়ের ৯৭ জন শিক্ষার্থী ২০২০ সালে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগেই ৯ ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। পাঁচজন ছেলে পড়ালেখা বাদ দিয়েছে।

কৈখালী শামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ সালাউদ্দিন আᩚᩚᩚᩚᩚᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ𒀱ᩚᩚᩚহমেদ বলেন, তার বিদ্যালয়ে ২০২০ সালে ৮৭ জন শিক্ষার্থী অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। এবার ৫৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। বাকি ৩৩ জন ঝরে পড়েছে। এদের অধিকাংশেরই বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রমে জড়িয়ে গেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণানন্দ মুখার্জি বলেন, তার বিদ্যালয়েও বাল্যবিবাহের কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী ঝরে🅷 পড়েছে। তবে বাল্যবিবাহের শিকার হয়েও বেশ কয়েকজন ছাত্রী এবার এসএসসি পরী𒅌ক্ষা দিয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তার হোসেন বলেন, সপ্তম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহের সংখ্যꦺা বেশি। বাল্যবিবাহ রোধে প্রশাসন থেকে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ভ𒈔্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করাও হচ্ছে। তবে উদ্বেগজনক হারে শিশু শ্রমের হার বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন দরিদ্রতার কারণে পারিবারিকভাবে শিশুরা শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়ছে।

Link copied!