ড্রাগন মূলত বিদেশি ফল হলেও এটি এখন সারা ব⛦িশ্বের বিভিন্ন দেশেই আবাদ হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের কাছেও ড্রাগন ফল পরিচিত নাম। দেশের বিভিন্ন জেলায় কমবেশি ড্রাগনের আবাদ হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। জমিতে ধান, সয়াবিন ও সবজির পাশাপাশি কেউ কেউ অন্যান্য রবিশস্য চাষ করেন। তাদের মধ্যে ব্যতিক্রম মো. বাহার মোল্লা। শখের বশে চাষ করছেন ড্রাগন ফল। বাহার মোল্লার শখের ড্রাগন ফলের বাগান বর্তমানে রূপ নিয়েছে বাণিজ্যিক বাগানে। চলতি মৌসুমে এ বাগান থেকে ১০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। ♕এরই মধ্যে বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রিও শুরু করেছেন। রসাল ও সুস্বাদু এ ফলটির চাহিদা রয়েছে স্থানীয় ক্রেতাদের মধ্যে।
এই জে🉐লার ড্রাগনের আবাদ তেমন একটা না থাকায় এই বাগানটি দৃষ্টি কেড়েছে সবার। সারি সারি ড্রাগনগাছে থোকায় থোকায় শোভাꦚ পাচ্ছে লাল রঙের ড্রাগন ফল। দেখে সবারই চোখ জুড়িয়ে যায়। ছোট-বড় সবার কাছে সুস্বাদু ও লোভনীয় এই ড্রাগন ফল নিতে এবং বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখন ছুটছেন বাহার মোল্লার বাগানে।
এদিকে 🍬অল্প পুঁজিতে ড্রা🥀গন চাষ লাভজনক হওয়ায় বাগানমালিক এ ফলের বাগান ছড়িয়ে দিতে চান জেলার সর্বত্র।
জানা গেছে, কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরকাদিরা গ্রামে লতিফ অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স অ্যান্ড ফিশারিজের মালিক বাহার মোল্লা তার অ্যাগ্রো কমপ্লেক্সের ভেতরে দুই একর জমিতে শখের বসে ২০১৮ সালে গড়ে তোলেন ড্রাগন ফলের বাগ𝔉ান। স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় চার বছরের ব্যবধানে সে বাগান এখন লাভজনক বাগানে পরিণত হয়েছে। বাগান থেকে চারা বিক্রি করেও বাড়তি আয় হচ্ছে বাগানমালিকের।
বাগানমালিক বাহার মোল্লার বলেন, “২০১৮ সালে আমি নাটোর জেলায় ঘুরতে যাই। সেখানে💞 ড্রাগনের একটি বাগান দেখে আমার মধ্যে ড্রাগন ফলের বাগান করার ইচ্ছে জাগে। ৯০ হাজার টাকা দিয়ে আমি সেখান থেকে এক হাজার চারা আনি। দুই একর জমিতে ৫৮০টি পিলারের মধ্যে চারাগুলো রোপণ করি। বাগান তৈরিতে জৈব সার এবং সামান্য কিছু অন্যান্য সার ব্যবহার করি। এতে ছয়-সাত লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। এক বছরের মাথায় গাছে ফল আসা শুরু করে। গত বছর দুই লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি। আশা করছি, চলতি মৌসুমে ১০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারব। প্রতিটি গাছ থেকে টানা ৪০ বছর ফল সংগ্রহ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ সার, ওষুধ এবং পরিচর্যা ছাড়া তেমন কোনো খরচ হবে না।”
বাহার মোল্লা আরও বলেন, “বাগান তৈরিতে যে টাকা ব্যয় হয়, তা তিন থেকে চার বছরের মধ্যে উঠে যা♏য়। এছাড়া বাগান থেকে চারা তৈরি করা যায়। প্রতিটি চারা ৩০ টাকা করে বিক্রি করি। এখান থেকে চারা নিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট বাগান গড়ে উঠেছে। আর জেলার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বাগা𓂃ন।”
“শখের বসে বাগান শুরু করলেও কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে আরও দুটি বাগান তৈরি ꦯকরেছেন তিনি। সেগুলো থেকেও ফল দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতি হাটবারে গাছ থেকে ফল সংগ্রহ কর🍷ে স্থানীয় হাটেই প্রতি কেজি ৩০০ টাকা করে বিক্রি করি।”
বꦫাহার মোল্লার আশা, ড্রাগন বাগান জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের মাটিতে বিদেশি এ ফলের বিপ্লব ঘটানো যাবে। এতে করে ফলটির নতুন করে বাজার তৈরি হবে। পুষ্টিকর এ ফলটি অল্প টা🌱কায় কিনতে পারবে ক্রেতারা।
বাগান দেখতে ও ড্রাগন ফল কিনতে আসা আবুল হোসেন, ফিরোজ উদ্দিন ও নাজমুল হোসেন বলেন, “আগেও আমরা ড্রাগন ফল খেয়েছি। তবে এ বাগানের ফল অত্যন্ত রসাল ও সুস্বাদু। বাগানটি আমাদের সবার দৃষ্টি কেড়েছে। সুস্বাদু ও লোভনীয় এই ড্রাগন ফল নিতে এবং বাগান দেখতে๊ আমাদের আসা।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিꦦচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, “ড্রাগন দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে জন্ম নেওয়া লতানো ক্যাকটাস গাছের ফল। বর্তমানে থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী। বাহার মোল্লার ড্রাগন ফলের বাগানে আমাদের একটি প্রদর্শনী আছে। আমরা সার, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। অল্প সময়ে বাগানে ফল আসা শুরু করে, তাই এটি লাভজনক। তবে বেশি পরিমাণে বাগান তৈরি হলে হয়তো ড্রাগন ফ🤡লের দাম কমে যাবে।”