রাজধানীর সবুজবাগের ✤দক্ষিণগাঁওয়ের বটতলা এলাকায় স্ত্রী তানিয়া আফরোজকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, ঘটনার দিন হত্য꧑াকারীরা এসি মেকার সেজে বাসায় ঢুকেছিল। এরপর এসি ভালো করার অভিনয় করে বাসায় ডাকাতি শুরু করে। এটা দেখে ফেলায় তানিয়া আফরোজকে প্রথমে বালিশ চাপা দেয়। পরে তার মাথায় তিনটি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে হত্যাকারীরা।
গ্রেপ্তার🅘রা হলেন এসি মেকার বাপ্পি (৩১), সুমন হোসেন হৃদয় (২২) ও রুবেল। আর তাদের গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এসেছে তানিয়া হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এর আগে শনিবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় দুই শিশুকে বাসায় বেঁধে রেখে তাদের সামনে মা তানিয়া আফরোজকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের চার দিনের মাথায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে 🉐সক্ষম হয় পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর পল্টন থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মতিঝিল বিভাগের পুলি⛎শের ডিসি আব্দুল আহাদ।
এর আগে বাপ্পিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রুবেল ও হৃদয়কে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিযꦰ়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ডꦑিসি আব্দুল আহাদ বলেন, “ঘটনার দিন বিকেল পৌনে চারটাಞর দিকে এসি মেকার বাপ্পি তার সহযোগী হৃদয়কে নিয়ে বাসার নিচতলায় যান। এরপর বাসার কলাপসিবল গেটে নাড়া দিলে তানিয়া দ্বিতীয় তলা থেকে বেরিয়ে আসেন। এসি মেরামত করা লাগবে কি না জানতে চাইলে তানিয়া তার স্বামীকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দেন। প্রথম দিকে তার স্বামী রাজি ছিলেন না। পরে অনুমতি দেন। বাসায় ঢুকে বাপ্পি ও হৃদয় আধাঘণ্টা ধরে এসি মেরামত করতে থাকেন। একপর্যায়ে বাপ্পি নিচে নেমে জিআই তার নিয়ে আসেন। পাশাপাশি ফেরার সময় তার সহযোগী রুবেলকে নিয়ে বাসায় ঢোকেন বাপ্পি। রুবেলকে দেখে তার বিষয়ে বাপ্পির কাছে জানতে চান গৃহবধূ তানিয়া। বাপ্পি তখন জানান, রুবেল তাদের সঙ্গে এসি মেরামতের কাজ করতে এসেছে। তানিয়া রুবেলকে একটি চেয়ারে বসতে দিয়ে ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, “বাসায় রান্নাবান্না আর কাজের ফাঁকে এসির কাজের তদারকি করতে থাকেন তানিয়া। একসময় তিনি দেখতে পান বাপ্পি ও রুবেল ঘরের আলমারি খুলে জিনিসপত্র এ🐻লোমেলো করছেন। তখন তিনি জোরে চিৎকার দেন। তার চিৎকার এরপরই রুবেল তানিয়ার মুখ চ✃েপে ধরে বালিশ চাপা দেন। এ সময় বাপ্পি তার ব্যাগে থাকা চাপাতি বের করে তানিয়ার মাথায় তিনটি কোপ এবং পিঠে একটি কোপ মারেন। এতে নিস্তেজ হয়ে যান তানিয়া। হত্যার দৃশ্য ওই সময় তানিয়ার মেয়ে মাইমুনা জাহান দেখে ফেলে কান্না শুরু করে। তার সঙ্গে কান্না শুরু করে ১০ মাসের বাচ্চা তানভীরুল ইসলাম। তাদের কান্নাকাটি দৃশ্য দেখে হত্যাকারীরা স্কচটেপ দিয়ে তাদের মুখ বেঁধে দেয়। পরে তাদের হাত-পা বেঁধে রাখে তারা। এরপর হত্যাকারীরা আলমারিতে টাকা স্বর্ণালংকার, তানিয়ার কানের দুল, মেয়ের গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন, টাকা-পয়সা, মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চলে যায়।”
আব্দুল আহাদ বলেন, “তারা মূলত বাসায় এসেছিল ডাকাতির উদ্দে♋শ্যে। কিন্তু এসি মেরামত করা তাদের শুধু একটি নাটক ছিল। এ রকম ঘটনা এর আগে তারা ঘটিয়েছে কি না এখনও জানা যায়নি। তবে এর আগে বাপ্পি এসি মেরামতের আড়ালে কয়েকটি বাসায় এমন টাকা-পয়সা ডাকাতি করেছেন বলে জানিয়েছেন।”
আব্দুল আহাদ আরও বলেন, “তানিয়ার স্বামী মইনুল ইসলাম ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতাল টেকনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত। তিনি গত ২২ মার্চ কর্মস্থলে চলে যান। বাসায় আর কেউ ছিল না। বাসাটিতে এসি লাগানোর সময় বাপ্পীকে আনা হয়েছিল𓆏। আর সেই কারণেꦓ বাসায় এসি রয়েছে বলে জানতেন বাপ্পি।”