সিনেমায় কোনো কাজ নেই, ‘ওপরে হাসি, ভেতরে কান্না বলে মন্তব্য করেছেন সিনেমার প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মোহাম্মদ আবু জাফর। তিনি বলেন, ‘সংগঠনের ৮০ শতাংশের বেশি সদস্য বেকার। জুলাই থেকে একেবারেই কাজ নেই। সব সেক্টর ভালোভাবে চললেও প্রোডাকশন টি✱ম এখনো পুরোপুরি শুটিংয়ে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।’
এসময় তিনি আরও বলেন, “অনেক প্রোডাকশন বয় এখন বয়গিরি করেও টিকে থাকতে পারছে না। এই অনিয়মিত আয় দিয়ে জীবন চালানো সম্ভব নয়। এই 🎉পেশায় অনিশ্চয়তা বাড়ছে। আমার কথাই যদি বলি, দিনে ভালো থাকি, রাতে মুখে হাসি থাকে না। এক মাস হলো কাজ নেই। একটা টাকাও ইনকাম হয়নি। দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। আমাদের সবার একই চিন্তা। ওপরে হাসি, ভেতরে কান্না। অনেকে এখন এই পেশাই হয়তো ছেড়ে দিচ্ছেন। কী করবে, 🧸মাছ–মাংস না জুটুক, ডালভাত খাওয়ার নিশ্চয়তা তো লাগবে!”
প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্যমতে, তাদের সদস্য ২৫০ জন। তবে ঘুরেফিরে ২০-৩০ জনের কাজ রয়েছে𒈔। বাকিদের বেশির ভাগই এখন বেকার। সংসার চালানোর জন্য তাঁরা কেউ চা-পান, কেউ তরিতরকারি বিক্রি, কেউ ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোসহ নানা পেশায় যুক্ত হয়েছেন।
ঢাকার বেগুনবাড়ী এলাকায় হাতিরঝিলের পাশে চা-পান বিক্রি করেন হা♓ফিজুর রহমান। তিনি শুটিংয়ের প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। শুটিং না থা🌼কায় জীবিকা নির্বাহের জন্য এখন দোকানটি দিতে বাধ্য হয়েছেন।
১৯৯৭ সালে প্রোডাকশন বয় হিসেবে কাজ শুরু করেন হাফিজুর। পরে যোগ্যতাবলে হয়ে যান ম্যানেজার। আজিজুর রহমান, মতিন রহমান, মোস্তাফিজর রহমান মানিকসহ অনেক পরিচালকের সঙ্গেই কাজ করেছেন নিয়মিত। আꦆজ সেই দিনগুলোকে মনে হয় স্বপ্ন। সেই সময় পরিবার নিয়ে ভালোভাবেই খেয়েপরে বেঁচে থাকতে পেরেছেন। তারপর সময় যত এগিয়েছে, জীবন-জীবিকা নিয়ে তত বেড়েছে অনিশ্চয়তা। কী করবো জীবন যাপন করতে হবে। এখন তিন থেকে চার দিন কাজ থাকে। বেঁচে তো থাকতে হবে। কাজ যখন থাকে না, পান–সিগারেট বিক্রি করি। মাস শেষেই পরিবারে টাকা পাঠাতে হয়। খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছি।’
২৫ বছর ধরে প্রꦓোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন রিপন মিয়া। একটা সময় ছিল নিয়মিত কাজ হতো। কাছ থেকে তারকাদের দেখতেন নিয়মিত। কারও সঙ্গে ভালো পরিচয়ও ছিল। সেগুলোই তাঁকে এই পেশায় থেকে যেতে প্রলুব্ধ করে। সেই সময়ে কাজ করে কিছু টাকাও জমিয়েছিলেন। পরে পাঁচ–ছয় বছর ধরে কাজ কমে যাওয়ায় সেসব টাকাও সব শেষ। মোটামুটি শুটিং করে চললেও সম্প্রতি কাজ নেই। তাই উত্তরা এলাকায় বাধ্য হয়ে ভ্যানগাড়ি নিয়ে তরিতরকারি বিক্রি করে সংসার চালান।
রিপন বলেন, ‘আমরা প্রোডাকশনের লোকেরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। আমাদের আয় কম। যেকোনো সমস্যায় প্রথম চাপটা আমাদের ওপরই এসে পড়ে। ২৫ বছর ধরে মিডিয়া🌌য় কাজ করছি। কোনো দিনও ভাবিইনি, জীবনে এই দুঃসময় আসবে, বেকার হয়ে যাব! পরিবার নিয়ে অভাব–অনটনে থাকতে হচ্ছে। আমাদের স্বীকৃতি 𝕴নেই। দেখার কেউ নেই। এখন হকারও বেড়েছে। এখানেও টিকে থাকা কঠিন।’
মগবাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা হিসেবেও কাউকে কাউকে দেখা যায়। এ ছাড়া অনেকেই এফডিসিতে এসে কাজের জন্য সকাল–সন্ধ্যা বসে থা☂কেন। তাদের একজন এরশাদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেকেই কাজ না থাকায় গ্রামে চল꧋ে গেছে। আমরা ধারদেনা করে চলছি।’
রিপনের সাবেক এক সহকর্মী চা বিক্রি করꦬেন। তিনি বলেন, ‘মিডিয়ায় কাজ করলে আমাকে👍ও এখন না খেয়ে থাকতে হতো।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন বলেন, ‘করোনার সময়ের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছি। তখন অনেকেই সহায়তা কর🐓েছে। বাচ্চার দুধ কিনেছি। নিজেরা ডালভাত খেয়েছি। কিন্তু এখন এমন অবস্থা, দুঃখ বলার মতো কেউ নেই। আমাদের এই পেশাই একেবার উঠিয়ে দে𒐪ওয়া উচিত।’