স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’ (ইবি)। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের (তৎকালীন যশোর) মধ্যবর্তী শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে এ ক্যাম্পাসের যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ ৪৩ বছর পেরিয়ে ৪৪ বছরে পা রাখতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিভাগ বৃদ্ধি, জনবল নিয়োগ, খেলাধূলায় সোনালী অর্জন ও বিদেশি শিক্ষা𝄹র্থী ভর্তিসহ নানা অর্জন রয়ে♔ছে এখানে। তবে গবেষণাকর্মে এগুতে পারেনি। পিছিয়ে আছে পূর্ণাঙ্গ আবাসিকতা নিশ্চিতেও।
১৯৮১ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক এ এন এম মমতাজ উদ্দীন চৌধুরীকে প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এক অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে এবং আই আই ই আরকে ইবির অধীনে করে কুষ্টিয়ায় স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়কে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সেখানে ও আই সি এর অর্থানূকুল্যে ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৯৮৩ সালের ২১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে বোর্ড বাজারে দ্বিতীয়বার ভিত্তি-প্রস্তর স্থাপন করা হয়। এখানে প্রায় দুই বছরে অনুꦯষদ ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ছাত্রাবাস ও অত্যাধুনিক মসজিদ অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়।
কুষ্টিয়া ও গাজীপুরে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের যথাক্রমে ৭ ও ৩ বছর পর ১৯৮৬ সালের ২৮ জুন ধর্মতত্ত্ব অনুষদের অধীনে আল-কুরআন ও দাওয়াহ বিভাগে এবং সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৭৫ জন করে মোট ৩০০ শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথম শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে প্রশাসন। মোট ৩০০ শিক্ষার্থী ও প্রতি বিভাগে দুইজন করে শিক্ষক নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রতিষ্ঠিত সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠের আ𒆙নুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু হয়।
১৯৮৩ সাল থেকে শুরু করে ২০২২ ꧅সাল পর্যন্ত ইবি পেরিয়েছে ৪৩ বছর। এ দীর্ঘ পথ চলায় ইবিতে অর্জনেরܫ খাতা যেমন ভারি হয়েছে তেমন পরিকল্পনা অনুযায়ী অনেক সফলতা অর্জিত হয়নি।
৪৪ বছরে পদার্পণের এ দীর্ঘ সময়ে ইবিতে মোট ৩৬টি বিভাগ, একটি ইনস্টিটিউট ও স্কুল রয়েছে। ১৭৫ একর নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এ ক্যাম্পাসে বর্তমানে ২টি প্রশাসনিক ভবন, একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও ৬ট🔯ি একাডেমিক ভবন রয়েছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম মিলনায়তন ও কেন্দ্রীয় মসজিদ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট ভবন, চিকিৎসা কেন্দ্র ও প্রকৌশল ভবন।
শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৮টি হল। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীর জন্য ৫টি ও মেয়ে শিক্ষার্থীর জন্য ৩টি হল। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মাণাধীন রয়েছে ৪টি দশ তলা হল। যেখানে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত হবে। এছাড়া𒁃ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটিবিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রয়েছে আইসিটি সেল এবং গবেষণার জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় ল্যাবেꦗরটরি।
কেন্দ্রীয় ল্যাবেটরিতে রয়েছে বিশ্বের গবেষণাধর্মী অত্যাধুনিক মেশিন যা দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যা𒁃লয়ে অনুপস্থিত। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বর্তমানে ইবির পরিবহন পুলে মোট ৪৯টি গাড়ি। যা সকলের নিয়মিত যাতায়াত সুবিধা প্রদানে ভূমিকা💧 রাখছে।
বর্তমানে ৩৬টি বিভাগে ইবিতে অধ্যয়নরত রয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থী। প্রায় ৪০০ জনের বেশি শিক্ষক শিক্ষাদানে নিয়োজিত আছেন। এছাড়া ৪৯৪ জন কর্মকর্তা, ১৩২ জন সহায়ওক কর্মচারী এবং ১৫৮ জন সাধারণ কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রেখে চলেছেন।
বর্তমাജনে ইবির মোট শিক্ষকের প্ᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚরায় ৩৪ জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও দেশের ভেতরে পিএইচডি, গবেষণাকর্ম ও পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রির জন্য শিক্ষা ছুটিতে আছেন।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ বিষয়ক বিশেষ গবেষণা প্রকল্প অনুদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষক মোট ৬টি প্রজেক্টের জন্য মনোনীত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ পর্যন্ত ৫৯৯ জনকে পিএইচডি এবং ৭৫৮ জনকে এম ফিল ডিগ্রি প্রদান করেছে।
বর্তমানে ২৫০ জন পিএইচডি এবং ৯৫ জন 𒁃এমফিল গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থা এডি সায়েন্টিফিক ইনড🔯েক্স বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় ইবির বিভিন্ন বিভাগের ১৭ জন শিক্ষক স্থান পেয়েছিলেন।
ইবিতে ২০১৬-১৭ সেশন থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা উন্মুক্ত করা হয়। বর্তমানে অনার্সে ১৫ জন, মাস্টার্সে একজন ও পিএইচডিতে ৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছ꧃েন। এ পর্যনꦇ্ত মোট ২১ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ইবি থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত মোট চারটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম সমাবর্তন ১৯৯৩ সালের ২৭ এপ্রিল, দ্বিতীয় সমাবর্তন ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর, তৃতীয় সমাবর্তন ২০০২ সালে ২৮ মার্চ এবং সর্বশেষ চতুর্থ সমাবর্তন ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশসহ ও বিশ্বের বꦇিভিন্ন অঙ্গনেও রয়েছে ইবির অর্জন। ইবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্রী ইসরাত জাহান ইভা দুইবার দেশের দ্রুততম মানবী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ভলিবল প্রতিযোগিতায় ৯বার, ফুটবল প্রতিযোগিতায় তিনবার এবং অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় চারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ইবি।
এছাড়া ভলিবল ও ক্রিকেটে প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে তিনবার রানার্স আপ ও তিনবার দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। সম্প্রতি বঙ্♑গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ-এর তৃতীয় আসরের হ্যান্ডবল ফাইনাল ও বাস্কেটবল ইভেন্টেও🤪 চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইবি।