• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১,

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


ঈদ ও বৈশাখে ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রির আশা


হাসান সিকদার, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
ঈদ ও বৈশাখে ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রির আশা

ঈদ ও পহেলা বৈশাখের উৎসবকে সামনে রেখে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক মন্দাভাব কাটিয়ে ওঠার আশা করছেন টাঙ্গা𝓰ইলে𓆉র তাঁতের শাড়ি ব্যবসায়ীরা। এ দুই উৎসব ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে তাঁতপল্লীতে। ক্রেতার চাহিদা মেটাতে দিনরাত বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কারিগররা। গরমের কথা মাথায় রেখে এবার শাড়িতে এসেছে বৈচিত্র্য আর নতুনত্ব।

আলো আঁধারের ছোট-বড় তাঁত শাড়ির কারখানায় এখন কারিগরদের ব্যস্ততা। ভোর থেকে চলছে 𝓡মাকু আর শানার ঠোকাঠুকির শব্দ। তাঁতীর হাত ও পায়ের ছন্দে তৈরি হচ্ছে এক একটি বর্ণিল শাড়ি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় এখন তাঁতপল্লীতে। অর্ডার অনুযায়ী শাড়ির যোগান দিতে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন কারিগররꦚা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৪০০ কোটি টাকার শাড়ি ও তাঁতের নানা পোষাক বিক্রির আশা করছে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স। এজন্য চাহিদা অনুযায়ী তাঁতের কাপর তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নানা ধাপের কারিগরা। দেশে🅰র পাশাপাশি বিদ💃েশে রপ্তানি হচ্ছে টাঙ্গাইলের শাড়ি। গত বছর ভারতেই রপ্তানি হয়েছে ৭৪ লাখ পিস শাড়ি। এবার রপ্তানি হয়েছে ৭৫ পিস লাখ শাড়ি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সুতি শাড়ি ৬০০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, জামদানি, হাফ সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্ক ও সফট সিল্ক ১ হাজাཧর থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।

তাঁতশ্রমিক রশিদ মিয়া বলেন, “বর্তমানে তাঁতের অবস্থা তেমন ভালো না। পরিবার নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি। সব কিছুর দাম বাড়তি। আমাদের যে মজুরি দেয় তা দিয়ে সংসা🔜র তেমন চলে না। তারপরও আমরা সংসার চালাতে কাজ করে যাচ্ছি। তবে আশা করছি সামনে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তাঁতের শাড়ি ভালো বিক্রি হবে।”

মুসলিম মিয়া বলেন, “একটা শাড়ি তৈরি করতে দুই দিন সময় লাগে। আমরা বর্তমানে পৌঁনে ৭০০ টাকা মজুরি পাচ্ছি। এ দিয়ে আর সংসার চলে না। এ পেশা যে ছেড়ে দিবো, অন্য কাজও পারি না। পেটের তাগিদে এ পেশাকে ধরে রেখেছি। মহাজনে ঠিকমতো কাপড় বিক্রি করতে পারলে আমাদের কাজ দেয়🌺। আর বিক্☂রি করতে না পারলে আমাদের কাজ দেয় না। এভাবেই চলছে আমাদের কাজকর্ম। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই আমাদের সহযোগিতা করা হোক।”

আরফান আলী বলেন, “আমি এ পেশায় কাজ করি ৩৫ বছর ধরে। আমাদের টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি হয়। একটি জামদানি শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ দিন। বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। মজুরি দেয় মাত্র এক হাজার টাকা। ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। বেশির ভাগ কারিগর এখন এ পেশা থেকে চলে গেছেন। আমি 𒊎অন্য কোনো কাজ আর শিখি নাই। এজ🔯ন্য আমি যেতে পারি নাই। এভাবে আর আমাদের সংসার চলছে না। আমাদের মজুরি বাড়ানো হলে পরিবার নিয়ে একটু ভালোভাবে চলতে পারব।”

ঢাকা থেকে শাড়ি কিনতে🧸 এসেছেন রাবিয়া খাতুন। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “টাঙ্༺গাইলের তাঁতের শাড়ি কোয়ালিটি ভালো। গতবারের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি তারপরও টাঙ্গাইলের শাড়ি অনেক ভালো মানের সেজন্য নিয়ে যাচ্ছি।”

আরেক ক্রেতা সুমাইয়া শিমু সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দুটি তাঁতের শাড়ি নিয়ে 🅘গেলাম। পরিবারের জন্য নিয়েছি তিনটি। শাড়ির মান ও ডিজাইন অনেক ভালো। এজন্য প্রতিবছর টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি কিনতে আসি। আগের থেকে এবার দাম বেশি রাখছে। দাম একটু কম হলে ভালো হতো।”  

পাথরাইল এলাকার তাঁতশিল্পের মালিক গোবিন্দ সূত্রধর সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বর্তমানে আমাদের অবস্থা খুব একটা ভালো না। পাওয়ার লুমের কারণে হ্যান্ড লুমের তৈরি শাড়ি কম চলে। হ্যান্ড লুমের শাড়ির দাম বেশি। এগুলো এখন খুব কম চলে। ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় পাওয়ার লুমের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। হ্যান্ড লুমের শাড়ি তৈরি করতেই মজুরি দিতে হয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এজন্য আমাদের শাড়ি কম চলে। আমরা তারপরও আশা করছি এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ পাশাপাশি আমাদের বিক্রি ভালো হবে। গতবারের থেকে এবার ব💖েশি বিক্রি ♛হবে।”

টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পলাশ চন🎐্দ্র বসাক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি এবার নতুনত্ব এসছে। বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এবার মোটামুটি সবাই ঘুরে🃏 দাঁড়াতে পারবে।”

জেলা শাড়ী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, “এবছর ঈদে ও পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আমরা যা উৎপাদন করেছি তা আমরা বাজারে ছেড়ে দিয়েছি। পাইকারি বিক্রিও মোটামুটি শেষ হয়ে গেছে। আমরা আশাবাদী গত বছরের চেয়ে 𝓡এꦬবার আমাদের বিক্রিটা ভালো হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই মানুষের মাঝে ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে এজন্য আমরা আশাবাদী বিক্রি ভালো হবে।”

সংবাদ প্রকাশকে তিনি আরও বলেন, “এ বছর আমাদের রপ্তানিও বেশি হয়েছে। এবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে ৭৫ লাখ পিস শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। এꦯ রপ্তানিটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। শুধু আমাদের দেশের বাজার দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। এই শিল্পটাকে যেন আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এজন্য সরকারের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা অত্যন্ত দরকার।”

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের লিয়াজোঁ অফিসার রবিউল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “তাঁতীদের আমরা চলমান প্রক্রিয়ায় ঋণ প্রদান করি। প্রণোদানা🧜মূলক ঋণ হিসেবে ৫% ঋ♚ণ সার্ভিস চার্জে আমরা তাঁতীদের সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা ঋণ দিতে পারি।”

Link copied!