সাফল্যেরಌ ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা মোংলা বন্দর ৭৪ বছরে পদার্পণ করেছে। রোববার (১ ডিসেম্বর) দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে কর্তৃপক্ষ ব্যাপক আয়োজন করেছে।
রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সব জাহাজ থেকে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। ‘মোংলা বন্দর দিবস’ উপলক্ষে এদিন সকাল ১০টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার পাশাপাশি সেরা কাজের স্বীকৃতি (সম্মাননা) ও বিশেষ অবদানের🌟 জন🌟্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯ প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলার ৭৪ বছরের দীর্ঘ যাত্রায় নানা সংকটের মধ্যেও দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। নৌ, সড়ক ও রেলপথ এসব অবকাঠামো তৈরি থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সহজে এখন পণ্য পাঠানোর পাশ𒁏াপাশি প্রতিবেশী ভারত, নেপাল ও ভুটানের জন্যও এই বন্দরের ব্যবহার দারুণ সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মোংলা বন্দরকে এগিয়ে নিতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গতিশীল। বন্দরে কনটেইনারবাহী জাহাজের আগমন বেড়েছে। গত ২০২২-২৩ ꦡঅর্থবছরের তুলনায় সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরে বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ, কার্গো পরিবহনে ৯ দশমিক ৭২ ভাগ, কনটেইনার পরিবহনে ১৬ দশমিক ৭৮ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ছাড়া এই বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি বেড়েছে🍌 ১৩ শতাংশ। সক্ষমতা বৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বন্দরের ৪টি প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে পশুর চ্যানেলের ইনার বারে (জেটিসংলগ্ন) ড্রেজিং শেষ হলে বন্দরের জেটিতে ১০ মিটার পর্যন্ত ড্রাফটের (গভীরতা) জাহাজ হ্যান্ডলিং সুবিধা সৃষ্টি হবে।
এ ছাড়া ‘আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্প’এর মাধ্যমে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত ꦑরয়েছে। এই প্রকল্প শেষ হলে বছরে 🐈১ কোটি ৫০ লাখ টন কার্গো, ৪ লাখ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তৈরি হবে। এ ছাড়া বন্দরে চলমান দুটি জেটির নির্মাণকাজ শেষ হলে বছরে আরও দুই লাখ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর খুলনা জেলার চালনা এলাকায় যাত্রা শুরু হলেও ভৌগোলিক কারণে মাত্র ৩ বছরের মাথায় বন্দরটির কার্যক্রম সরানো হয় বাগেরহাটের মোংলায়। মূলত ১৯৫০ সালের ১১ ডিসেম্বর ‘দ্য সিটি অব লিয়নস’ নামের ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজের আগমনের মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। সಞুন্দরবনের পশুর নদের জয়মনির ঘোল এলাকায় জাহাজটি নোঙ্গর করে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব মো. মাকরুজ্জামান বলেন, এটি প্রথমে একটি সরকারি অধিদপ্তর হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ১৯৭৭ সালের মে মাসে ‘চালনা বন্দꦆর কর্তৃপক্ষ’ নামে একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এই বন্দর। ১৯৮৭ সালের মার্চে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘মোংলা বন্দ♛র কর্তৃপক্ষ’।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বন্দরের প্রধান ꦡচ্যালেঞ্জ ছিল দীর্ঘ নৌপথের নাব্যতা সংকট। সমুদ্রগামী জাহাজ চলাচলের উপযোগী গভীরতা হারিয়ে ফেলায় ১৯৮০ সাল থেকে বন্দরটিতে বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিভিন🍰্ন সময় নৌপথটি খনন করা হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নিয়মিতভাবে খননের মাধ্যমে এই বন্দরকে গতিশীল করে তোলা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। বন্দর চ্যানেলে বিদেশি জাহাজ চলাচলের সুবিধার জন্য ৬৯টি নেভিগেশন বয়া স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে বন্দরের জেটি, মুরিং বয়া ও অ্যাংকোরেজে একই সঙ্গে ৪৭টি জাহাজ নোঙরের সুবিধা রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সুবিধার্থে বন্দরকে ঘিরে এখন ট্রানজিট শেড, ওয়্যারহাউস, কনটেইনার ইয়ার্ড, হিমায়িত খাদ্য সংরক্ষণের ১৬১টি রিফার প্লাগপয়েন্ট, কার পার্কিং ইয়ার্ড, ১৩৬টি আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি, টাগবোটসহ ৩২টি সহায়ক জলযান রয়ে🍰ছে।