পাবনার চাটমোহরে পিকনিকের কথা বলে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শিক্ষার্থীদের আদালতে নিয়ে একটি মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ালেন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনা জানাজানি হলে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকেরা। পরে সন্ধ্যায় বিদ্যালয় চত্বরে অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেꦐ।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের পাচুড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে🐼 এমন ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ ব♌িদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করে সকল ছাত্র ছাত্রীদের তিনটি বাস ভাড়া করে পাবনা শহর অভিমুখে রওনা হন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকরা। ছাত্রছাত্রীদের পাবনা রানা ইকো পার্কে পিকনিকের কথা বলা হলেও প্রধান শিক্ষক তাদের নিয়ে যান আদালতে। এরপর সেখানে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছে মতো বয়ান শিখিয়ে দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দিতে বলেন।
এদিকে দীর্ঘ সময় আদালত প্রাঙ্গনে অবস্থান করায় অনেক ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে বাসায় ফোন করে তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি এলাকার সকল অভিভাবকদের এবং এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে🐟 পড়লে সবাই ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসার পর অভিভাবক ও শিক্ষক পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।
শফিকুল ইসলাম নামের এক অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়ে এই বিদ্যালয়ে ক্লাস টেনে পড়ে। কয়েকদিন আগে আমার মেয়ে সানজিদা মিম আমাকে বলল আব্বু আমাদের স্কুল থেকে স্যারেরা পিকনিকে নিয়ে যাবে, এজন্য দুইশ টাকাও চাঁদা আমার থেকে নিয়েছে। আজ দুপুরে ওরা পিকনিকে যাওয়ার পরে জানতে পারলাম হেড মাস্টার ছেলে মেয়েদের পাবনা কোর্টে নিয়ে গে🌱ছে। আমি তো বিষয়টি জানার পরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েꦇছি। পিকনিকের কথা বলে কোর্টে কেন নিয়ে গেল আমার মেয়েকে। আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিচার চাই।”
সালমা খাতুন নামের অপর এক অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়ে এই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। আমি শুনলাম স্কুলের স্যারেরা আমার মেয়েসহ সকল ছাত্রছাত্রꦑীদের পিকনিকের কথা বলে পাবনা কোর্টে নিয়ে গেছে। কেন এদের কোর্টে নিয়ে গেল আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। দুপুর থেকে মেয়ের অপেক্ষায় স্কুলে এসে বসে আছি, আমার মেয়েটা কখন আসবে।”
এবিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিদ্যালয়ের মেয়েদের ইভটিজিং করার ঘটনায় কয়েক মাস আগে চাটমোহর থানায় আমি একটি অভিযোগ করি। বর্তমানে অভিযোগটি পাবনা কো🌼র্টে বিচারাধীন। সেই মামলায় সোমবার ১৫ জন মেয়ের আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের তারিখ ধার্য ছিল। পাবনায় মেয়েদের সাক্ষ্য প্রদানে𓆏র বিষয়টি সকল ছাত্রছাত্রীরা জানার পরে তারাও তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে পাবনা কোর্টে যেতে চায়।”
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই দুইশ টাকা করে চাঁদা তুলে এদিন তারা পাবনা রানা ইকোপার্কে পিকনিক করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারাই বাস ভাড়া করেছে, তারাই সব আয়োজন করেছে। আমি শুধু পিকনিক স্𝔉পটে যাওয়ার আগে কোর্টে কয়েকজন মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়ে আদালতে সেই মামলার সাক্ষ্য প্রদান করার ব্যবস্থা করিয়েছি। বিষয়টি আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারকে আগেই অবহিত করেছিলাম।”
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে আগেই বলেছিলেন পাবনা কোর্টে একটা সাক্ষ্য প্রদান আছে শিক্ষার্থীদের। তবে পিকনিকের বিষয়টি তিনি আমাকে কি🌳ছু বলেননি। কোর্টে সাক্ষ্য প্রদানের কথা বলে সকল শিক্ষার্থীদের কোর্টে নিয়ে যাওয়া কাজটি তিনি মোটেও ঠিক করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সভা🍒পতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালিম🅺 বলেন, “বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। পিকনিকের কথা বলে শিক্ষার্থীদের কোর্টে নিয়ে যাওয়ার কাজটি মোটেই ঠিক হয়নি। পরবর্তীতে আমরা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”