বিজয় মিছিলে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন আল আমিন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৪, ০৬:৩৪ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে বিজয় মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন আল আমিন (২৯)। বিজয় উল্লাসকে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে করেছিলেন লাইভ। কিন্তু হঠাৎ করেই গোলাগুলি♌র শব্দের মধ্যে তার লাইভটি নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি আল আমিনকে। বিজয় মিছিলের ১২ দিন পরে বুলেটের ক্ষতচিহ্নসহ তার মরদেহ পাওয়꧙া যায় রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বিঝারি ইউনিয়নের দক্ষিণ মগর এলাকার ইসমাইল মীর মালত ও জিয়াসমিন বেগম দম্পত্তিরꦿ বড় ছেলে মীর মোহাম্মদ আল আমিন। গত পღাঁচ মাস আগে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর ঢাকাতেই থাকতেন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর সাভার এলাকায় আনন্দ মিছিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলেন আল আমিন। এসময় তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট থেকে লাইভ করছিলেন। হঠাৎ লাইভটি বন্ধ হওয়ার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ হন। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে খুঁজেও সন্ধান মেলেনি তার। দীর্ঘ ১২ দিন পর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার মরদেওহ খুঁজে পান স্বজনরা। পরে গত শনিবার (১৭ আগস্ট) আল আমিনের মরদেহ নিজ বাড়িতে আনা হয়।

আ♚ল আমিনের বোন আফলান সিনথিয়া বলেন, “আমার ভাই ৪ বছর বয়স থেকে পরিবারের সঙ্গে সৌদি আরব থাকতেন। পরিবারের সবাই এক বছর আগে বাংলাদেশে ফিরলেও আল আমিন এসেছিল ৪ মাস আগে। দেশে আসার পরে ঢাকার সাভার বাইপাল এলাকায় বাবাকে নিয়ে একটি মুদি দোকান পরিচালনা করত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একজন সমর্থক ছিল আল আমিন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে দুপুরের দিকে আল আমিন বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ করে তার ফেসবুক আইডিতে বিজয় উল্লাস লাইভ করেন। সেই লাইভ আমꦉরা সবাই দেখেছি।

সিনথিয়া আরও বলেন, “আমার ভাই আল আমিনের বিজয় মিছিলে করা লাইভটি ছিল ৬ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মানুষ স্লোগান দিচ্ছে, পালাইছেরে পালাইছে, শেখ হাসিনা পালাইছে। অন্যদিকে অনেক মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে যাচ্ছিল। ভিডিওতে আরও দেখেছি, ভ্যানে করে আহত অথবা নিহতদের নেওয়া হচ্ছে। এর কিছু সময় পরে আমার ভাই আল আমꦐিনের ফেসবুক লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।”

শরীয়তপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক আমিন মোহাম্মদ জিুত বলেন, “আমরা চাই মীর মুহাম্মদ আল 💦আমিনকে রাষ্ট্রীয় সম্মানের সহিত সমাহিত করা হোক। এছাড়াও ক্ষতিপূরণসহ তার নামে জেলার কোনো স্থাপনার নামকরণ করা হোক। যাতে আগামী প্রজন্ম আল আমিনের এই আত্মদানের কথা চিরদিন মনে রাখে।”