শতবর্ষ পুরোনো ‘লালখাতা’ থেকেই ‘হালখাতা’

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২২, ০১:১৬ পিএম

 

পয়লা বৈশাখ মানে বাংলা বছরের প্রথম দিন। নববর্ষের এই দিনে পুরোনোকে পেছনে ফেলে নতুনকে, নতুন বছরকে বরণ করা হয়। সেই প্রথা মেনেই বৈশাখের দিনে হাল🌜খাতার প্রচলন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ‍‍‘হাল‍‍’ কথার অর♑্থ হলো নতুন। নববর্ষে নতুন খাতায় ব্যবসার হিসার তোলার যে নিয়ম পালন করা হয়, সেটাই ‘হালখাতা’ হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তী সময়ে সেই হিসাবের লাল খাতা বা খেরো খাতার নাম ‘হালখাতা’ হয়ে যায়।

ব্যবসায়ীরা সব দেনা-পাওনা মিটিয়ে💎 পুরোনো হিসাবꦬকে বন্ধ করে নতুন হিসাবের খাতা খোলে। আগামী নববর্ষের দিন আবারও খুলবে হালখাতা।

ইতিহাসের পাতায় হালখাতা সম্পর্কে বিবরণে পাওয়া যায়, লাঙলের ব্যবহার শেখার পর মানুষ স্থায়ী বসবাস শুরু করে। কৃষিজাত দ্রব্য বিনিময়ের প্রথা শুরু হয় তখন। এই ꧑লাঙল বা হালের মাধ্যমে চাষের ফসল উৎপ🏅ন্ন দ্রব্যসামগ্রী বিনিময়ের হিসাব একটি খাতায় লিখে রাখা হতো। সেই খাতার নাম ছিল হালখাতা। 

মুঘল আমলে সম্রাট আকবর হালখাতার অনুকরণে জমিদারদের কাছ থেকে বকেয়া রাজস্ব আদায়ের জন্য ‘পুণ্যাহ’ চালু করেন। প্রত্যেককে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতেন। এরপর দিন অর্থাৎ পয়লা বৈশা♓খে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিব🦂াসীদের মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন।

একই নিয়ম মেনে বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খান পুণ🐈্যাহ প্রচলন করেন। এ সময় খাজনা বা রাজস্ব পরিশোধ করতেন সবাই। প্রাচীনকালের হালখাতা নবাবি আমলে নাম পাল্টে হয় পুণ্যাহ। কিন্তু পরে হালখাতা নামটিই বেশি ꧟প্রচলিত হয়।

এই রীতি থেকেই এসেছে বর্তমান সময়ের হালখাতার প্রচলন। নতুন হিসাব বইয়ে হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়াই হচ্ছে হালখাতা। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকায় সব স্থানেই পুরোনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতা খোলার পাশাপাশি দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের আপ্যায়নে  মিষ্টান্নের ব্যবস্থাও করেন। বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানে এই রীতি চালু ♈রয়েছে এখনো।

ব্যবসায়ীদের হালখাতা লেখারওꦜ নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। দিনব্যাপী হালখাতার আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন থাকলেও নির্দিষ্ট সময়েই লেখা হয়। সেই সময় বিভিন্ন ধরনের শুভকর্ম সম্পন্ন হয়। পঞ্জিকা অনুযায়ী, এই বছর নববর্ষে ৪টি সময় হালখাতা লেখার সময়কে শুভ বলে মনে করা হচ্ছে। বৈশাখের সকাল ৮টা ২০ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ৪৯ মিনিট, দুপুর ১টা ১৫ মিনিট থেকে দুপুর ২টা ৪৪ মিনিট। বিকেল ৪টা ৪৮ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ♏১৪ মিনিট।

রাজধানীর পুরান ঢাকার সদরঘাট, তাঁতীবাজার, শ🐼াঁখারিবাজারের জুয়েলার্স ও অলংক🐎ার তৈরির কারখানা, শ্যাম বাজার, চবাজার ও ইসলামপুরের কাপড়ের দোকানে প্রতিবছরই হালখাতার আয়োজন করা হয়।