দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০ নভেম্বর মাঠে গড়িয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম বিশ্বকাপ। মরুর দেশের গরমের কথা মাথায় রেখে প্রচলিত সময় ছেড়ে শীতকালে মাঠে গড়িয়েছে বিশ্বকাপের ২২তম আসর। দেখতে দেখতে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এবারের আসর। এখন অপেক্ষা সেমিফাইনালের বাধা পেরিয়ে ফাইনালে শিরোপা কার হাতে ওঠে তা দেখার। কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে তৈরি হওয়া বিত🅰র্ক চাপা পড়েছে মাঠের খেলায়। হয়তো বিশ্বকাপের আয়োজকদের এটাই দিচ্ছে স্বস্তি।
কঠিন নিয়মের বেড়াজালে শুরু হয়েছিল কাতার ব❀িশ্বকাপ। বিধিনিষেধের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বিশ্বকাপ দেখতে আসা সমর্থকদের। প্রভাবটাও অবশ্য স্পষ্ট। বিশ্বকাপের আগে ১২ লাখ সমর্থক বিশ্বকাপ উপভোগ করতে আসবে বলে ধারণা করেছিল কাতার। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ দর্শক সরাসরি বিশ্বকাপ উপভোগ করেছে। বিধি নিষেধ না থাকলে হয়তো দর্শক সংখ্যায় আগের সব আসরকে ছাড়িয়ে যেতে পারতো কাতা🍰র।
বিশ্বকাপ শুরুর বহু আগে থেকেই কাতারের বিরুদ্ধে উঠেছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ। ইসলামি নীতিতে চলা দেশটিতে প্রকাশ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ। প্রথমে স্টেডিয়ামে মদ্যপানের অনুমতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল সেই নিয়ম। এছাড়াও অবাধ মেলাম𝔉েশাও নিষিদ্ধ। ফলে অনেক পশ্চিমা দর্শকের জন্য কাতার বিশ্বকাপ উপভোগ করতে যাওয়াটা ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই ভীতির কারণে টিকিট কাটলেও অনেকেই যাননি কাতারে। তার প্রভাবে পড়েছে দর্শক সংখ্যায়। মাঝে মাঝেই স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে খালি আসন দেখা গেছে।
বিশ্বকাপ শಌুরুর আগে কাতারের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলো নিয়ে সমালোচনা ছিল তুঙ্গে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য মাঠের খেলার চাপে বিতর্কগুলো চাপা পড়েছে।
বিশ্বকাপ শুরুর প্রথম সপ্তাহেই সৌদি আরবের কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। সেখান থেকেই শুরু খেলার মাঠের তুমুল আলোচনা। এর মাঝে অবশ্য মাঠের বাইরের আলোচনা ঝড় তুলেছিল। সমꦿকামীতার সমর্থনে আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামতে চাইলেও তা পারেননি বেশ কয়েকটি ইউরোপিয়ান দল। প্রতিবাদ অবশ্য মাঠে করেছিল জার্মানি। মুখে হাত দিয়ে ছবি তুলেছিল তারা।
তাদের সেই প্রতিবাদ শোরগোল ফেলতে পারেননি। গ্রুপ প༒র্বের বাধা পꦬেরোতে পারেনি জার্মানি। সঙ্গে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে থাকা বেলজিয়ামও মেনে নিয়েছিল একই পরিণতি। ফলে আবারও চাপা পড়ে নতুন এই বিতর্ক।
এর মাঝে আশার আলো হয়ে দাঁড়ায় মরক্কো। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল। শুধু তাই নয়, আরবে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আরবদের আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছে তারাই। ইউরোপ ও ল্যাতিন আমেরিকার আধিপত্যকে জানꦚিয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ।
ফিফার নিয়মে স্পষ্ট বলা আছে, মাঠ কিংবা গ্যালারিতে রাজনৈতিক কোনো বার্তা দেওয়া🥂 যাবে না। সেই নিয়মের ব্যতয় ঘটেছে বিশ্বকাপে ইরানের প্রথম ম্যাচে। ওই ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীতে কণ্ঠ না মিলিয়ে দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটে সমর্থন জা🙈নায় ইরানিরা। পরে অবশ্য এর জন্য নিজ দেশের সরকারের কাছ থেকে বড় ধরনের হুমকি পেতে হয়েছে তাদেরকে। ফলে নিজেদের ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় তারা।
কাতারকে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে বড় ধরনের লজিস্টিক চ্যালে💎ঞ্জ মোকাবিলা করার সম্💞ভাবনা থাকলেও তা করতে হয়নি। মূলত দেশটিতে ইউরোপ ও পশ্চিমা বিশ্বের ফুটবল সমর্থকরা কম আসায় এই সুবিধা পেয়েছে তারা।
অবাধ চলাফেরার পাশাপাশি অতিরཧিক্ত আবাসন খরচও কাতারে লোকজনের কম যাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল। খেলার মাঠে ঘটা নানা ঘটনা মূলত চাপা ফেলেছে এই কাতারের এই বিষয়গুলো। অন্তত স্বস্তির সঙ্গে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত বিশ্বকাপের আয়োজন শেষ করবে কাতার।