স্বপ্নের দুয়ারে ‘পরাজিত’ দুই এলএম টেন

পার্থ প্রতীম রায় প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২২, ০৯:০০ পিএম

মারকানা ও লুঝনিকি, দুইটি স্বপ্নভঙ্গের গল্প। ক্যালেন্ডারের পাতায় সময়ের ব্যবধান চার বছর হলেও দুই এলএম টেন তৈরি করেছিলেন শোকগাথার অ্যাখ্যান। দুইজনই চেষ্টা ক🃏রেছিলেন দুয়ার ভেঙে স্বপ্নের ট্রফিটা ছুঁতে।﷽ বিধাতা তাদেরকে হতাশ করে ফিরিয়েছেন, সঙ্গে দিয়েছেন একরাশ হতাশা। ভাগ্য এবার দুই এলএম টেনকে মিলিয়ে দিয়েছে লুসাইলের ময়দানে। সেখানে তারা লড়বেন স্বপ্নের ওই দুয়ার ভাঙার লড়াইয়ে নামার জন্য।

দুই এলএম টেনের লড়াইয়ের গল্পটা প্রায় একই। আটলান্টিকের দুই প্রান্তে দুই দেশের মহানায়কের বেড়ে ওঠার গল্পের প্লটটাও ঠিক একই রকম। লিওনে🍎ল মেসি ছোটখাটো গড়নের আর লুকা মদ্রিচও তাই। সব বাধা পেরিয়ে দুইজনই নাম লিখিয়েছিলেন পেশাদার ফুটবলে। শুধু তাই নয়, দুইজনই হয়ে উঠেছেন নিজ দেশের বড় ভরসার নাম।

আটলান্টিক পাড়ের ইউরোপে থাকা এলএম টেনের গল্পটা প্রথমে বল꧋া যাক। সদ্য স্বাধীন দেশে ফুটবলকে আকড়ে বেঁচে থাকার দৃঢ় পণ নেওয়া মদ্রি🍌চের জন্য বন্ধ হয়েছিল সব দুয়ার। রোগাপটকা শরীর আর দেখতে ছোটখাটো গড়ন হওয়ায় সব ক্লাবই নাকচ করে দিয়েছিল। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ান ক্লাব এনকে জাদারে কোনোমতে তার ঠাই মিলেছিল।

এনকে জাদার থেকে ডায়নামো জাগরেব হয়ে 🌱ইউরোপিয়ান কঠিন ফুটবলে তার প্রবেশ। সেখান থেকে টটেনহ্যাম হটস্পারে ইংলিশ ফুটবল মাত করেছিলেন। স্পার্সদের ডেরা ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার মৌসুমে নিজেকে করতে পারেন প্রমাণ। গ্যালাক্টিকোস সমর্থকরা বলেছিলেন সবচেয়ে বাজে সাইনিং। ওই ‘তকমা’ দ্রুতই ঝেড়ে ফেলে মাঝ মাঠে হয়ে ওঠেন রিয়াল মাদ্রিদের বড় ভরসা। সেখান থেকে নিজেকে প্রমাণ করে আস্তে আস্তে ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্ন সারথি হয়ে ওঠা মদ্রিচ এখন ক্রোয়াটদের এলএম টেন।

ল্যাতিন আমেরিক🔯ার দেশ আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্ম লিওনেল মেসির। ফুটপাতে ফুটবলে মত্ত থাকা মেসি পড়েছিলেন বার্সেলোনা স্কাউটের নজরে। সেখান থেকেই𓆉 স্প্যানিশ ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে এর আগে তার শরীরে বাসা বেঁধেছিল হরমোন সমস্যা।

ব্যয়বহুল এ🌠ই চিকিৎসা ব্যয় মিটিয়েছিল বার্সেলোনা। কাতালানদের জার্সিতে যার প্রতিদানও দিয়েছেন। হয়ে উঠেছেন তর্কসাপেক্ষে বিশ্বসেরাদের একজন। তবুও আর্জেন্টিনাকে তুলে দিতে পারেননি বিশ্বসেরার ♉মুকুট। কাছে গিয়েও তাকে আসতে হয়েছে ফেরত। দূর থেকেই কাঁচ বক্সে বন্দি থাকা শিরোপটা দেখতে হয়েছে তাকে।

মেসিকে স্বপ্ন ভঙ্গের রাত উপহার দিয়ে জার্মান নায়কে পরিণত ছিলেন মারিও গোটজে। তার গোলেই যে মারাকানায় এলএম টেনকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে জার্মানরা চ🔜তুর্ܫথবারের মতো শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল।

এর চার বছর পর লুঝনিকিতে এমবাপে-পগবা-গ্রিজম্যান ঝড়ে ফাইনালের মঞ্চে ঝরে পড়ে ক্রোয়েশিয়ান স্বপ্ন। আরও একবার ভাঙে এলএম টেনের স্বপ্ন। এ🌜বার লিওনেল মেসি নন, ভাঙে লুকা মদ্রিচের স্বপ্ন। পুরো ফুটবল বিশ্বকে স্তব্ধꦫ করে রাশিয়ার লুঝনিকিতে ৩৯ লক্ষ ক্রোয়াটদের স্বপ্নপূরণের চেষ্টায় নামেন লুকা মদ্রিচ ও কোং। কিন্তু শেষ হাসি হাসতে পারেননি। তুলে ধরা হয়নি বহু কাঙ্ক্ষিত ওই শিরোপা।

২০১৪ কিংবা ২০১৮, দু’বারই শিরꦯোপা বঞ্চিত এলএম টেনরা হাতে তুলেছিল টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কার। এ🐬রপরেও তাদের জন্য আক্ষেপ ওই সোনালী ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখতে না পারার। মরুর দেশে ফাইনালের লড়াইয়ে নামার আগেই ভাঙবে এক এলএম টেনের স্বপ্ন। বয়সের ভারে তাদের পক্ষে নতুন করে ওই স্বপ্ন দেখার সুযোগ হয়তো আর নেই। শেষ চেষ্টাটায় তাই সফল হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা কাজ করবে।

কিন্তু এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে কার চাওয়া পূর্ণ করবেন বিধাতা? আড়♋ালে বসে তিনি হয়তো চান দুইজনের মাথায় উঠুক ব෴িশ্বসেরার মুকুট। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে একজনকে জিততে হবে। তাই হয়তো দুই এলএম টেনের যেকোনো একজন পাবেন দ্বিতীয় সুযোগ!