প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে মরক্কো। ফুটবল বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে সেমিফাইনালে ওঠায়𓂃 তারা ভাসছে আনন্দের জোয়ারে। ওইদিকে নিশ্চিত ফেবারিট হিসেবেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। দুই দল অবশ্য সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে না। নিজ নিজ ম্যাচ জিতলে মুখোমুখি হবে দুই দল। তবুও এই গল্পটা, গল্পে অবশ্য মূল ভূমিকায় দল নয়, দু🧸ই দলের ডাগআউটে থাকা মাস্টারমাইন্ডরা। তারা দুইজন এক সময় ছিলেন সতীর্থ। কাতারে এবার তাদের হয়তো দেখা হবে ডাগআউটে। দেখা না হলেও নিজ দেশে তারা পাবেন বীরোচিত সম্মাননা। তাদের হাত ধরেই যে, দল দুইটি হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য।
বিশ্বকাপ শুরুর তিন মাসেরও 🍎কম সময় আগে মরক্কো কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের কাঁধে উঠেছে মরক্কো জাতীয় দলের দায়িত্ব। এর আগে অবশ্য ক্লাব পর্যায়ের কোচিংয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ইউরোপে পেপ গার্দিওয়ালা-হোসে মরিনহোদের চা♎হিদা আর আফ্রিকায় রেগ্রাগুইয়ের চাহিদা তুলনা করলে হয়তো মরক্কো কোচ একটু হলেও থাকবেন এগিয়ে।
মরক্কোতে দুই দলকে কোচিং করানোর পাশাপাশি কাতা🐻রেও কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা আছে রেগ্রাগু𝓡ইয়ের। সর্বশেষ ক্লাব ওয়াদাদ কাসাব্লাঙ্কাকে লিগ শিরোপার পাশাপাশি জিতিয়েছেন আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা।
কোচিং ক্যারিয়ার রেগ্রাগুইয়ের যতটা সমৃদ্ধ, খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারর অবশ্য এতোটা সমৃদ্ধ নয়। জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ৪৫ ম্যাচে। জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করলেও এই ডিফেন্ডার ক্লাব ফুটবলে খেলেননি 𝓀বড় কোনো ক্লাবে। তবুও এখন তার বিশ্বজোড়া খ্যাতি ডাগআউটে দাঁড়িয়ে। এতেই তার তারিফ করা যায় ফুটবলীয় প্রতিভার।
আরেক সেমিফাইনালের ডাগআউটে দাঁড়াবেন লিওনেল স𝓀্ক্যালোনি। রেগ্রাগুইয়ের মতো অসংখ্য ক্লাবের দায়িত্ব সামলে জাতীয় দলের হেড কোচের দায়িত্ব পাননি। বরং, হুট করেই তার কাঁধে চেপেছিল দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দায়িত্ব। ওই যে হুট করেই অন্তবর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, সেই দায়িত্ব হয়ে উঠেছে পূর্নাঙ্গ।
হেড কোচের দায়িত্ব নেওয়ার আগে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়া ও আর্জেন্টিনার সহকারী কো🥂চের দায়িত্বে ছিলেন। হোর্হে সাম্পওলিকে বরখাস্ত করা হলে আর্জেন্টাইনদের নতুন কোচ খোঁজার ওই সময়টাতে দায়িত্বে ছিলেন লিওনেল স্ক্যালোনি। ওই সময়ে দেখানো ঝলকেই ভরসা পায় আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। সেখান থেকেই দায়িত্ব বুঝে পাওয়া।
এরপর যা করেছেন, তাতে আর্জেন্টিনার ফুটবল ফেডারেশন নয়, পুরো বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সকল আর্জেন্টাইন সমর্থকরাই স্ক্যালোনির সমর্থক হয়ে উঠেছেন। তার হাত ধরেই দীর্ঘ ২৮ বছর পর আলবিসেলেস্তারা পেয়েছে আন্তর্জাতিক শিরোপার স্বাদ। তার হাত ধরেই বিশ্বমঞ্চে এখন আর্জেন্টাইন শাসন। তার হাত ধরেই বিশ্বকাপ শিরোপাও ঘরে তুলতে মরিয়া দলটি। এর আগে প্রথম বাধা ক্রোয়েশিয়𝔍া।
দুইজনই ভিন্ন পরিস্থিতিতে প𝓀েয়েছেন দায়িত্ব। তারা দুইজন🎃ই খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলে ক্লাব সতীর্থ। ২০০৬-০৭ মৌসুমে স্পেনের ক্লাব রেসিং সান্তাদারে দুইজনই খেলেছিলেন একসঙ্গে। দুইজনের কেউই নিয়মিত একাদশের সদস্য না হওয়ায় একসঙ্গে তাদের মাঠে নামার সুযোগ হয়নি কখনো। অনুশীলন মাঠে দুইজন বহুবার একসঙ্গে করেছেন অনুশীলন।
২০০৪ সালে ডাচ ক্লাব অ্যাজাসিও থেকে স্প্যানিশ ক্লাব রেসিংয়ে যোগ দেন ওয়ালিদ রেগ্রাগুই। তার এই ক্লাবের অধ্যায়ের শেষ হয় ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে। আর্জেন🦂্টাইন স্ক্যালোনি দলটিতে এসেছিলেন ২০০৬ সালে। স্পেনের আরেক ক্লাব দোপোর্তিভো লা করুণা থেকে এসেছিলেন। রেসিংয়ে তার ক্যারিয়ার শেষ হয় ২০০৭ সালের জুলাইয়ে। এক মৌসুমের জন্য দলে আসায় রেগ্রাগুইয়ের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগির সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র ছয় মাস।
অর্ধবছর সতীর্থ থাকা দুইজনের পুর্নমিলনী হতে পারে কাতারে। এবার দেখা হলে সেটা অবশ্য একই দলের জার💜্সি গায়ে কিংবা ডাগআউটের সাইড বেঞ্চে বসে নয়। দুইজনই হয়তো থাকবেন বিপরীত ডাগআউটে ভিন্ন ভূমিকায়। দুইজনই যে দুই দলের হেড কোচ। ফাইনালে উঠতে পারলে দুইজনেরই চাওয়া থাকবে ভিন্ন ভূমিকায় থাকা সাবেক সতীর্থকে হারিয়ে দিতে। শেষ পর্যন্ত দুইজনের লড়াইয়ে কে হাসবেন শেষ হাসি, তা জানতে চাওয়ার আগে দুইটি দলকেই উঠতে হবে ফাইনালে। দুইজন সেখানে নিজেদের ফুটবলীয় প্রতিভার সেরাটা ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।