ইলিশের কেজি ১৯০০, স্বল্প আয়ের মানুষ কীভাবে খাবেন?

চাঁদপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম

গত বছর এ সময়ে চাঁদপুরের বাজারে প্রতিদিন হাজার মণেরও বেশি ইলিশ আসতো। আর এবার চাঁদপুর বড়স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন ইলিশ আসছে মাত্র ৩শ মণ। সরবরাহ কম হওয়ায় হতাশ ইলিশ ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। বꦏ্যবসায়ীরা বলছেন, ‘বাজারের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে ইলিশের চেয়ে ক্রেতাই বেশি।’ অপরদিকে ইলিশ মাছের আকাশচুম্বী দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হতাশ ক্রেতারা। তারা বলছেন, বেশিꦰ দাম হলে স্বল্প আয়ের মানুষ কীভাবে ইলিশ খাবেন?

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনꦑ চিত্র পাওয়া গেছে। 

ব্যবসায়ীরা জানান, চাঁদপুরে বর্তমানে এক হাজার ২শ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৯শ টাকা, 🧔এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজ🌼ার ৬শ থেকে এক হাজার ৭শ টাকা, ৭শ-৮শ গ্রামের ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৫শ টাকা এবং একেবারে ছোট আকারেরগুলো বিক্রি হচ্ছে ৮শ টাকা কেজি।

ঢাকা থেকে ইলিশ কিনতে 𒐪আসা জাহেদুল হাসান নামে একজন বলেন, ‘চাঁদপুরকে বলা হয় ইলিশের বাড়ি। ভেবেছিলাম এখানে তুলনামুলক কম দামে ইলিশ কিনতে পারবো। কিജন্তু এখানে এসে মনে হলো দাম বেশি। তা ছাড়া মাছ কম কিন্তু ব্যাপক ক্রেতার সমাগম হয়েছে বড়স্টেশন বাজারে।’

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মুহিবুল হাসান বলেন, ”গত কয়েক সপ্তাহে চাঁদপুর বড়স্টেশন বাজারে ইলিশ কিনতে আসছি। দাম বেশি হওয়ায় কিনছি না। কয়েকজন মিলে আজও এসেছিলাম ইলিশ কিনতে, কিন্তু বাজারে ইলিশ কম। যেখানে আমরা একেকজন দশ কেজি করে ইলিশ কিনতাম সেখানে কিনেছি মাত্র পাঁচ কেজি করে। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ১৭শ টাকা। এত বেশি দাম হলে স্বল্প আয়েরജ মানুষ কীভাবে ইলিশ খাবেন?”

ইলিশের দাম বেশি হওয়ার বিষয়ে জেলেরা জানান, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম যাচ্ছে। নদীতে কিছুটা ই🧜লিশ কম ধরা পড়ছে। তবে এখন নদীতে বড় সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তারা বলেন, “নদীতে ইলিশ শিকারে গেলে একটা নৌকায় আট-দশ জন জেলে থাকে। নৌকার তেল খরচ, জেলেদের খরচসহ যাবতীয় খরচ প্রতি বছরই বাড়ছে। তা ছাড়া আমাদের কাছ থেকে ইলিশ কিনে পরে নিলামে দাম তুলে আরও বেশি দামে বিক্রি হয়। হয়তো এসব কারণে মাছের দাম বেশি।”

তবে স্থানীয় ক্রেতারা মনে করেন, বছরের এ সময়ে ইলিশ কিনতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা চাঁদপুরে ভিড় জমান। ꧋এর ফলে এখানে মাছের দাম বে𒈔ড়ে যায়।

এ বিষয়ে চাঁদপু🌃র মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, ‘আল্লায় না দিলে মাছ আসবে কোত্থেকে? নদীতে মাছ না হলে কী আর করার আছে? হাতিয়া, সন্দ্বীপসহ নিম্নাঞ্চল থেকে মাছ আসছে না। মাছের সরবরাহ কম হলে দাম বেড়ে ♔যায়।’

তিনি আরও বলেন, “আজ (৬ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর বড়স্টেশন বাজারে প্র💦ায় ৩শ মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে তুলনামূলক বড় সাইজের মাছই বেশি, ছোট সাইজেরꦇ মাছ বাজারে কম আসছে। আজ বাজারে মাছ যা আছে তার চেয়ে বেশি আছে পর্যটক।”

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল বারী জমাদার মানিক আক্ষে🎀প করে বলেন, “ঘাটঘেঁষা যেই পন্টুনটি রয়েছে, সেদিকে তাকালেই বোঝা যায় ইলিশের বর্তমান চিত্র। এখানে বহু ট্রলার ইলিশ নিয়ে ভিড়তো। আমরা অবসর পেতাম না। কিন্তু এখন সরবরাহ কম থাকায় ঘাটে ট্রলার ভিড়ছে কম।”

“সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও বাস্তবে দরদামে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। কারণ ভারতে, বিশেষ করে, পূজাপার্বণে বিগতꦰ দিনে ইলিশ পাঠানো হতো। কিন্তু এখন নিজ দেশেই ইꦐলিশের দেখা মিলছে কম।”

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা তানজিমুল ইসলাম বলেন, “চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় বছরজুড়েই জেলেরা ইলিশ পান। এ♎খন ভরা মৌসুম হলেও সামনে ইলিশ আরও বেশি ধরাꦏ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।”

উল্লেখ্য, গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে চাঁদপুর জেলায় মাছের চাহিদা ছিল ৬৮ হাজার ৪৬৬ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০.৬২ মেট্রিক টন এবং উদ্বৃত্ত ছিল ৪৭ হাজার ৬২৪.ജ৬২ মেট্রিক টন। একই অর্থবছরে শুধু ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ হাজার ৩২৬ মেট্রিক টꦚন। চাঁদপুর জেলায় নিবন্ধিত মৎস্যজীবীর (জেলে) সংখ্যা হচ্ছে ৪৭ হাজার ২৪৯ জন।

এ ছাড়া সর্বশেষ সরকারি তথ্যানুযায়ী এ বছর দেশে মো🎃ট ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিক টন।