প্রযুক্তির উৎকর্ষে মানুষের জীবন যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি কিছু ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে বিড়ম্বনাও। তেমননি একটি প্রযুক্তি ‘ডিপফেক’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিয়ে তারকাদের ভুয়া ভিডিও বানিয়ে ছেড়ে 𓆏দেওয়া হয় অনলাইনে। ভারতের বেশ কয়েকজন তারকা এই ডিপফেকের শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে নারী তারকারা এ ব꧟িড়ম্বনায় পড়েছেন।
ডিপফেকের মাধ্যমে ভিডিও এমনভাবে তৈরি করা হয়, বোঝার উপায় থাকে না ভিড๊িওটি সত্য নয়। সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনা ভুয়া পর্নোগ্রাফিক ভিডিও ক্লিপ তৈরির বিষয়টি। এ বছরের শুরুতে বিষয়টি খুব একটা বিস্তৃতি না পেলেও ൲বছরের শেষে তা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
কয়েক সপ্তাহ আগে সামাজিক যোগাযোগমাꦺধ্যমে একটি আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দক্ষিণি অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানার আদলে এক নারীকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায়। স্বল্প পোশাকে ক্যামেরার সামনে বিভিন্ন ভঙ্গিতে পোজ দেওয়ার সেই ভিডিও রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ে নেটমাধ্যমে। পরে জানা যায়, ভিডিওর মানুষটি আসলে অভিনেত্রী রাশমিকা নন। অন্য এক নারীর ভিডিওতে এডিটিংয়ের মাধ্যমে দক্ষিণি নায়িকার মুখ বসানো হয়েছে। এআই ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল ডিপফেক ভিডিওটি।
এরপরেই আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে বলিউড অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফের। এ বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ‘টাইগার-৩’ সিনেমায় একটি দৃশ্যে স্নানপোশাকে দেখা গিয়েছিল ক্যাটরিনাকে। সেই দৃশ্যে শরীরে তো🐷য়ালে জড়িয়ে অন্য একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে লড়াই করতে দেখা যায় তাকে। সেই দৃশ্য এডিট করে ক্যাটরিনাকে আপত্তিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ডিপফেকের এꦺই রেশ না কাটতেই ভাইরাল হয় বলিউড অভিনেত্রী কাজলের একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায় ক্যামেরার সামনে পো﷽শাক খুলছেন কাজল। যদিও পরে জানা যায়, অন্য একজন নারীর মুখে কাজলের মুখ বসানো হয়েছিল এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
এসব ব্যাপারে ভারতে দাপুটে অভিনেতা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন তৎপর, ঠিক ওই সময় আরও একটি ‘আপত্তিকর’ ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এবার ভুক্তভোগী বলিউডের আরেক অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আলিয়াকে একটি খোলামেলা পোশাকে দেখা গেছ꧑ে। আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা গেছে। তবে ভিডিওটি ▨ভালো করে দেখলে এটা স্পষ্ট যে, ভিডিওর নারী আসলে আলিয়া নন। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে মূল ভিডিওতে আলিয়ার মুখ বসানো হয়েছে।
এরপরে ডিপফেকের কবলে পড়ে বলিউডের আরেক অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। তবে শুধু ভিডিও নয়, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তার ডিপফেক অডিও, যা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সম🧸ালোচনা।
ডিপফে💞ক বহু আগে থেকেই আছে এবং তারকাদের লক্ষ্য করেই তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন সময় নানা অশ্লীল ভিডিও। সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে হলিউডে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ন🌼াটালি পোর্টম্যান বা এমা ওয়াটসনের মতো বড় বড় তারকারাও এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন।
ডিপফেকের অপব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গায়ক-গায়িকা, অভিনেতা-অভিনেত্রী, ইনফ্লুয়েন্ꦐসার, মডেল, ক্রীড়াবিদসহ অনেকেই হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডিপফেক ভিডিও’র ৯৬ শতাংশ পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত।
২০১৭ সালে প্রথম ডিপফেক প্রযুক্তি প্রচারণা পায়। ডিপফেক নামটির মধ্যেই এর সংজ্ঞা রয়েছে। ডিপ শব্দটি এসেছে ‘ডিপ লার্নিং’ অর্থাৎ গভীরভাবে শিক্ষা নেওয়া এবং অন্যদিকে ‘ফেক’ অর্থাৎ নকল বা ভুয়া এই দুই শব্দের সংমিশ্রণ থেকে। অর্থাৎ ডিপফেক বলতে গভীরভাবে নকল করা হয়েছে, এমন কিছুকে বোঝায়। এই প্রযুক্তি যে কেবল নকল ভিডিও তৈরি করতে পারে, তা নয়। এটি মানুষের ভয়েস মডেলও তৈরি করতে পারে। এর মানে এই যে একজন রাজনীতিবিদের শব্দ বা কণ্ঠস্বর নকল করে কোনো আপত্তিকর বিবৃতি দেওয়ার জন্য কোনো ছদ্মবেশীর প্রয়োজন হয় না। পরিবর্তে তাদের ভয়েস বা কণ্ঠস্বর নকল করতে কৃত্রিম বুদ্ধিꦰমত্তাকে প্রশিক্ষিত করা যায়।