চলতি বছর ভালোবাসা দিবসে বাংলাভিশনে টেলিভিশনে প্রচারিত হয় নাটক ‘শেষ গল্পটা ജতুমিই’। সুকন্যা দত্তের রচনায় এর চিত্রনাট্য ও নির্মাণ করেছেন অনন্য ইমন। আর নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব, তাসনিয়া ফারিণ, মিলি মুন্সি, পাপিয়া, আরেফিন, জারা ইসলাম প্রমুখ।
টিভিতে প্রচারের পর ২৪ মার্চ এটি উন্মুক্ত হয় সিডি চয়🎃েসের ইউটিউব চ্যানেলে। নাটকের একটি দৃশ্যে খাঁচাবন্দি টিয়া পাখি দেখানোর অভিযোগে নির্মাতার বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে উচ্চ আদালতে মামলা করেছে সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গেল ৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের নজরে আসে বিষয়টি। নথিতে বলা হয়, বন্য প্রাণীকে খাঁচাবন্দি করা, বেচাকেনা করা, প্রদর্শন করা বা এ জাতীয় অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করা, প্ররোচনা প্রদান ইত্যাদি ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ‘সিডি চয়েস ড্রামা’ নামে ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত নাটকটিতে খাঁচাবন্দি বন্য প্রাণী প্রদর্শন ꦺপ্রচলিত আইনে অপরাধ এবং অন্যদেরও সেই অপরাধ করতে উৎসাহিত করছে।
আর সে কারণে অনন্য ইমনের বিরুদ্ধে ‘বন্য প্রাণী আইন ২০১২’র ৩৮(২), ৪১ এবং ৪৬ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। নাটকে ১৫ মিনিট আট সেকেন্ড থেকে শুরু হওয়া ৫৩ সেকেন্ডের সময় দৃশ্যটি রয়েছে। আর এই ৪৫ সেকেন্ডের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ধরা হয়েছে ১꧂৫ কোটি টাকা। এই মামলার সাক্ষী চারজন- অসীম মল্লিক (বন্য প্রাণী পরিদর্শক), মো. আব্দুল্লাহ-আস-সাদিক (বন্য প্রাণ♚ী পরিদর্শক), মো. হাফিজুর রহমান (ফরেস্টার) ও মো. আব্দুল মালেক (জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট)।
মামলার বিষয়ে পরিচালক অনন্য ইমন বলেন, “নাটকের চিত্রনাট্যে এমন কোনো দৃশ্য ছিল না। যে বাড়িতে শুটিং করেছি সেখানেই ছিল টিয়া পাখিটি, দৃশ্যায়নের সময় মনে হলো নায়ক কোনো একটা কাজ করতে করতে মা ও বোনের সঙ্গে কথা বললে দৃশ♐্যটা বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে দর্শকের কাছে। তা ছাড়া এখানে পাখিকে আদর করে খাওয়ানো হচ্ছে, এটা নিয়ে আইনি ঝামেলায় পড়ে যাব, ভাবনাতেই আসেনি। একই সঙ্গে দৃশ্যটিতে নায়কের মা গাছে পানি দিচ্ছিল, পাখি বন্দি দেখানোয় যদি কপালে তিরস্কার জোটে, তবে গাছে পানি দিতে সবাইকে উৎসাহিত করার জন্য আমার পুরস্কার পাওয়া উচিত। আমার নাটকের বাজেট মাত্র ৪ লাখ টাকা, ক্ষতিপূরণ ১৫ কোটি টাকা! পারিবারিক সব সম্পত্তিসহ আমাকে বিক্রি করলেও এত টাকা পাওয়া যাবে না। সম্প্রতি প্রচারিত আরো কিছু নাটক-সিনেমায় খাঁচাবন্দি পাখি আমি দেখেছি, সব বাদ রেখে আমাকেই কেন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, সেটাও বুঝতে পারছি না।”
এই মামলার অন্যতম সাক্ষী ফরেস্টার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি, আমরা গ্রামীণফোন, দারাজের মতো প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনচিত্রে বন্য প্রাণী আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনে মামলা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা চোখ-কান খোলা রাখি সর্বক্ষণ। অনন্য ইমন সাহেব বন্য প্রাণীকে খাঁচাবন্দী দেꦛখিয়ে অপরাধ তো করেছেনই, অন্যদেরও উৎসাহিত করেছেন।”
এদিকে, গেল ২৬ জুন ইমনকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোরবানির ঈদের নাটকের শুটিং থাকায় তিনি যেতে পারিনি। এরপর আইনজীবী নিয়োগ করে ২১ জুলাই আদালতে হাজির হন নির্মাতা। তখন বিচারক তাকে ১ আগস্ট হাজির থাকতে বলেছেন। অনিচ্ছাকৃত এই কর্মকাণ্ড আদালতের কাছে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন এই নির্মাতা।