৯ বছরে পাল্টে গেল বঞ্চনার জীবন, কেমন আছেন ছিটমহলবাসী?

লালমনিরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২৪, ০২:২৬ পিএম

নয় বছর পূর্ণ হলো ছিটমহল বিনিময়ের। ২০১৫ সালের ১ আগস্ট ৬৮ বছরের বন্দীদশা থেকে মুক্তিপান দেꦛশের ১১১টি ছিটমহলের বাসিন্দারা। এরপর সরকারের নানামুখী উদ্যোগে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে হয়েছে উন্নয়ন। তো এখন কেমন আছে💫ন ছিটমহলবাসী?

ব🅰িশেষ করে কারিগরি শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা এস𒆙ব এলাকাকে এগিয়ে নিতে বিশেষ বরাদ্দের প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।

ছিটমহল বিনিময়ের নবম বর্ষপূর্তি আজ। দীর্ঘ ৬৮ বছর বন্দিজীবন কাটিয়ে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট ম��ধ্য রাতে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পায় বাংলাদেশের বিলুপ্ত ১১১টি ছিটমহলের ৪১ হাজার নাগরিক। দীর্ঘদিন থেকে মৌলিক অধিকার বঞ্ﷺচিত ছিল তারা।

জানা যায়, ১৭ হাজার ১৫৮ একর আয়তনের এসব ছিটমহলের অধিবাস💯ীদর জন্য ছিল না কোনো নির্দিষ্ট দেশ ও পরিচয়। ফলে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছিল। রাষ্ট্রীয় কোনো সুযোগ স🐈ুবিধা তো দূরের কথা নুন্যতম পরিচয়ও চলতে পারতেন না তারা। বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় অবশেষে গত ২০১৫ সালর ৩১ জুলাই স্বাধীনতার স্বাদ পায় ছিটমহলবাসী। ওইদিন মধ্যরাতে মোমবাতি প্রজ্জলন এবং পরদিন (১আগস্ট) সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তালনের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয় অভিশপ্ত ছিটমহলবাসীর বন্দি জীবন। স্বাধীন বাংলাদেশের দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পায় লালমনিরহাটের ৫৯টি, কুড়িগ্রামের ১২টি, নীলফামারীর ৪টি ও পঞ্চগড়ের ৩৬টি ছিটমহলের বাসিন্দা।

দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দী দশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর দেশের অন্যান্য অধিবাসীদের ন্যায় পেতে শুরু করে সুবিধജা। গত ৯ বছরে বিলুপ্ত ছিটমহলকে এগিয়ে নিতে সরকারের পক্⛎ষ থেকে নেওয়া হয় নানা পদক্ষেপ। 

বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর উন্নয়নে ২০০ কোটি টাকা ব্🅠যয় করা হয়। নির্মাণ করা হয় রাস্তাঘাট, গড়ে তোলা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ঘরে ঘরে দেওয়া হয় বিদুৎ সুবিধা। কৃষি উন্নয়নেও পদক্ষেপের কমতি নেই এসব বিলুপ্ত ছিটমহলে। এতে বদলাতে থাকে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর জীবনমান।

ছিটমহলবাসীরা বলেন, “৬৮ বছর আমাদের কোনো পরিচয় ছিল না। এখন আ🍨মরা বাংলাদেশের নাগরিক। আগে ক🅠ুপি জ্বালিয়ে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতো। এখন বিদ্যুৎ এসেছে। শিশুরা নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। ঢাকায় গিয়ে অনেকে চাকরিও করতে পারছেন।”

তারা বলেন, “আমরা এখানে সব সুবিধা পাচ্ছি। ছিটমহলের যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। এখানকার নাগরিক হওয়ায় রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, স্কুল-কলেজ, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছি। তবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠায় বি🐼শেষ বরাদ্দ দরকার।”

বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী ষাটোর্ধ আব্দুল হামিদ বলেন, “জেলহাজতের চেয়েও খারাপ অবস্থায় ছিলাম আমরা। আমাদের কোনো পরিচয় ছিল না। দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আত্মীয় করতে চাইত না। নিজের সন্তানদের অন্য পরিচয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে হত। নানা প্রতিবন্ধকতায় সন্তানদের উচ্চশিক্ষা অর💜্জন করাতে পারিনি।”

জেলা প্রশাসক মোহ💟াম্মদ উল্যাহ জানান, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে মোমবা𝓰তি প্রজ্জলন এবং ১আগস্ট সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে মুছে যায় ছিটমহল নাম। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পায় এখানকার বাসিন্দারা। স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত  বিলুপ্ত  এসব ছিটমহলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সবধরনের উন্নয়ন করেছেন সরকার।

১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির আলোকে বাংলাদ꧋েশ ও ভারত ছিটমহল বিনিময় করে। দীর্ঘ আন্দোলন♑ের ফসল এ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে নানা কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছেন বাসিন্দারা।

বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে পঞ্চগড়ে রয়༺েছে ৩৬টি, লালমনিরহাট ৫৯টি, কুড়িগ্রামে ১২টি ও নীলফাম��ারীতে ৪টি।