ভুলতা ফ্লাইওভার এখন আতঙ্কের নাম

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২২, ০৩:১২ পিএম

জ্বলে না সড়ক বাতি। রাতের আধার নামার সঙ্গে সঙ্গে নেমে আসে ভুতুড়ে অন্ধকার। জমতে থাকে মাদকসেবীদের আড্ডা। বেড়ে যায় ছিনতাইকারীদের আনাগোনা। এছাড়া নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাবে ভুলতা ফ্লাইওভার এখন আতঙ্কের নাম। লোকে বলে ভয়✱ঙ্কর রাতের ফ্লাইওভার।

নারায়ণগঞ্জের সর্ববৃহৎ প্রকল্প ভুলতা ফ্লাইওভারের দুটি অংশ—ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও গাজীপুর-চট্টগ্রাম এশিয়ান হাইওয়ে। এই ফ্লাইওভার উদ্বোধনের পর কিছুদিন সড়ক বাতির জ্বললে🍰ও এখন ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত।

বেশ কিছুদিন ধরে ভুলতা ফ্লাইওভারে আলো না জ্বলায় অপরাধী চক্ররা রয়েছে সক্রিয়। রূপগঞ্জে ভুলতা ফ্লাইওভারটি যানজট নিরসনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এলেও রাতের বেলায় এই ফ্লাইওভার অনেকের কাছে ভয়♌াবহ আতঙ্কের নাম। সূর্যের আলো নিভে গেলেই ফ্লাইওভারে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। আলো ও সিসি ক্যামেরা না থাকায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা।

গভীর রাতে ফ্লাইওভারটি রীতিমতো ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাত ১১টার পর ছিনতাইকারীর ভয়ে ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহন চলাচল করে না। যারা না জেনে গভীর রাতে ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াত করেন, তাদের বিপদে পড়তে হয়। শুধু তাই নয় ভুতুড়ে পরিবেশের কারণে অনেক যানবাহনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। আলো না ꦡথাকায় মাদকসেবীরা নির্বিঘ্নে মাদক সেবন করেন। এখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় ফেনসিডিলের খালি বোতল। ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি না থাকায় এখন রাতের অন্ধকারে ডুবে থাকে ৩৫৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ফ্লাইওভার।

সরেজমিনে শনিবার (১ অক্টোবর) রাত ১০ﷺটার দিকে পুরো ফ্লাইওভার ঘুরে ౠদেখা যায়, অন্ধকারে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এ সময় নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ থেকে আসা ট্রাক চালক সমর বলেন, “আমি প্রায় সময়ই এ ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াত করি। রাতে অনেককেই মোটরসাইকেল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। অনেকে বসে মাদক সেবন করে, তখন খুব ভয় লাগে। যদি লাইট জ্বলতো তাহলে এতটা ভয় লাগত না।”

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ফারুক বলেন, “সর্বোচ্চ রাত ১১টা পর্যন্ত যানবাহন চলাℱচল করে। এরপর আর কেউ সাহস করে ফ্🅘লাইওভার দিয়ে যায় না। কারণ অন্ধকারের মধ্যে ওত পেতে থাকে ছিনতাইকারীরা।”

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাউছিয়া কাঁচাবাজারের পাশে ভুলতা ফ্লাইওভারের বিদ্যুতের 𝔉মিটারটি এখনো চলমান। তাহলে ভুলতা ফ্লাইওভারের লাইটগুলো জ্বলে না কেন? এ ব্যাপারে ভুলতা ফ্লাইওভারের ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান বলেন, “ভুলতা ফ্লাইওভারটি উদ্বোধনের এক বছর পর্যন্ত আমাদের আওতায় ছিল। এক বছর অতিক্রম হওয়ায় ফ্লাইওভারের বিষয়ে আমাদের কোনো দায়িত্ব নেই। আলো জ্বলবে কি জ্বলবে না সেটা আমাদের বিষয় না। এই দায়িত্বে কারা আছেন তাও জানা নেই।”

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ-২ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. রফি🐻কুল ইসলাম বলেন, “ভুলতা ফ্লাইওভারের বিদ্যুত এখনো চলমান। লাইন বিচ্ছিন𒁏্ন করিনি। কেন লাইট জ্বলে না আমরা জানি না।”

নারায়ণগঞ্জ (সওজ) সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী 🃏শাহানা ফেরদৌস জানান, তার চুরি হয়ে গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে (রূপ꧙গঞ্জ, আড়াইহাজার) ‘গ সার্কেল’ এএসপি আবির হোসেন বলেন, “ভুলতা ফ্লাইওভারটি অন্ধকার থাকায় পু🅰লিশের টহল আরও বাড়িয়ে দিয়েছি। যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তবে ফ্লাইওভারটি অন্ধকার থাকলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে।”

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হক বলেন, “ভুলতা ফ্লাইওভারের অন্ধকারের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে জনগণের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে শিগগিরই আলো ♌জ্বলে ওঠার ব্যবস্থা 🦹করছি।”